বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের তারুণ্যের সমাবেশের পর একদল ‘উত্তেজিত কর্মী’ জাতির পিতা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রতীকী বেশ কয়েকটি ম্যুরাল ভাঙচুর করার পরে আগুন লাগিয়ে দেয়।
সিটিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, লাঠিসোঁটা ও সড়কে সজ্জিত বিএনপি কর্মীদের চট্টগ্রামে ম্যুরালে হামলা করতে দেখা যায়।
সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ তরুণ নেটিজেনরা দক্ষিণ এশিয়ার এই সর্বকনিষ্ঠ জাতির ভিত্তি তৈরিকারী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিষয়ে দলের অবস্থান নিয়ে বিএনপির প্রতি প্রবলভাবে প্রশ্ন তোলে।
খন্দকার হোসেন লিখেছেন, ‘ভিডিও ফুটেজ দেখে দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
আরেকজন নেটিজেন প্রশ্ন করেছেন, ‘নিরপরাধ নাগরিকদের ওপর পেট্রল বোমা হামলা, মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন ধ্বংস করা, সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের আয়োজন, এই কার্ডগুলো দিয়েই কি বিএনপি তরুণদের আক্রমণ করতে চায়’।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য ফখরুলকে ক্ষমা চাইতে হবে: ওবায়দুল কাদের
গবেষক সৈয়দ বদরুল আহসানের মতে, প্রথম সামরিক স্বৈরশাসকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে জন্ম নেওয়ার পর থেকে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিরোধিতা করে আসছে এবং জেনারেল জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের আলিঙ্গন, রাজনৈতিক পুনর্বাসন করা এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক মতবাদের সংস্কৃতি প্রবর্তন করায় যুদ্ধাপরাধীদের হোয়াইটওয়াশ উত্তরাধিকার বলে জানা গেছে।
এদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ফেসবুক পোস্টে ভাঙচুরের ফুটেজ নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিএনপির এই কাজটিকে ১৯৭১ সালে লাখ লাখ ধর্ষণ ও হত্যাকারী পাকিস্তানি আদর্শকে মহিমান্বিত করার আরেকটি প্রকাশ বলে অভিহিত করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাহুল আরও বলেন, ‘এখন পাঁচ দশকের পরেও যদি দলটি যুদ্ধাপরাধীদের মহিমান্বিত করে পরবর্তী প্রজন্মের ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চায়, তবে এটি একটি বিড়ম্বনা এবং কৌশলটি অবশ্যই পরাজয়ের দিকে পরিচালিত করবে।’
আরও পড়ুন: আমরা চাই বিএনপি পূর্ণশক্তিতে নির্বাচনে অংশ নিক: তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশ থেকে জামাল খান চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের এক সমাবেশ থেকে বিক্ষোভকারীরা বলেন, দেশে আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণের জানমালের ক্ষতি করা এবং সাধারণ মানুষের ক্ষতি করা বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক নীতি।
আরও পড়ুন: বিএনপির অনেক নেতা তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে: ওবায়দুল কাদের