আফ্রিকার পর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার প্রারম্ভে এমপক্সের প্রথম ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়ে শুক্রবার ডব্লিউএইচও বলেছে, আফ্রিকাসহ বিশ্বজুড়ে এমপক্সের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’।
ডেনমার্কের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাভারিয়ান নর্ডিক এ/এস এই ভ্যাকসিনটি প্রস্তুত করেছে।
তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শুধুমাত্র ইউনিসেফ এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থা এই ভ্যাকসিন কিনতে পারবে। একটিমাত্র প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে এই ভ্যাকসিনটির প্রাপ্যতা এবং সীমিত সরবরাহের কারণে আপাতত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডব্লিউএইচও।
আরও পড়ুন: এমপক্সের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ‘আফ্রিকায় বর্তমান প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে ভ্যাকসিনের এই প্রথম প্রাক-যোগ্যতা ভবিষ্যতে এমপক্সের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
এদিকে, অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেখানে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, অনুদান ও সরবরাহের পরিমাণ বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন অনুযায়ী, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের দুই ডোজে টিকা দেওয়া যাবে।
অনুমোদনে আরও বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনটি বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য লাইসেন্স না পেলেও প্রাদুর্ভাবের পরিস্থিতি বুঝে এটি শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের শরীরে ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি কোথাও এই টিকার ঝুঁকির চেয়ে জীবনের ঝুঁকি বেশি দেখা যায়, সেক্ষেত্রে বয়সের সীমা না মেনেও এই টিকা প্রয়োগ করা যাবে।
আরও পড়ুন: এমপক্স প্রতিরোধে দেশের প্রবেশ পথ-বিমানবন্দরে নতুন নির্দেশনা
গত মাসে আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, এমপক্সে বিশ্বে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভুগছে কঙ্গো। দেশটির মোট আক্রান্তদের প্রায় ৭০ শতাংশই ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। এমনকি এমপক্সে সেখানে নিহতদের ৮৫ শতাংশেরই বয়স ১৫ বছরের কম।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) আফ্রিকা সিডিসি জানায়, এমপক্সে আক্রান্ত হয়ে গত সপ্তাহে ১০৭ জনের প্রাণ গেছে। এছাড়া নতুন করে ৩ হাজার ১৬০ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এমপক্স গুটিবসন্তের মতো ভাইরাসের একই পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। আক্রান্তের শরীরে এটি জ্বর, সর্দি ও শরীরের ব্যথার মতো হালকা লক্ষণ সৃষ্টি করে। আরও গুরুতর ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ, হাত, বুক, এমনকি যৌনাঙ্গেও ক্ষত বিস্তৃত হতে পারে।