মেহেরপুরে ইউনিয়ন কাউন্সিল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়ট পর্যন্ত সদর উপজেলার আমঝুপি বাজারে সংঘর্ষের ঘটনাগুলো ঘটে।
এসময় সদস্য সচিবের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহতদের মধ্যে সদস্য সচিব কামরুল হাসানের অনুসারী ৬জন ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের তিন সমর্থক আহত হয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপি নেতা মুকুল ও তৌহিদুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ দুইটি পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আমঝুপি গ্রামের গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো।
আরও পড়ুন: অস্থিরতা এড়াতে ড. ইউনূসকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান বিএনপির
তিনি বলেন, এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা সম্মেলনে অংশ নিতে মেহেরপুর শহর থেকে রওনা হই। আমঝুপি বাজারের সড়ক দিয়ে গন্ধরাজপুরে যেতে চাইলে সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা আমাদের গাড়িবহরে বাধা দেয়।’
এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মেহেরপুর সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে একটি টিম ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ভিন্ন পথে পাঠায়।
পরে কামরুল হাসানের গাড়িবহরটি আমঝুপি সামিউল টাওয়ারের সামনের গলি দিয়ে গন্ধরাজপুরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাইফুল ইসলাম পক্ষের নেতাকর্মী তাদের উপর হামলা চালায়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল তাদের ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে ওই গাড়িবহরটি গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছায়। আহত ৬ জনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
এরপর হামলাকালীদের থামাতে সাইফুল ইসলাম পক্ষের ৩ নেতাকর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ এসময় আটকদের ছাড়িয়ে নিতে সাইফুল ইসমাম পক্ষের নেতাকর্মীরা মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক আমঝুপি বাজারে অবরোধ করে। এতে বন্ধ হয়ে যায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই তিন নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেন।
অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান অভিযোগ করেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত মেহেরপুরের আহ্বায়ক কমিটিকে মেনে না নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে ।
পাল্টা অভিযোগ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, বেআইনিভাবে তারা আমঝুপি ইউনিয়নের সম্মেলন করতে চাইলে আমরা বাধা দিয়েছি। তবে কামরুল হাসানের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলেও পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে এখনও কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।