বিদ্রোহ সংঘটন ও প্ররোচনাসহ বিভিন্ন অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সোমবার জাতীয় সংসদে আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩ উত্থাপন করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি উত্থাপন করেন এবং তা পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট স্ক্রুটিনি কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যদের অভ্যন্তরীণ অপরাধ বিচারের জন্য দুটি আদালত থাকবে।
একটি হলো অতিরিক্ত পরিচালকের নেতৃত্বে 'সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন কোর্ট' এবং অন্যটি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে 'বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন কোর্ট'।
বিদ্রোহ, বিদ্রোহের প্ররোচনা, বিদ্রোহের ক্ষেত্র তৈরি, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার মতো গুরুতর অপরাধের বিচার হবে বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতে। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে ন্যূনতম পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তিমূলক বিধান সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুতর অপরাধের বিচার হবে বিশেষ আদালতে।
বিলে বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমতো দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, কোনও স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।’
বিলের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, এই আইন আনসারকে পুলিশের সমান্তরাল বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
তিনি উল্লেখ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য আনসার তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বিলের ৭ ও ৮ ধারা অনুযায়ী পুলিশ যা করে আনসার বাহিনী তা করতে পারে।
ফখরুল ইমাম বলেন, নতুন আইনে পুলিশের মতো দায়িত্বশীল কর্মকর্তার নির্দেশে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিলটি এভাবে পাস হলে আনসার বাহিনী হয়ে যাবে।
তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিলটি ফিরিয়ে নিতে এবং নতুন করে হাউসে উপস্থাপন করতে বলেন।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেকোনো দুর্যোগে আনসার সদস্যরা অন্য বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করে।
নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনী পর্যাপ্ত নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সে লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।
আগামী নির্বাচনেও একই সংখ্যক আনসার বাহিনী নিয়োগের কথা উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, পুলিশের সমান্তরাল বাহিনী হিসেবে আনসার গঠনের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
তিনি বলেন, খসড়া বিলে কোনো সাংঘর্ষিক বিধান থাকলে তা সংসদীয় কমিটিতে সংশোধন করা হবে।