টেকনাফে পঙ্গপালের মতো এসব পোকার আক্রমণে বিভিন্ন ফল গাছের সবুজ পাতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পোকাগুলো সংঘবদ্ধভাবে আম গাছসহ অন্যান্য ফল গাছের কাঁচা পাতা নষ্ট করে ফেলছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি পঙ্গপালের আক্রমণ কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে এটি ক্ষতিকর পোকা। এসব দমন করার জন্য কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল সিকদারের লম্বরী গ্রামের বাড়িতে এসব পোকা হানা দিয়েছে। আম গাছ ছাড়াও অন্যান্য গাছের সবুজ পাতা খেয়ে সাবাড় করেছে পোকাগুলো। কোথাও কোথাও শাখা ছাড়া কোনো পাতা অবশিষ্ট রাখেনি।
সোহেল সিকদার বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আম গাছের পাতা ও আগাছা থেকে শুরু করে শুকনো পাতা ও গাছের শাখা-প্রশাখায় সারি সারি পোকা দেখতে পাই। আমি একটি আম গাছের নিচে ঝোপঝাড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পোকার আক্রমণ কমানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং দিন দিন পোকার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোথাও গাছের শাখা আছে, পাতা নেই। আবার কোথাও পাতা ঝলসে গেছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেন, ‘এ পোকা আগে দেখা যায়নি। পোকাগুলো এখনও অচেনা। এসবের ছবি কক্সবাজার জেলা অফিস থেকে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখনও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য আসেনি। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বিশেষজ্ঞ দল টেকনাফে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পঙ্গপালের পাখা থাকে এবং সহজে উড়তে পারে। এ পোকাগুলোর তেমন পাখা দেখা যায়নি এবং তবে এদিক-ওদিক লাফাতে পারে। কিন্তু যেহেতু কাঁচা পাতা খেয়ে ফেলছে তাই এটি ক্ষতিকর পোকা। এসব পোকা যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য কীটনাশক স্প্রেসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে স্থানীয়দের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
এদিকে, কৃষি মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে টেকনাফের লম্বরী গ্রামে আক্রমণ করা পোকাগুলো ঘাসফড়িংয়ের মতো। এগুলো তেমন ক্ষতিকর নয় মর্মে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এসব পোকা মরুভূমিতে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা পঙ্গপাল জাতীয় কোনো পোকা নয়।
এ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের উপপরিচালক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার কীটনাশক স্প্রে করার পর গাছে থাকা পোকাগুলো মারা যায়। সেখানে আর কোনো জীবিত পোকা নেই বলেও তিনি জানান।