ইসরায়েলের মতো দেশ উগ্রবাদী হয়ে ওঠার পেছনে পিআর পদ্ধতির বড় ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে করেছেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া বলেছেন, ‘ইসরায়েলের উদারপন্থীদের জনসমর্থন বেশি থাকা সত্ত্বেও নেসেটে তাদের বিল পাস হয় না, তারা সরকার গঠন করতে পারে না। কারণ, অনেক ক্ষুদ্র উগ্রবাদী দল এক হয়ে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে, সৃষ্টি করছে অরাজক পরিস্থিতি।’
‘বাংলাদেশেও এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না—এ নিশ্চয়তা কে দিতে পারে?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মৌচাকে কসমস সেন্টারে আয়োজিত ‘ইলেকশন ২০২৬: এ ক্রিটিক্যাল লুক অ্যাট প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার ছিল ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)।
তিনি বলেছেন, ঢালাওভাবে যারা পিআর পদ্ধতির দাবি তুলছেন, তাদের জানা উচিত—এই এক পিআর পদ্ধতির মধ্যেই রয়েছে নানা ধাপ। কিন্তু তারা কোন ধাপের, কোন প্রকারের পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চান, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই।
মুক্ত, বদ্ধ, মিশ্র—প্রধানত এই তিন পদ্ধতির মধ্যে কোনটি বাংলাদেশের জন্য উপযোগী, সেটি নিয়ে আলোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন ড. জকরিয়া।
পিআর পদ্ধতির সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি উল্লেখ করে জকরিয়া বলেন, ‘একটি দল সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে সরকার গঠন করতে পারবে না—এটা কেবল পিআর পদ্ধতিতেই সম্ভব। এমন ঘটলে জনগণের প্রত্যাশার ব্যত্যয় ঘটবে।’
তিনি বলেন, ‘পিআরের যেসব সুবিধার কথা বলা হচ্ছে, তার চেয়ে অসুবিধার পরিমাণই বেশি। সব দিক বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর পিআর প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে জকরিয়া বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে প্রার্থীদের নিজ এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী নানা রাজনৈতিক দলে মিশে গিয়ে আবারও সংসদে বসতে পারে।’
‘এতে করে ফ্যাসিবাদের আবারও পুনরুত্থান ঘটতে পারে,’ মন্তব্য করেন তিনি।
কসমস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইউএনবির সম্পাদক-ইন-চিফ এনায়েতউল্লাহ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া প্রমুখ।