রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, গত রবিবার জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের আরও আট পুলিশ সদস্যের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেসব ফলাফলও ঢাকা থেকে রাজশাহীতে এসে পৌঁছবে।
সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় দেশের মধ্যে রাজশাহীর বিভিন্ন থানা, ফাঁড়ি ও বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত পুলিশের মাদকাসক্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। রাজশাহী জেলায় পুলিশের মাঝে মাদকাসক্তির হার অধিক বিবেচনায় ডোপ টেস্ট চলমান রয়েছে।
তবে কিট সংকটে রাজশাহী মহানগর পুলিশে (আরএমপি) ডোপ টেস্ট শুরু হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ মতে, অক্টোবরে রাজশাহী জেলা পুলিশে সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট শুরু হয়। ইতোমধ্যে সাত সন্দেহভাজনের ডোপ টেস্ট করার পর চার জনকে শনাক্ত করা হয়। এই চারজনই বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল।
ডোপ টেস্টে মাদক গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ লাইনে প্রত্যাহারসহ তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়েছে।
রবিবার রাজশাহী জেলা পুলিশের আরও আটজনের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে এসআই, এএসআই ও কনস্টেবল রয়েছেন। কয়েকদিনের মধ্যে এসব টেস্টের ফলাফল জেলা পুলিশের হাতে আসবে। আরও কিছু সন্দেহভাজন সদস্যের ডোপ টেস্ট হবে।
রাজশাহী পুলিশ হাসপাতালের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নেতৃত্বে ডোপ টেস্ট কমিটি করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞ কমিটি প্রথমে ফলাফল ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠিয়ে থাকে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা বা মহানগর পুলিশকে ফলাফল জানানো হয়।
রাজশাহীর পুলিশ সুপার বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত এ সংক্রান্ত নির্দেশনাটি রাজশাহীর প্রতিটি থানা ও ফাঁড়িসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানের কাছে পাঠানো হয়েছে। মাদকাসক্ত হিসেবে যারা সন্দেহভাজন তাদের নাম গোপনে পুলিশ সুপারের কাছে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
‘কোনো থানার ওসি বা ইউনিট প্রধান অধীনস্থ কোনো সন্দেহভাজনের বিষয়টি গোপন করলে ওসির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে,’ বলেন তিনি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘গণহারে সবার ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে না। শুধু যারা সন্দেহভাজন তাদেরই করা হচ্ছে। এদের মুখ, চোখ ও ঠোঁট দেখেও অনেক সময় মাদকাসক্ত বলে সন্দেহভাজনদের প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব। ডোপ টেস্টের সময় তাদের এসব লক্ষণ দেখা হচ্ছে।’
এদিকে রাজশাহী জেলা পুলিশে ডোপ টেস্ট শুরু হলেও রাজশাহী মহানগর পুলিশে এখনও এই কার্যক্রম শুরু হয়নি।
এই বিষয়ে আরএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম রুহুল কুদ্দুশ বলেন, ‘আরএমপিতে ডোপ টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিট আসেনি। কিট পৌঁছলে মাদকাসক্ত পুলিশ সদস্য শনাক্তে ডোপ টেস্ট শুরু হবে।’