টেকনাফে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিলস্থ নাফ নদীর কিনারায় বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গা নিহতের কথা জানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তারা হলেন- উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ/৩ ব্লকের সোলতান আহমদের ছেলে মো. আবুল হাশেম (২৫) ও একই ক্যাম্পের সি/১ এর আবু ছিদ্দিকের ছেলে নুর কামাল (১৯)। তাদেরকে ইয়াবা পাচারকারী দাবি করছে বিজিবি।
টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফয়সাল হাসান খানের ভাষ্য, নাফনদীর হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে বিজিবির একটি বিশেষ টহল দল ওই স্থানে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। এক পর্যায়ে ৪-৫ জন ইয়াবা পাচারকারী নৌকা যোগে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশের জলসীমার কিনারায় পৌঁছালে বিজিবি জওয়ানরা তাদের চ্যালেঞ্জ করে। এসময় দুই পাচারকারী পালিয়ে গেলে বিজিবি জওয়ানরা তাদের ধাওয়া করে এবং ওত পেতে থাকা ইয়াবা কারবারিরা অতর্কিতভাবে বিজিবির ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এসময় তিনজন বিজিবি সদস্য আহত হন।
তার দাবি, আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও গুলিবর্ষণ করলে ইয়াবা কারবারিরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে দুই ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। বিজিবি সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
ওই কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, নিহতদের পকেটে থাকা পরিচয়পত্র থেকে তাদের নাম-পরিচয় চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থল হতে ৫০ হাজার ইয়াবা বড়ি, দেশীয় তৈরি ১টি বন্দুক, ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ২টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বিজিবি।
এদিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুরে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক ব্যক্তি নিহতের কথা জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। নিহত আব্দুল মোতলেব (৪২) রসুলপুর ছয়আনি এলাকার কেটু শেখের ছেলে। পুলিশের দাবি, সে আন্তজেলা ডাকাত দলের একজন সদস্য। তার বিরুদ্ধে ৭/৮টি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দের ভাষ্য, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রসুলপুর বাজারের পাশে পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে আন্তজেলা ডাকাতর দলের সদস্যরা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন খবরের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। এসময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রথমে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে তারা পালিয়ে যায়।
তার দাবি, ঘটনাস্থল তল্লাশি করে আব্দুল মোতালেব নামে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, ১৫ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ ও ২০টি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ভুতগাড়ী গ্রামে শুক্রবার ভোরে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একাধিক মামলার আসামি আমিনুল ইসলাম ওরফে ক্যাসেট (৪৫) নিহতের কথা জানিয়েছে পুলিশ। নিহত আমিনুল পাঁচবিবির পিয়ারা গ্রামের মৃত সাহাবুল ইসলামের ছেলে। পুলিশের দাবি, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়সহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুনসুর রহমানের ভাষ্য, ভোরে পাঁচবিবি উপজেলার ভুতগাড়ী গ্রামে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়কারী সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা জড়ো হওয়ার গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। এসময় তাদের অবস্থান টের পেয়ে ওই অপহরণকারী দলের সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি ছুড়ে। পরে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
ওসির দাবি, এ সময় আমিনুল ইসলাম ওরফে ক্যাসেট গুলিবিদ্ধ হলে অপহরণকারী দলের অপর সদস্যরা পালিয়ে যান। পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমিনুল ইসলামকে উদ্ধার করে পাঁচবিবির মহিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই কর্মকতার দাবি, এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তলসহ ৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।