রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় নুরু মন্ডল পাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চাচা-ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ির পাশের ডোবা থেকে পাটকাঠি আনতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- স্থানীয় মাছেম মোল্লার ছেলে মো. নুরু মোল্লা (৭৫) ও তার ভাতিজা মো. শামীম মোল্লা (৩২)। শামীম মোল্লার বাবার নাম মো. আনোয়ার মোল্লা।

স্থানীয়রা জানান, নুরু মন্ডল পাড়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের তার স্পার্ক করে ছিঁড়ে খালের পানিতে পড়েছিল। এতে ওই খালের পুরো পানি বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশের ওই খাল পাড় থেকে পাটকাঠি আনতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ঘটনাস্থলেই মারা যান নুরু মোল্লা।

আরও পড়ুন: বিয়ের রাতেই আলোকসজ্জার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বরের মৃত্যু!

তারা আরও জানান, বাড়ির পাশে ডোবায় চাচাকে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন তার ভাতিজা শামীম মোল্লা। এ সময় তিনিও বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলেই এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালে আনার পথেই আরেক জনের মৃত্যু হয়।

এদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ- বাড়ির পাশে নুরু মন্ডল পাড়ায় স্তূপ করে রাখা বালু সরানোর কাজে ব্যবহৃত খননযন্ত্র এস্কেভেটর দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে কাজ করার সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে খাল পাড়ে পড়ে। তারের অংশ পানিতে পড়ে থাকায় অসচেতনার অভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

আরও পড়ুন: হাজীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ গোয়ালন্দ কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকরামুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এক সপ্তাহ আগে স্পার্ক করে বিদ্যুতের তার বিচ্ছিন্ন হয়ে পানিতে পড়ে থাকার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এলাকাবাসীর কেউ আমাদের জানায়ওনি। বিষয়টি কেউ বুঝতে না পারায় এমন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিকালেই ঘটনাস্থলে আসেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আমরা যতদূর তদন্ত সাপেক্ষে দেখতে পেলাম- বিদ্যুতের তারের বেশ কয়েক স্থানে ফায়ার বা স্পার্ক করার চিহ্ন রয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই এখানে লাইনের তার ছিড়ে পড়েছিল। সচেতনতার অভাবে আজ দুটি তাজা প্রাণ ঝড়ে গেল।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ হতে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দু’টি দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল ছাত্রলীগ কর্মীর