ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের আন্দোলনের 'গুগলিতে' ক্লিন বোল্ড হয়েছে দাবি করে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার উল্লেখ করেন, রাজপথে দলের বিজয় অর্জনে লক্ষ্যের ‘অনেকদূর’এগিয়েছে।
সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক প্রতিবাদ জনসমাবেশে বক্তব্যে ফখরুল বলেন,‘আরেকটি স্পিন (ক্রিকেটে) যাকে বলা হয় গুগলি যার মাধ্যমে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিডল স্টাম্প উড়িয়ে দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বোল্ড আউট করা হয়। সেই অনুযায়ী গত ২৮ ও ২৯ জুলাই বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে গেছে।
বিএনপি নেতা আরও দাবি করেন যে, বৃষ্টি ও প্রচণ্ড তাপ সহ্য করে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ গত ২৮ জুলাই নয়াপল্টনে তাদের দলের মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছিল। 'টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া' পর্যন্ত সারা দেশ থেকে রাজধানীতে মানুষ আসছে।
আরও পড়ুন: ডিবি অফিসে খাবার খাওয়ার ব্যাখা দিলেন গয়েশ্বর
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘সেই মহসমাবেশে জনতা শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার বার্তা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, পরদিন (২৯ জুলাই) তারা হরতাল বা অবরোধের পরিবর্তে রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি দিলেও অস্ত্র ও সাঁজোয়া যানে সজ্জিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের শত শত ‘গুন্ডা’ ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান নেয়।
তিনি বলেন, সবচেয়ে জঘন্য ব্যাপার হলো, পুলিশ বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমানউল্লাহ আমানকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। ‘পরে, তারা স্ক্রিপ্ট প্রস্তুত করে এবং গল্প এবং ভিডিও তৈরি করেছিল। এমনই অপহরণকারী সরকার!’
বিএনপি নেতা বলেন, জনগণের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক নেই তারাই এ ধরনের অপহরণ ও কাল্পনিক গল্পের আশ্রয় নেয়। ‘মানুষ তাদের গল্প গ্রহণ করেনি। আমাদের নেতা গয়েশ্বর বাবু ও আমানউল্লাহ আমানকে কি সেই গল্পগুলো হেয় করা হয়েছে? আপনারা যারা এই ধরনের নোংরা নাটক তৈরি করেছেন তারা লজ্জিত হয়েছেন।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ফখরুল বলেন, তারা শেখ হাসিনা ও তার সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন চান না। ‘আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। আমাদের দাবি সোজাসুজি মানা না হলে রাজপথে ফায়সালা করা হবে। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি এবং আমাদের জয় নিশ্চিত।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় বিএনপির ৫৪৯ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা
দলের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে দলের নেতা-কর্মীদের ওপর ‘হামলার’ প্রতিবাদে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা ঐতিহাসিক সভাস্থলে জনসমাবেশের আয়োজন করে।
জনসমাবেশস্থলের চারপাশে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
শনিবার দলের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন। একই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিএনপির সব জেলা ও মহানগর শাখা।
শনিবার ঢাকার মূল প্রবেশপথে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি সংঘর্ষ ও সহিংসতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রাজধানী। এতে অসংখ্যক মানুষ আহত হয়।
আরও পড়ুন: হামলার প্রতিবাদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশ শুরু