অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ‘বিএনপির মুখপাত্র’ আখ্যা দিয়ে তাদের সমালোচনা করেছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন না হলে 'বিএনপি মুখপাত্র' উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
বুধাবার (২১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে এনসিপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার সংস্থা নির্বাচনের অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি এই বিক্ষোভ করেছে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘ওয়াহিদউদ্দিন ভাই (উপদেষ্টা) বাংলাদেশে শিক্ষাকে ডুবিয়ে দেওয়ার কাজ করছেন, সালেহউদ্দিন ভাই (উপদেষ্টা) দেশের আর্থিক খাতকে ডুবিয়ে দেওয়ার কাজ করছেন। আসিফ নজরুল আইন মন্ত্রণালয়কে ডুবিয়ে দেওয়ার কাজ করছেন। এমন হলে আমরা একটি কর্মসূচি দিয়ে তাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করব।’
আরও পড়ুন: ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় নির্বাচনের দাবিতে এনসিপির বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলাম এবং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন ও গঠনতন্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়নি।’
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছাত্র-জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন উল্লেখ করে নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘আসিফ নজরুল একবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, জুলাই সনদ ঘোষণা করা হবে, কিন্তু তা করেননি। তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন...।’
তিনি বলেন, ‘এবার যদি কোনো শব্দের পরিবর্তন হয়, তাহলে আমি জানি না আসিফ নজরুল বাংলাদেশে থাকবেন কিনা।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, তারা জুলাই সদন ঘোষণার অপেক্ষা করছেন। ‘আমরা ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছি, তারপর ইসি পুনর্গঠন করা হবে, স্থানীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ পাব।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ২০২২ সালের আইন অনুসারে গঠিত হয়েছে, যা বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তির মধ্যে স্বৈরাচারী শাসনামলে গঠিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘এই কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। কিন্তু এটি (সাংবিধানিক) অবস্থান বজায় রাখার পরিবর্তে একটি দলের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছে, যা দেশের জন্য লজ্জাজনক।’
আরও পড়ুন: অন্তবর্তী সরকারে এনসিপি-বিদেশি ও ফ্যাসিবাদের দোসর রয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
নির্বাচন কমিশনকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যোগ্যতা পরীক্ষা করার জন্য প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন এনসিপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। স্থানীয় নির্বাচনের আগে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না।’
এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আয়োজন করে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা। দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ শুরু হয়ে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত চলে।
এনসিপি নেতারা অভিযোগ করেন, সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নের আগে এই কমিশন তাড়াহুড়ো করে গঠন করা হয়েছিল। এই কমিশন ইতোমধ্যেই তার নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে বলেও দাবি তাদের।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে এই এনসিপি নেতারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে দলটিকে তার জনপ্রিয়তা পরীক্ষা করতে বলেন।