‘সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে পরিবারের প্রিয় মানুষের মুক্তির খবরে আবারও নতুন করে ঈদের খুশি বইছে। অতীতকে ভুলে গিয়ে আবারও নতুন জগতে প্রবেশ করছি। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত তৃপ্তিদায়ক ও আনন্দদায়ক খবর। জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তির খবরে আমাদের পরিবারের সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পরিবর্তন হয়ে গেছে।’
এভাবে বলছিলেন একমাস রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির মধ্যে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নওগাঁর সাইদুজ্জামান সাঈদের বাবা ও স্ত্রী।
তার মুক্তির খবরে পরিবারে ফিরেছে স্বস্তি। এখন তাকে দেখার জন্য অপেক্ষায় আছেন তার মা-বাবা, স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা। নিরাশা কাটিয়ে পরিবারে ছড়িয়ে পড়েছে খুশির আমেজ।
আরও পড়ুন: ছিনতাই হওয়া জাহাজের ২৩ নাবিককে চলতি মাসেই উদ্ধার করা হবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী
সাইদুজ্জামান সাঈদের বাবা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের হাতে সাঈদ আটকের খবরের পর থেকে দিনগুলো যেন বিভীষিকাময় কেটেছে। এর মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর চলে এলেও ঈদের খুশি ছিল না পরিবার।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলের মুক্তির খবর শোনার পর আমাদের পরিবারে স্বস্তি এসেছে। আমাদের বুকের ওপর যে পাথর চেপে ছিল, সেটি নেমে গেছে। এই খবর শোনার পর ঈদের আনন্দ আমরা নতুন করে উপভোগ করছি।’
সাঈদের স্ত্রী তামান্না তাহরিন বলেন, ‘রবিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমাদেরকে ফোনে জানানো হয় মুক্তির খবরটি। পরে সকালে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান জলদস্যুরা তাদেরকে মুক্ত করে দিয়েছে এবং ৬৫ জনের জলদস্যু এমভি আব্দুল্লাহ ছেড়ে চলে গেছে। এখন ধীরে ধীরে সোমালিয়া উপকূল পার হয়ে দুবাইয়ের দিকে যাত্রা শুরু হয়েছ। ২২ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত সময় লাগবে তাদের দুবাই পৌঁছাতে।’
আরও পড়ুন: ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করা কঠিন: জাহাজের মালিকপক্ষ
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এক মাস খুবই ভয়াবহ বিপদের মধ্যে কেটেছে। আসলে বাইরের এটা কেউ বুঝবে না। তাদের মুক্তির খবর শোনার পর খুবই ভালো লাগছে। আল্লাহর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা। এখন সুস্থভাবে যত দ্রুত বাড়ি ফিরবে আমরা ততই স্বস্তি পাব।’
জিম্মি নাবিকদের পরিবারের কাছে দ্রুত ফিরে দেওয়ায় কোম্পানি ও সরকারকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান পরিবারের সদস্যরা।
এর আগে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর তারা জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায়। ওই জাহাজের ২৩ জনের মধ্যে নওগাঁ শহরের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে সাইদুজ্জামান সাঈদ জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন।
আরও পড়ুন: জিম্মি জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী