সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের চলমান আন্দোলনের মাঝেই রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
বুধবার (১৭ জুলাই)- জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে এ সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে গায়েবানা জানাজা শেষে মিছিল বের করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এরপর পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষ, আহত ১৩
পুলিশি তৎপরতার মুখে দলটির নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন অলি-গলিতে অবস্থান নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ধরে পাথর ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে।
এর আগে, কড়া নিরাপত্তা ও পুলিশি বাধা সত্ত্বেও বায়তুল মোকাররম মসজিদে গায়েবানা জানাজায় যোগ দেন বিএনপিসহ দলটির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
বুধবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকার সমস্যার সমাধান করতে পারত। কিন্তু পরিস্থিতি সংঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি ‘ন্যায্য’ উল্লেখ করে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপি সমর্থন দেওয়ায় পুলিশ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বোমা ও লাঠিসোঁটা রেখে অভিযানের নামে নাটক করছে।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে এ অভিযান চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীদের জানাজায় পুলিশ দলটির নেতা-কর্মীদের অংশ নিতে বাধা দিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তার ভাষ্যে, এদিন দুপুরের পর থেকে বায়তুল মোকাররমের আশপাশে পুলিশ অবস্থান নেয় এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের মসজিদে যেতে বাধা দেয়। এসময় তাদের অনেককে আটকও করা হয়। জানাজার আগে-পরে দলটির নেতা-কর্মীদের পুলিশ মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে বুধবার সারা দেশে গায়েবানা জানাজা করার ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল।
সেদিন সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ