বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তাদের দল বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছ থেকে কিছুই আশা করে না। কারণ তিনি সরকারের ‘হাতিয়ার’ হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘তিনি (সিইসি) যে বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে প্রতীয়মান হয় যে তিনি অতীতের মতো (ভোট) চুরি করে (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় বসানোর কথা ভাবছেন। সুতরাং, তার কাছ থেকে আশা করার কোন কারণ নেই।’
রবিবার (৮ অক্টোবর) এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, নির্বাচনের দিকে মনোযোগ না দিয়ে সিইসি আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের সহায়তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করছেন।
তিনি বলেন, ‘এই লোকটি (সিইসি) এখন যা করছে এগুলাই তার কাজ, যেহেতু তাকে ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতিয়ার হিসেবে সেখানে রাখা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ভোট চুরি করে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসানোই তার কাজ। আপনারা তার কাছ থেকে কি আশা করেন? আপনারা তাদের কাছ থেকে কিছু আশা করতে পারেন না।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি অফিসে এনডিএমের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক 'গভর্নেন্স অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ (জিপিআর)' আয়োজিত 'গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন: নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, কাঠামোগত সংস্কার এবং প্রধান অংশীজনদের ভূমিকা'- শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক একেএম ওয়ারেসুল করিম।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিচার বিভাগসহ দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানই এখন কাজ করছে না।
তিনি বলেন, সব প্রতিষ্ঠানই এখন 'ফ্যাসিবাদী' সরকারের সেবা করছে, যেখানে গণমাধ্যমগুলো নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হল ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সরকারকে অপসারণ করা। এটা কোনো দলের সংগ্রাম নয়, কারণ এটা দেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একবার স্বাধীন হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এটি এখন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ।’
খসরু অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংবিধানে সংযোজিত নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। ‘আদালত কর্তৃক এই বিধান বাতিল করা অসাংবিধানিক ও অবৈধ।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পতনের পর গণতান্ত্রিক রাজনীতি পুনরুদ্ধার এবং বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে দেশ গড়ার লক্ষ্যে তাদের দল ইতিমধ্যে ৩১ দফা প্রস্তাব পেশ করেছে।
বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, তাদের দল প্রকৃত গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে এবং সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার সরকারের অপসারণ চায়।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ।