আগামী ১ জুন (শনিবার) সারাদেশে জাতীয় ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাম্পেইন পালন করা হবে। এদিন ৬-৫৯ মাস বয়সি সব শিশুকে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাম্পেইনের তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৬-৫৯ মাস বয়সি প্রায় ২ কোটি ২২ লাখ শিশুকে দিনব্যাপী এই ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সি শিশুর সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ ও ১২-৫৯ মাস বয়সি শিশুর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ। প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কেন্দ্রে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী ও প্রায় ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী এই ক্যাপসুল খাওয়াবেন।
এ ক্যাম্পেইনে অংশ হিসেবে মেহেরপুরে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে ৭০ হাজার শিশুকে।
আরও পড়ুন: প্রায় ৭ লাখ শিশুকে ভিটামিন 'এ' ক্যাপসুল খাওয়াবে ডিএসসিসি
শনিবার (১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৭৫টি কেন্দ্রে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। আর ৭৫৪ স্বেচ্ছাসেবক ও ১৯৯ স্বাস্থ্যকর্মী টিকা খাওয়ানোর কাজটি পরিচালনা করবেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) জেলা সিভিল সার্জন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান সিভিল সার্জন ডা. মহীউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, জেলার ৫৪টি ওয়ার্ডে এবার ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৮ হাজার ৫৭০ শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লাখ ইউনিট) এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৬১ হাজার ৫৫৭ শিশুকে একটি করে নীল রঙের ক্যাপসুল (২ লাখ ইউনিট) খাওয়ানো হবে। একই সঙ্গে শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোসহ পুষ্টিবার্তা প্রচার করা হবে।
জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মহীউদ্দিন আহমেদ।
এছাড়াও চুয়াডাঙ্গায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৮ শিশুকে শনিবার (১ জুন) ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জেলার সদর হাসপাতাল কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়ার রহমান।
তিনি জানান, শনিবার সারা দেশের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গার ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। একই সঙ্গে উপকারভোগী শিশুর পরিবারকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হবে।
ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে জেলার ৯০৬টি কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৮ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এ কাজে নিয়োজিত থাকবে ১১৮ জন প্রথম সারির তত্ত্বাবধায়ক এবং ১ হাজার ৮১২ জন স্বেচ্ছাসেবক।
চাঁদপুরে ৬ থেকে ১১ মাস এবং ১২ থেকে থেকে ৫৯ মাস বয়সি মোট ৩ লাখ ৫৩ হাজার ১৮৯ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বেলা ১১টায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভা কক্ষে
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন বলেন, ভিটামিন ‘এ’ শিশুর অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ, শারীরিক বিকাশ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। রাতকানা রোগ কম হয়। সরকারিভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের এ ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় দেশে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমে আসছে। মায়েরাও বিভিন্নভাবে ভিটামিনের আওতায় আসছেন।
তিনি আরও বলেন, ১ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমাদের নির্দিষ্ট টিকা কেন্দ্র এবং ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তবে কোনো অসুস্থ শিশুকে খাওয়ানো হবে না। সুস্থ হলে খাওয়ানো হবে। ১ জুনের পরেও পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত আমাদের নির্দিষ্ট টিকা কেন্দ্রে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ভিটামিন ‘এ’র প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব নিয়ে বক্তব্য দেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আবদুল্লাহ জোবায়ের।
কুমিল্লায় ৯ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮১ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
জেলায় সর্বমোট ৪ হাজার ৯৩২টি কেন্দ্রে এই ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম চলবে সারা দিনব্যাপী।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, ৬ থেকে ১১ মাস বয়সি ১ লাখ ৮ হাজার ৭৮৪ জন শিশু এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৭ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এসময় দায়িত্ব পালন করবেন ৯ হাজার ৮৬৪ জন মাঠ কর্মী।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন জানান, শনিবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর এই ক্যাম্পেইন চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এসময় কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুল আলম, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন, সাংবাদিক আবুল হাসানাত বাবুল ও সাইয়িদ মাহমুদ পারভেজ।
আরও পড়ুন: ফর্টিফায়েড ভোজ্য তেল ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণ করতে পারে: বক্তারা