গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
বুধবার(১৬ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্য, ভিসি চত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
এসময় ইসলামী ছাত্রশিবির, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; লিল্লাহী তাকবির, আল্লাহু আকবার; আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না; সারা বাংলায় খবর দে, আওয়ামী লীগের কবর দে; কথায় কথায় বাংলা ছাড়, বাংলা কি তর বাপ দাদার; জুলাইয়ে হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার; গোপালগঞ্জে হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব দে; মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।
ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেন, হাসিনা ও তার দোসররা ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দুই হাজার শহীদ ও চল্লিশ হাজার আহতের বিনিময়ে আজকে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। প্রত্যাশা ছিল গত ষোল বছরে যেই সন্ত্রাসী জঙ্গি গোষ্ঠিী বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করেছে, ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, গণহত্যা করেছে, তাদের এই দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি খুনি হাসিনা এবং তার দোসরদের দিল্লির এক্সটেনশন গোপালগঞ্জে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আমরা বিপ্লবের পরে বলেছিলাম, এই গোপালগঞ্জে যত ফ্যাসিস্ট আছে তাদের এই বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। এই দোসররা আজকে ইন্টেরিমের মধ্যেও ভর করেছে। যখন ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কথা বলি এই ইন্টেরিমের কিছু কালচারাল ফ্যাসিস্টরা এই খুনি হাসিনাকে ফেরাতে চায়। তারা সুশৃঙ্খল আন্দোলনকে মব বলে।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে পারেনি: শিবির সভাপতি
তিনি বলেন, জুলাইয়ের এই বাংলাদেশে এই খুনি হাসিনার ও তার দোসরদের কোনো জায়গা হবে না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করব, বিচার করতে না পারলে পদত্যাগ করেন। ছাত্র জনতা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছে। জুলাইয়ের সঙ্গে গাদ্দারি করলে আপনাদের পরিণতি হাসিনার থেকেও খারাপ হবে। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুন। খুনি হসিনা এবং তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসুন। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সকল গুণ্ডাকে যথাযত আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, অভ্যুত্থানের ১১ মাস পার হওয়ার পরেও এই ইন্টেরিম জায়গায় জায়গায় ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। আজকে জুলাই যোদ্ধারা গোপালগঞ্জে সমাবেশ করতে গিয়েছিল, যেটা তাদের রাজনৈতিক অধিকার, সেখানে আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট খ্যাত গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীরা হমলা করেছে। এখানেও ইন্টেরিম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ইন্টেরিমকে বলেতে চাই, দায়িত্ব পালন না করতে পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
তিনি আগামী পাঁচ আগস্টের আগেই আওয়ামী লীগের সকল সন্ত্রাসীদের আইনে আওতায় এনে বিচার করার আহ্বান জানান সরকারকে।
ফরহাদ বলেন, আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরসহ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে পরিবর্তন এসেছিল। আমরা আশা করেছিলাম ২০২৪ এর ভিতরে শিক্ষার্থীদের দাবি ডাকসু, রাকসু পাব। কিন্তু আজও আমরা ডাকসুর সন্ধান পাইনি। সরকার কিংবা অন্যান্য এক্সটেনশন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জুলাইয়ের যে চেতনা, শহীদের সম্মান ধরে রাখতে না পারেন, তাহলে আপনারা পদত্যাগ করেন। নয়তো আপনাদের বিরুদ্ধে নামতে বাধ্য হব।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি রেজাউল কবির শাকিল বলেন, যারা জুলাইকে সফল করেছে তাদের উপর কি ভয়ানক হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এই জেলাকে নিজেদের ক্যান্টনমেন্ট মনে করে। মনে হচ্ছে গোপালগঞ্জ যেন বাংলাদেশের ভিতরে একখন্ড দিল্লি। আমরা বাংলাদেশে দিল্লির কোনো এক্সটেনশন হতে দেব না।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি সরকারকে। নয়তো গোপালগঞ্জের উদ্দেশে মার্চ করতে বাধ্য হব আমরা।