বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘শিগগিরই’ বাংলাদেশে ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (১০ জুন) গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান অবশ্যই দেশে ফিরবেন। তিনি অবশ্যই ফিরে আসবেন।’
এসময় সাংবাদিকরা তারেক রহমানের দেশে ফেরার সঠিক তারিখ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি শিগগিরই ফিরে আসবেন।’
তবে, ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানের দেশে ফেরার নির্দিষ্ট সময় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেননি ফখরুল।
এর আগে বিএনপির এই নেতা নিশ্চিত করেন যে, লন্ডনে আগামী ১৩ জুন (শুক্রবার) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক করতে যাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আরও পড়ুন: লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠক ১৩ জুন
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে লন্ডনে স্থানীয় সময় ১৩ জুন সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত একটি বৈঠকের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
মির্জা আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন তখন থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে এ বৈঠকের চেষ্টা করা হয়েছে। সবশেষ সোমবার স্থায়ী কমিটির মিটিংয়ে এ বৈঠকের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।’
ফখরুল জানান, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা যে হোটেলে উঠেছেন, সেখানেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এ বৈঠকের মাধ্যমে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের পথ উন্মুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তারেক-ইউনূসের বৈঠককে টার্নিং পয়েন্ট আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমান সরকারও এই অভ্যুত্থানের ফসল। এ দুপক্ষের বৈঠক সফল হলে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান আসবে।’
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের সময়সূচি পুনঃবিবেচনার আহ্বান ফখরুলের
নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নিয়ে বৈঠক হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত কোনো এজেন্ডা নেই। সামগ্রিক বিষয় নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে আলাপ হবে।’
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, তিনি শারিরীকভাবে আগের চেয়ে ভালো। চিকিৎসকরাও তাই বলেছেন। তিনি অনেক ভালো আছেন।’
তারেক রহমান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে। ২০০৮ সালে এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বপরিবারে লন্ডনে চলে যান তিনি।
পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার অনুপস্থিতিতে পাঁচটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়। এবং শতাধিক আইনি প্রক্রিয়া চলছিল।
শুধু তাই নয় আদালত তাকে পলাতক ঘোষণা করে তার বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করে। এমনকি তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হতে থাকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপি নেতা তারেক রহমান পূর্বের যেসব মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন— তা থেকে খালাস পান।
চলতি বছরের শুরুতে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান এবং ছেলে তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করেন। গত মে মাসে দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান দেশে ফিরে আসেন।