নওগাঁ
বিদ্যুৎ লাইনের ‘সুরক্ষা’র বলি ৭৫০ তালগাছ
নওগাঁ বাইপাস সড়কের দুই পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি প্রায় ৭৫০টি তালগাছের ডালপালা কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। গাছগুলোর উপর দিয়ে থাকা বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের সুরক্ষা দিতে গাছগুলো ন্যাড়া করে দিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) কর্মীরা। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, সরকার যখন পরিবেশ রক্ষায় ও বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তালগাছ রোপণের উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে গাছগুলো এভাবে ডালপালা কেটে ন্যাড়া করা ঠিক হয়নি। এতে পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়বে। বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব ছিল। এতে গাছ বাঁচত, পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা পেত।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কের দুইপাশে বেড়ে ওঠা এসব তালগাছের বয়স ২০-৩০ বছর। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বিভিন্ন এলাকা থেকে তালের বীজ সংগ্রহ করে সড়কের দুইপাশে রোপণ করেন। এখন গাছগুলোর কারণে সড়কটির সৌন্দর্য বেড়েছে।
তাদের দাবি, ডালপালা ছেঁটে ফেলার কারণে গাছগুলো মরে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর আগেও ডাল কেটে ফেলার কারণে কিছু গাছ মরে গেছে। সড়ক সংস্কারের নামে বারবার নির্বিচারে গাছ হলেও গাছ বাঁচাতে কারো কোনো উদ্যোগ নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ বাইপাস সড়কের রামভদ্রপুর থেকে বটতলী বোয়ালিয়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার অংশজুড়ে রয়েছে কয়েক হাজার তালগাছ। এসব গাছের উচ্চতা ১০ থেকে ১২ ফুট। তালগাছের সামান্য দূরত্ব দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপিত হয়েছে একের পর এক। এর মধ্যে দুপাশে থাকা অংসখ্য তালগাছ ন্যাড়া মাথায় দাঁড়িয়ে আছে। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি এসব গাছের আর আগের সৌন্দর্য নেই। সেই সঙ্গে সড়কটিও সৌন্দর্য হারিয়েছে।
১ দিন আগে
হিমেল হাওয়া, নওগাঁয় শীতের সঙ্গে বাড়ছে ভোগান্তি
পৌষের শুরুতেই নওগাঁয় হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতের দাপট বেড়েছে। আকাশে হালকা কুয়াশা ও মেঘের কারণে গতকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শ্রমজীবী এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের। দিনের বেলাতেও যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। গতকাল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন থেকে নওগাঁয় হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দিন-রাত বইছে ঠান্ডা বাতাস;এ কারণে শীতও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
নওগাঁর বরুণকান্দি এলাকার ভ্যানচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, গত দুই দিন থেকে শীত অনেক বেশি। ভ্যান চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। হাত কাঁপাকাঁপি করে, হ্যান্ডেল ভালো করে ধরে রাখা যায় না। লোকজনও সেভাবে বাইরে বের হচ্ছে না। কিন্তু পেটের দায়ে ঠান্ডা লাগলেও বাইরে আসতে হচ্ছে।
বদলগাছী আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক বলেন, জেলায় আজকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল থেকে সূর্যের দেখা না পাওয়ায় আজকে শীত কিছুটা বেশি। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা এ রকম থাকতে পারে।
নওগাঁ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আশেকুর রহমান জানান, প্রতিটি উপজেলায় অসহায় ছিন্নমুল দিনমজুর মানুষের মাঝে গরম কাপড় বিতরণ করার জন্য ইতোমধ্যে ছয় লাখ টাকা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। এতে জেলার ১১ উপজেলায় এখন পর্যন্ত মোট ৬৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলায় সাড়ে ৭ হাজারটি কম্বল বরাদ্দ এসেছে, যেগুলো বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।
৩ দিন আগে
নওগাঁয় বাড়ছে শীত, পারদ নামল ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে
দেশের উত্তরের জেলা নওগাঁয় দিন দিন শীতের দাপট প্রকট হচ্ছে। তাপমাত্রার কমার সঙ্গে সঙ্গে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণের নিত্যদিনের স্বাভাবিক কার্যক্রম।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত এটিই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
স্থানীয়রা বলেছেন, সন্ধ্যার পর থেকে হালকা কুয়াশার সঙ্গে বেশ শীত অনুভূত হয়। রাতভর হালকা কুয়াশায় ঢেকে থাকে এলাকা। তবে সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ঠান্ডার অনুভূতি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোদের কারণে বেশ গরম অনুভূত হয়।
২১ দিন আগে
নওগাঁয় নিজ বাড়ি থেকে দম্পতির লাশ উদ্ধার
নওগাঁর পোরশায় নিজ বাড়ি থেকে এক দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের শীতলী ফকিরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— শীতলী ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল হাই বাবু (৫৫) ও তার স্ত্রী মোমেনা বেগম (৪৫)।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতেও দম্পতি তাদের দুই মেয়েকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ছোট মেয়ে দেখে তার মা বিছানায় পড়ে আছেন এবং বাবা গলায় রশি দিয়ে ঝুলছেন।
আরও পড়ুন: পুলিশের ভয়ে নদীতে লাফ, দুদিন পর কিশোরের লাশ উদ্ধার
এই দৃশ্য সে তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশের প্রতিবেশীদের খবর দেয়। প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকে দুজনকেই মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে রাতের কোনো একসময় স্ত্রী মোমেনা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তার স্বামী। পরে আব্দুল হাই বাবু নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।’
এ ঘটনায় পোরশা থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে বলেও জানান ওসি মিন্টু রহমান।
১৫৪ দিন আগে
নওগাঁয় স্কুলছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’, ভিডিও ভাইরালের পর তোলপাড়
নওগাঁর মান্দায় দোকানে নুডলস কিনতে গিয়ে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ধর্ষকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় থানায় মামলা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
গত শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও দুদিন পর ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি ভুক্তভোগীর পরিবার ও অন্যান্যদের নজরে আসে। ভুক্তভোগীর দাবি, তার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে। এমনকি ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানালে তার বাবাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে ভয়ে সে কাউকে কিছু বলতে পারেনি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের নাম রিফাত হোসেন (২৪)। তিনি জেলার মহাদেবপুর উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে রিফাত পলাতক রয়েছেন।
ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে গ্রামের এক মাতবরের বাড়িতে ডেকে নিয়ে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ার কারণে থানায় যেতে পারছি না।’
ভুক্তভোগীর মা জানান, মেয়েটি গত শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় মোড়ের একটি দোকানে নুডলস কেনার জন্য যায়। সে বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা রিফাত হোসেন মুখ চেপে ধরে তাকে নির্মাণাধীন ওয়াশ ব্লকের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে ধানী নামের এক ব্যক্তির সহায়তায় তাকে ধর্ষণ করে ওই যুবক।
আরও পড়ুন: রাজধানীর বনানীতে পথশিশু ধর্ষণের শিকার
তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে ওই দিন নুডলস না কিনে বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়ে। সারা দিন খাওয়া-দাওয়াও করেনি। পরে সোমবার (১৪ জুলাই) ধর্ষণের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মেয়েকে জিজ্ঞাসা করে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি।’
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী জানায়, ‘ওয়াশ ব্লকের ভেতরে নিয়ে আমার ছোট ভাইকে জবাই করে হত্যার হুমকি দিয়ে রিফাত খারাপ কাজ করেছে। এ সময় সেখানে ধানী দাদু বাইরে পাহারা দিচ্ছিলেন। ঘটনাটি প্রকাশ করলে রিফাত আমার বাবাকেও হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে। ভয়ে আমি বাড়িতে কিছুই বলতে পারিনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গত সোমবার ‘ফারজানা ফারিয়া অন্তরা’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে ধর্ষণের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। আমরা ধর্ষক রিফাতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন রেজা, এ ঘটনায় বুধবার বিকালে দুইজনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
১৬০ দিন আগে
কনস্টেবলকে চড়-থাপ্পড়, বিএনপি নেতার নামে মামলা
সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালককে সরে যেতে বলায় পুলিশ কনস্টেবলকে প্রকাশ্যে চড়-থাপ্পড় মারার ঘটনায় নওগাঁ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রহমান রিপনের নামে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ভুক্তভোগী কনস্টেবল বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই পুলিশ কনস্টেবলের নাম আমিনুল ইসলাম। তিনি সদর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন: বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণা মামলা: বিএসবি গ্লোবালের বাশার রিমান্ডে
এর আগে সোমবার (১৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের মুক্তির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগীকে চড়-থাপ্পড় মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল থেকেই মুক্তির মোড় এলাকায় ট্রাফিকের ডিউটিতে ছিলেন কনস্টেবল আমিনুল ইসলাম। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই সড়ক হয়ে একটি মিছিল যাচ্ছিল জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ওই মুহূর্তে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে সেখানে নামেন মামুনুর রহমান রিপন। এতে যানজট সৃষ্টি হলে রিকশাটিকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেন কনস্টেবল আমিনুল ইসলাম।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করার পাশাপাশি ওই কনস্টেবলকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে লাঞ্ছিত করেন মামুনুর রহমানসহ তার সঙ্গে থাকা ৭–৮ যুবক। পাশাপাশি ‘আওয়ামী দোসর’ ট্যাগ দিয়ে কনস্টেবল আমিনুল ইসলামকে নওগাঁ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কনস্টেবল আমিনুল ইসলাম বলেন, রিকশাটিকে সরে যেতে বলায় মামুনুর রহমান অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমার দুই গালে কয়েকবার চড়-থাপ্পড় দিয়ে বাড়ি কোথায় জানতে চান। ঘটনার ভিডিও মামলার এজাহারের সঙ্গে সংযুক্ত করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মামুনুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই কনস্টেবল বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ বলেন, মামুনুর রহমান রিপন জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। তার এমন কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
১৬০ দিন আগে
চুনিয়াগাড়ির বেহাল তিন সড়কে থমকে আছে সম্ভাবনা
নওগাঁ সদর উপজেলার অন্যতম বৃহৎ গ্রাম চুনিয়াগাড়ি। চারপাশে ধানখেত, পুকুর আর শান্ত গ্রামীণ জীবনের ছবি; তবে গ্রামে ঢুকতেই বদলে যায় চিত্র। রাস্তা যেন ধানের জমি! খানাখন্দে ভরা কাদাপথ পেরিয়ে চলতে হয় শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগী আর দিনমজুরদের।
চুনিয়াগাড়ির বাসিন্দাদের এখন শুধু একটাই দাবি— ‘রাস্তা চাই’। কারণ এই তিনটি ভাঙাচোরা গ্রামীণ সড়ক যেন তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এক অদৃশ্য বাধার দেওয়াল তুলে দিয়েছে।
চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার ৯ নম্বর চণ্ডিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত চুনিয়াগাড়ি গ্রামটি কয়েকটি অংশে বিভক্ত। গ্রামের ছোট চুনিয়াগাড়ি থেকে বড় চুনিয়াগাড়ি যাওয়ার প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত মাটির রাস্তা। যে রাস্তা দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে কোনোমতে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই রাস্তার খানাখন্দ ভরে যায় বৃষ্টির পানিতে। তখন দেখে বোঝার উপায় থাকে না—এটি রাস্তা নাকি ফসলের জমি।
আবার গ্রামের বটতলি থেকে বিশ্ববাঁধ পর্যন্ত আরেকটি আধা কিলোমিটার সড়কেরও বেহাল দশা। এই সড়কে ইট বিছানো থাকলেও বহু বছর মেরামত কিংবা সংস্কার না করার কারণে সড়কের একাধিক জায়গায় ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তা দিয়ে ছোট ছোট গ্রামীণ যানবাহন চলাচলের ঝক্কি পোহানো নো লাগেই, অনেকসময় গাড়ি উল্টে স্থানীয়দের আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।
আরও পড়ুন: বর্জ্যে বিপন্ন হাজীগঞ্জ, ডেঙ্গু-শ্বাসকষ্টে ছড়াচ্ছে উদ্বেগ
এ ছাড়া, গ্রামের তালতলি থেকে বিশ্ববাঁধ সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার অংশের অবস্থাও বেহাল। বর্ষার সময় এই সড়ক দিয়ে বাইরের কেউ চলাচল করতে চান না। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দাদের সেই সুযোগ নেই। দুর্ভোগকে সঙ্গী করেই প্রতিনিয়ত কষ্ট করেই গলার কাঁটা এই তিনটি গ্রামীণ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
প্রভাবিত হচ্ছে গ্রামের শিক্ষাব্যবস্থা
চুনিয়াগাড়ি গ্রামের তালতলি-বিশ্ববাঁধ সড়কের বেহাল দশার কারণে বর্ষা মৌসুমের পুরোটাজুড়েই ভয়ে শিক্ষার্থীরা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যায় না। এমনকি গ্রামের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক যোগদান করলেও দুর্গম পরিস্থিতির কারণে তারা অন্যত্র চলে যাওয়ার তোড়জোড় করেন।
ছোট চুনিয়াগাড়ি থেকে বড় চুনিয়াগাড়ি যাওয়ার সড়কটির করুণ অবস্থার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাচলের সময় রাস্তার গর্তের পানিতে পড়ে গিয়ে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের কাদায় লুটোপুটি খেতে হয় বলে জানান অভিভাবকরা।
অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বড় বাধা
চুনিয়াগাড়ির কৃষকরা ফসল ফলাতে পিছিয়ে নেই, কিন্তু তা বাজারে পৌঁছানো বিরাট এক ঝক্কির ব্যাপার।
সড়কের বেহাল দশার কারণে ছোট ছোট গ্রামীণ বাহনগুলো গ্রামে যেতে চায় না। ফলে এই গ্রামের কৃষক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য স্থানীয় পর্যায়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়।
আরও পড়ুন: জামালগঞ্জে পরিত্যক্ত সেতু দিয়ে ঝুঁকিতে চলাচল, দুর্ভোগে ৩৫ গ্রামের মানুষ
সরেজমিনে দেখা যায়, বটতলী থেকে বিশ্ববাঁধ পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তায় বিছানো ইট অনেক আগেই উঠে গেছে; তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এতে করে পোল্ট্রি খামারিদের মুরগি পরিবহন কিংবা কৃষকের ধান বিক্রি—সবকিছুতেই যুক্ত হয়েছে লোকসানের ঝুঁকি।
১৮৯ দিন আগে
নওগাঁয় স্ত্রীর হাত কেটে ফেলার পর গণপিটুনিতে স্বামী নিহত
নওগাঁ শহরের আনন্দনগর এলাকায় মাদকাসক্ত হয়ে স্ত্রীর হাত কেটে দেওয়ার পর গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৮ মে) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম সুমন আলী (৩২)। নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের দুবলহাটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। সুমন পেশায় গৃহনির্মাণ শ্রমিক ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিন-চার বছর আগে শহরের আনন্দনগর এলাকার আব্দুস সামাদের মেয়ে ময়ূরী আক্তারের (২৪) সঙ্গে সুমনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন সুমন। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদক গ্রহণের অভিযোগ আছে এবং সে কারণে প্রায়ই স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝগড়া হতো। এমনকি তিনি সংসারের খরচও দিতেন না।
আরও পড়ুন: বরগুনায় গুলিবিদ্ধ ডাকাত গণপিটুনিতে নিহত
গতকাল (বুধবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদকাসক্ত অবস্থায় সুমন আবারও স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি হাসুয়া দিয়ে ময়ূরীর গলা ও হাতে কোপ মারেন, এতে তার বাঁ হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পরে স্থানীয় ও পুলিশের সদস্যরা উদ্ধার করে তাকে ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠান।
এদিকে ঘটনার পর উত্তেজিত এলাকাবাসী সুমনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পিটুনি খেয়ে গুরুতর আহত হয়ে গেলে তাকেও নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আহত দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। নিহত সুমনের মাথা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার মৃত্যু গণপিটুনির কারণেই হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। লাশ হাসপাতালেই রয়েছে। পরিবারের লোকজন এলে প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তা হস্তান্তর করা হবে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগও দেয়নি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
২০৯ দিন আগে
নওগাঁয় বাসচাপায় মোটরসাইকেল মেকানিকের নিহত
নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গায় বাসের চাপায় সোহেল রানা নামে এক মোটরসাইকেল মেকানিক নিহত হয়েছেন।
রবিবার (১৯ মে) বিকাল সাড়ে ৬টার দিকে বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের পাশে নজিপুর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ঘাতক বাসটি জব্দ করেছে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ।
নিহত সোহেল রানা নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ২ শিক্ষার্থী নিহত
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ শহরের জেলা পরিষদ গেটের সামনে সোহেল রানার একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকান রয়েছে। রবিবার বিকালে একটি মোটরসাইকেল মেরামতের পর সেটি পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে তিনি বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাসস্ট্যান্ডের পাশে তিনি ইউটার্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন। সে সময় প্রায় ৪০০ ফুট দূরের ওই বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের একটি দ্রুতগামী বাস তাকে চাপা দেয়। বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার পর ঘাতক বাসটি পাশে থাকা বলাকা ট্রেডার্স পেট্রোল পাম্পে রেখে পালিয়ে যান চালক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
নওগাঁ সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) খোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ঘাতক বাস ও দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল থানায় নেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
২১৯ দিন আগে
নওগাঁয় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
নওগাঁয় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় সাপাহার উপজেলায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক যুবক এবং মহাদেবপুর উপজেলায় ড্রাম ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে।
শনিবার (৩ মে) দুপুরে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন— নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার মধুইল আলিয়া মাদরাসা পাড়া এলাকার সায়েম আলীর ছেলের ফরহাদ হোসেন (২০) ও মহাদেবপুর উপজেলার শুখনা গোপালপুর গ্রামের শফি মন্ডলের ছেলে আতোয়ার হোসেন (৪৫)।
সাপাহার থানা পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেল করে ফরহাদ ও তার বন্ধুরা ঘুরতে গেলে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ফরহাদ মৃত্যুবরণ করেন।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, ‘পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পতেঙ্গায় নারী ও শিশুসহ ৩৫ রোহিঙ্গা আটক
অন্যদিকে নিহত আতোয়ার মহাদেবপুরে কাজ শেষ করে সাইকেলযোগে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় উপজেলার নাটশাল নবীনগর মাদরাসার সামনে পৌঁছালে মহাদেবপুর থেকে মাতাজিগামী একটি ড্রামট্রাক তাকে পেছন থেকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী ট্রাকসহ চালককে আটক করে। পরে পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করেছে।
অন্যদিকে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন রেজা বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে নওগাঁর সাপাহার ও মহাদেবপুর থানা দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে।’
২৩৫ দিন আগে