জাতীয় ও স্থানীয় সরকার উভয় নির্বাচনই একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার (৩ জুন) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় দলটি এমন প্রস্তাব দিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনার মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় জামায়াতের নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব হলো জাতীয় ও স্থানীয় উভয় নির্বাচনই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হোক।’
জামায়াত সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে সংসদ সদস্যরা তাদের নিজ নিজ দলীয় অবস্থানের বাইরে ভোট দিতে পারেন—তবে এটি অর্থ বিল, অনাস্থা প্রস্তাব এবং সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
আরও পড়ুন: বাজেটে দেশ পুনর্গঠনের প্রত্যয় প্রতিফলিত হয়নি: জামায়াত
কিন্তু বিএনপি কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় চারটি বিষয় ছাড়া দলীয় অবস্থানের বাইরে সংসদ সদস্যদের ভোটদানের পক্ষে মত দেয়—এই চারটির মধ্যে জামায়াতের উল্লেখিত তিনটি বিষয় ছাড়াও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোও রয়েছে।
জামায়াতের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে অবস্থানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে প্রস্তাবিত তিনটি ব্যতিক্রমের বিষয়ে আমাদের মতামত দিয়েছি।’
দ্বিতীয় দফার আলোচনার দ্বিতীয় দিন সকাল ১১টায় কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে শুরু হয়। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)সহ প্রায় ৩০টি দল মঙ্গলবারের বৈঠকে অংশ নেয়।
সোমবার, প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করেন।
গণতান্ত্রিক সংস্কার উদ্যোগে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তি গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২০ মার্চ প্রথম দফার সংলাপ শুরু করে।
আরও পড়ুন: আগে বিচার ও সংস্কার চাই, তারপর জাতীয় নির্বাচন: অধ্যাপক মুজিবুর
কমিশন গত ১৯ মে প্রথম দফার আলোচনা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)সহ ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে।
২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনের দায়িত্ব ছিল গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তি রচনা করা।