রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় এক শিশুকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগে (৬০) বছরের এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার সকালে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জবানবন্দি নেয়ার জন্য দুপুরে তাকে আদালতে নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার সিরাজ খাঁ (৬০) গোয়ালন্দ উপজেলার চর দৌলতদিয়া তেছের মাতুব্বর পাড়ার আব্দুল খার ছেলে। শিশুটি এক কৃষক পরিবারের সন্তান ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করতো।
পুলিশ ও শিশু কন্যার পরিবার জানায়, পরিবারের দুধের চাহিদা থাকায় গ্রামের সিরাজ খাঁর কাছ থেকে প্রতিদিন আধা লিটার করে গাভীর দুধ নেয়। শিশুটি ও তার মা একেক দিন একেকজন ওই বাড়ি থেকে বিকালে দুধ নিয়ে আসে। গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল ৩টার দিকে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধের বাড়িতে ভুক্তভোগী দুধ আনতে যায়। এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় তাকে ঘরে যেতে বলে। ঘরে প্রবেশ করা মাত্রই শিশুটিকে আটকায়। এ সময় সে চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ তাকে করে। পরে শিশুটিকে এ বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে বারণ করে এবং ভয় দেখায়। শিশুটি বাড়ি ফিরলেও চুপচাপ হয়ে যায়। পরদিন সম্পর্কের শিশুটির চাচাতো ভাবী কি হয়েছে জানতে চাইলে সে ঘটনা খুলে বলে। পরে ওই চাচাতো ভাবী বিষয়টি শিশুটির মায়ের কাছে জানায়। এ সময় মান সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি। কিন্তু শিশুটি দিন দিন বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে গত রবিবার (২৩ অক্টোবর) শিশুটির বাবার কাছে বিষয়টি জানায়। শিশুটি আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে পরদিন সোমবার (২৪ অক্টোবর) শিশুটিকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। একই সঙ্গে উপায় না পেয়ে পরদিন মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) শিশুটির বাবা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহ মুহাম্মদ শরীফ জানান, গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে শিশুটিকে পরিবার ভর্তি করে। এর আগে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ধর্ষণ সংক্রান্ত কোন রোগীর চিকিৎসা করা হয়নি। এই প্রথম এ শিশুটিকে দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও, ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় পরিপূর্ণ তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার জানান, শিশুটির বাবার করা মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানার এসআই দেওয়ান শামীম খান বুধবার সকালে নিজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত সিরাজ খাঁকে গ্রেপ্তার করেন। তাকে দুপুরেই রাজবাড়ীর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।