আওয়ামী লীগ সরকার ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, 'এই সরকার ভুয়া ও প্রহসনের নির্বাচন করে তার ইচ্ছানুযায়ী সংসদ দখল করেছে। এখন সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি।’
ড. মঈন দাবি করেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পূর্বনির্ধারিত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এটা এখন আর শুধু বিএনপির বক্তব্য নয়, এটি এখন সব প্রমাণসহ বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নয়া পল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন হয়েছে সরকার বনাম সরকার: তৈমূর
তিনি বলেন, সবচেয়ে হতাশাজনক ও লজ্জাজনক বিষয় হচ্ছে সরকার প্রকাশ্য দিবালোকে ভোট ডাকাতিতে লিপ্ত হয়েছে। ‘তারা আলোচনার মাধ্যমে খোলাখুলিভাবে আসন ভাগ করে নিয়েছে এবং (নির্বাচনের আগে) কে কোন আসনে নির্বাচিত হবে প্রকাশ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন বলেন, এই সরকার কতটা অর্থহীন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর আজ সকাল ১০টা ৪২ মিনিটের দিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে দলের মহাসমাবেশ ভণ্ডুল হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করে বিএনপি কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৭৫ দিন পর খোলা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়
ড. মঈন বলেন, গত ২৮ অক্টোবর দেশের সর্ববৃহৎ দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখল করে নেয় সরকার। তিনি বলেন, 'আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) অফিস পুনরায় খুলেছি এবং জনগণের পক্ষে কথা বলতে এসেছি, কারণ আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করি।’
বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের দল অতীতের মতো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা রাস্তায় আছি এবং আন্দোলন করে যাব। বিএনপি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করে না, কারণ আমাদের মূল লক্ষ্য জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সুতরাং, আমরা আন্দোলন করছি এবং আমরা জনগণের ভোটাধিকার, জনগণের অর্থনৈতিক সমতার অধিকার এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার করব। আমরা বাংলাদেশে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করব যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর কাছে এটা প্রমাণিত, এই সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, ‘এই সরকার যা বিশ্বাস করে তা হলো একদলীয় বাকশাল শাসন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এম শাহজাহান, জয়নুল আবেদীন, নেতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অনিয়ম, ভোট কারচুপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ব্যালটে সিল মারার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: পাঁচ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া