ঢাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলার চেয়ে মেনে চলা কঠিন। এটি এমন একটি শহর যেখানে অনেক ঘরের আয়তন ১২০ বর্গফুটেরও কম এবং দশ লাখ মানুষ গাদাগাদি করে বস্তিতে বসবাস করছে।
রাজধানীর কড়াইল বস্তি, যার বাসিন্দা এক লাখেরও বেশি। এখানে মানুষ গাদাগাদি করে বসবাস করে, এদের মধ্যে অল্প কয়েকজনই স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকে।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে সামাজিক দূরত্ব একটি উপায়। কিন্তু প্রাদুর্ভাব বন্ধ করতে শারীরিক দূরত্ব এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা এখানে প্রায় অসম্ভব। এখানে মাত্র একটি কক্ষের ঘর রয়েছে, যার ভিতরে ছয় থেকে সাতজন মানুষ বাস করছে।
এছাড়াও গণ রান্নাঘর ও টয়লেট, পানির উৎস, খোলা নর্দমা, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং বাসিন্দাদের দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থা তাদের আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
দেশে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে শহরের বস্তিগুলো ভাইরাস হটস্পট হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল। তবে, এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে বস্তিতে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ হয়েছে।
করোনা ধনীদের রোগ-অনেক বস্তিবাসী এমন বিশ্বাস থেকে মাস্ক পরার প্রয়োজন মনে করেন না এবং যেখানে মানুষ খুব কাছাকাছি থাকে, সেখানে সামাজিক দূরত্ব মানতে বাধ্য করার কথা ভাবা যায় না।
সম্প্রতি আইসিডিডিআর এর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার ৭১ শতাংশ বস্তিবাসীর শরীরে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
আইসিডিডিআর,বিগত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি ও অন্যান্য এলাকায় এ গবেষণা চালায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বস্তির বাসিন্দারা ইতোমধ্যেই হয়তো এমন একটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে যা কোভিডের বিরুদ্ধে প্রাচীর হিসাবে কাজ করছে, যেটা এখানে বসবাসকারী অনেক দরিদ্র মানুষকে রক্ষা করছে।