বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপি একা নয়, সারাবিশ্ব তাদের সঙ্গে আছে।
তিনি সবাইকে এই আন্দোলনে যোগদানের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিতে আহ্বানও জানান।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা একা নই এই আন্দোলনে। আমাদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক বিশ্ব আছে। আসুন আমরা সবাই একযোগে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি-এই হোক আজকে গণতন্ত্র দিবসে আমাদের শপথ।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র দিবসে আমাদের অঙ্গীকার স্পষ্ট: গণতান্ত্রিক দিবসে আমাদের শপথ হচ্ছে যেকোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। কোনো নির্বাচন হবে না নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া। এখনো বলছি পদত্যাগ করুন, সংসদ ভেঙে দেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। কেন দিতে চান না? যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, যদি জনগণ ভোট দিতে যেতে পারে, তাহলে তারা ১০টা আসনও পাবে না।’
অধিকারের আদিলুর রহমান খান ও আ স ম নাসির উদ্দিনের কারাবরণের ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি আরেকটা কথা বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার নিয়ে যিনি কথা বলতেন, যিনি বিচারবর্হিভূত হত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যিনি নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল সেই হেফাজতে ইসলামী মিটিংয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, তাকে কারাদণ্ড দিয়েছে। আজকে এই সরকার এত ভীত সন্ত্রস্ত্র যে তাদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে।’
ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘আজকে সারাবিশ্ব এই সরকারের নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে তাদেরকে মুক্ত করতে বলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রেজুলেশন করেছে যে অবিলম্বে এই মামলা বাতিল করে তাদের মুক্ত করা হোক এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হোক, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হোক।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর কটাক্ষ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যে তিনি ভালো নির্বাচন করেন এবং দেশ-বিদেশে তাদের বিষয়ে প্রশ্ন করেন, এটি বছরের শ্রেষ্ঠ কৌতুক। আওয়ামী লীগ ভালো নির্বাচন করে একথা ঘোড়াও বিশ্বাস করে না। ওরা শুনলে হাসে… তাই না। এই হচ্ছে অবস্থা।’
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিউইয়র্ক টাইমস বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিরব মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতে টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল একটা নিবন্ধ ছাপিয়েছে, যেখানে তারা বলেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন লাইফ সাপোর্টে।’
তিনি সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, ‘নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই তারা বিভিন্ন অজুহাতে সারাদেশে গণতান্ত্রিক কর্মী যত আছে, বিএনপি যত নেতা-কর্মী আছে তাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের আটক করে রাখছে। কারণ একটাই… সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচনে সমস্ত বিরোধী দলকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। আর নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের আন্দোলনে যেন বিরোধী দলের নেতারা অংশ নিতে না পারে সেই কারণে নেতাদের আটক করে রাখতে হবে। এই যে ঢাকা মহানগরের যুব দলের নেতাদের আটক করে রেখেছেন তাতে কি আজকে মহানগরের এই সমাবেশে লোক কম হয়েছে? হয়নি। মামলা দিয়ে আটক করে এই সরকার তার পতন ঠেকাতে পারবে না।’