চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বেসরকারী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এস এস পাওয়ার প্লান্টে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিমুল আহমেদ (২৩) নামে আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের গুলিতে ৬ জনের মৃত্যু হল।
বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
নিহত শিমুল সিলেটের মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার জানাহুরা এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ: ২ মামলায় আসামি আড়াই হাজার
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া জানান, বাঁশখালীতে পুলিশের সাথে শ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত শিমুল আহমেদ নামে একজন মারা গেছেন। তিনি পেটে গুলিবিদ্ধ ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘যেদিন হাসপাতালে আনা হয়েছিল সে দিন প্রথমে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। একই দিন অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আজ সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এস এস প্লান্টে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিয়ে বিক্ষোভ চলছিল। গত (১৬ এপ্রিল) শুক্রবার থেকে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জেরে পরদিন শনিবার সকালে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শ্রমিক নেতারা। বৈঠক চলার সময় দাবি-দাওয়া আদায় নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশ গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। আহত হন অন্তত ২৫ জন। পরে বিকালে চমেক হাসপাতালে মারা যান আরও একজন।
বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এস আলম গ্রুপের এসএস পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ও চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো ও এইচটিজির মধ্যে চুক্তি হয়। ২০১৭ সাল থেকে গণ্ডমারা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমিতে ২৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে এস আলম বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৫
চুক্তি হওয়ার পর থেকেই গ্রামবাসীদের একটি পক্ষ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করেন পরিবেশ দূষিত হওয়ার কথা বলে। আরেকপক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পক্ষ নেয়।
এর জেরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তখন নিহত হন ৪ গ্রামবাসী। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ১৯ জন। এ ঘটনার পাঁচ বছর পর ফের হতাহতের ঘটনা ঘটলো বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায়।