কুড়িগ্রামে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আরও দু-তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর হোসেন।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি জানান, আজ কুড়িগ্রাম জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে করে জেলাজুড়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা আরও দু-তিন দিন চলতে পারে।
এই কর্মকর্তা বলেন, 'আগামী ২৪ ঘন্টায় কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে। আগামী দুই-তিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।'
তবে এদিকে আবার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে অতিষ্ঠ এ জেলার মানুষ। গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ তখন বিদ্যুতের এমন আসা-যাওয়ার লুকোচুরি খেলায় বেকায়দায় পড়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষজন।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের নুরুল মিয়া বলেন, দিনে-রাতে বিদ্যুৎ কতবার যায় আসে তার কোন হিসাব নেই, খুব সমস্যা হচ্ছে। আমি অটোরিকশা চালাই রাতে চার্জ হচ্ছে না। এখন গাড়ি চার্জ দেই কখন, আর ভাড়া মারি কখন।
একই এলাকার কম্পিউটার ব্যবসায়ী নুরুন্নবী বলেন, কারেন্ট ঠিকমত না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে খুব সমস্যা হচ্ছে, একবার গেলে দুই ঘন্টা থাকেনা, আবার আসে অল্প সময়ের জন্য আবার চলে যায়। এভাবে আসা যাওয়া করলে আমরা ব্যবসা করি কিভাবে।
এদিকে তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন খেটে-খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষজন। যেসময় বিদ্যুৎ থাকে ফ্যানের বাতাসেও স্বস্তি মিলছে না।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে কমেছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রাম পৌরশহরের ফল ব্যবসায়ী আবু মিয়া বলেন, কয়েকদিন থেকে প্রচুর গরম পড়ছে দোকানে থাকা যাচ্ছে না। ব্যবসা না করলে তো আর চলবে না। যতই গরম হোক না কেন আমার দোকানে থাকতে হবে। তবে বিদ্যুৎ যদি নিয়মিত থাকত তাহলে গরমটা একটু কম বোঝা যেত।
জিয়া বাজার এলাকার কুঠির শিল্পের ব্যবসায়ী মাঈদুল ইসলাম বলেন, প্রতি সপ্তাহে আমি দুই দিন বিভিন্ন প্রকার মালামাল এখানে বিক্রি করি। আজ বাঁশের তৈরি ১০০ হাত পাখা বিক্রি করলাম। যা এবছর সর্বোচ্চ। এ বছরে কোনদিন এত হাতপাখা বিক্রি করতে পারি নাই। যে গরম পড়ছে আশা করছি আরও ৫০টা হাতপাখা বিক্রি করতে পারবো।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাটের আদিতমারি জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বলেন, গ্যাস স্বল্পতা ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মূলত বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণেই মুলত সারাদেশের মত কুড়িগ্রামেও লোডশেডিং হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কুড়িগ্রামে কৃষি খাতে ক্ষতি ১২৭.৫৪ কোটি টাকা