নওগাঁ জেলা পুলিশের উদ্যোগে প্রতিদিন শহরে ৩০০ মানুষের মধ্যে ইফতার প্যাকেট বিতরণ করা হচ্ছে রোজার প্রথমদিন থেকেই।
নওগাঁ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান মিয়ার নির্দেশে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন সহকর্মীদের নিয়ে রমজানের প্রথম দিন থেকে অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণের কাজটি করে আসছেন।
নওগাঁ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফয়সান বিল আহসান বলেন, ‘এসপি স্যারের নির্দেশে আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। রমজানের প্রথম দিন থেকে নওগাঁ শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অলিগলি ও ফুটপাতে অবস্থান করা অসহায়, ছিন্নমূল, শারীরিক প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, রিকশাচালক, শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ইফতারের প্যাকেট তুলি দিচ্ছি। রমজানের বাকি দিনগুলোতেও এভাবে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, খেজুর, মুড়ি, ছোলা, বেগুনি, জিলাপি ও বিভিন্ন ধরনের ফল কিনে সেগুলোকে প্যাকেট করার কর্মযজ্ঞ চলে নওগাঁ থানায়। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে থানার পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তারা খাবারগুলো প্যাকেটজাত করতে হাত লাগায়। আসর নামাজের পর ইফতারের প্যাকেটগুলো একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে ছিন্নমূল, ভাসমান, রিকশাওয়ালাসহ নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
নওগাঁর পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘দেশে বর্তমানে একটা দুর্যোগ পরিস্থিতি চলছে। এই পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। পুলিশ প্রশাসনের কাছে ত্রাণের কোনো ফান্ড না থাকলেও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা নিজের পরিবার খরচ কমিয়ে এবং বেতনের একটা অংশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে মানবিক সহায়তা ফান্ডে জমা দিচ্ছেন। আমি নিজে এবার আমার বেতনের একটা বড় অংশের টাকা মানবিক ফান্ডে জমা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকারি বিধিনিষেধের কারণে খাবার হোটেলগুলো বন্ধ রয়েছে। এছাড়া আগের মতো ইফতার সামগ্রীর দোকানও এবার খোলা থাকছে না। এতে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের যেসব মানুষকে জীবনের তাগিদে বাইরে বের হতে হচ্ছে তারা বিপদে পড়ছেন। এই মানুষগুলোর কষ্টের কথা চিন্তা করে ইফতারের সময় যাতে তারা একটু তৃপ্তি ভরে খেতে পারেন সেই জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’