একই সাথে আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা ইলিয়াস জোমাদ্দার বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার উত্তর খোন্তাকাটা গ্রামের রাশিদিয়া (স্বতন্ত্র) এবতেদায়ী মাদরাসার সুপার। তার বাবার নাম আব্দুল গফ্ফার জোমাদ্দার।
বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম সম্প্রতি এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট সকাল ৭টার দিকে সহপাঠীদের সাথে মাদরাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস জোমাদ্দারের কাছে কোরআন শিক্ষার জন্য যায় নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী। সকাল ৮টার দিকে অন্য ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে মাদরাসার লাইব্রেরির কক্ষে নিয়ে দরজা বন্ধ করে মুখ চেপে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ইলিয়াস।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার ১১ দিন পর ১৯ আগস্ট মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মাদরাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস জোমাদ্দারকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই বছর ১৮ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
থানা পুলিশের তদন্তের পর পিবিআই উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু সাইয়েদ ওই বছরের ১৩ নভেম্বর অভিযুক্ত মাওলানা ইলিয়াস জোমাদ্দারের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত চলতি বছরের ৯ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।
১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার মধ্যে দিয়ে ১০ বছর বয়সী ওই মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণ মামলার বিচার কাজ শেষ করে আদালত।
রায় ঘোষণার পর আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
রায় ঘোষণার পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ এপিপি রনজিৎ কুমার মন্ডল জানান, আদালতে অভিযোগ গঠনের পর মামলার বিচারিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা ছিল। আদালত মামলার রায়ে আসামি ইলিয়াস জোমাদ্দারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
রায় ঘোষণার পর মামলার বাদি এবং ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায়, উচ্চ আদালতেও এই রায় বহাল থাকার প্রত্যাশার কথা জানান।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. আলী আকবর জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।