চুয়াডাঙ্গায় টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলমান তাপপ্রবাহ জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গত ছয় দিন ধরে এ জেলাতেই রেকর্ড হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার (১৪ মে) বিকাল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৪২ শতাংশ।
এর আগের দিনগুলোতেও তাপমাত্রা ছিল প্রায় একই রকম। মঙ্গলবার ৩৮.৭, সোমবার ৩৮.৮, রবিবার ৪১.৮ এবং শনিবার জেলায় এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
প্রায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই এই গরমে জনজীবন নাকাল হয়ে পড়েছে। মে মাসের শুরু থেকেই সূর্যের তীব্রতা বাড়তে থাকায় চুয়াডাঙ্গার মানুষ রীতিমতো হাঁসফাঁস করছে। চলমান এই তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও কৃষিকাজে নিয়োজিতরা। দিনে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
আলমডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা নাজমুল হক শাওন বলেন, ‘রাস্তায় বের হলেই মনে হয় শরীর পুড়ে যাচ্ছে। এই গরমে নিঃশ্বাসও নিতে কষ্ট হচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালপাড়ার বাসিন্দা সাকিব আলী বলেন, ‘গত কয়েকদিনে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আমাদের এখানেই। চলাচলে খুব কষ্ট হচ্ছে। এখনই যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়বে।’
আরও পড়ুন: সারা দেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, তাপ্রবাহের কারণে হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার এবং দিনে অন্তত ৩-৪ লিটার পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছি।’
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা, রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এ অবস্থায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবে এই গরমের মাঝে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইতোমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায়ও দুয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’