পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বাংলাদেশে বাঘ ও চিতাবাঘ সংরক্ষণের জন্য ভারতের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ, দুই দেশই বাঘ ও চিতাবাঘের আবাসস্থল।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে সাতটি বড় বিড়াল প্রজাতি এবং বাংলাদেশে দু’টি বিপন্ন বিড়াল প্রজাতির সংরক্ষণের গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা মূলত এই প্রজাতিগুলোকে আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর সদস্যপদ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ) গঠনে সমর্থন করি।’
রবিবার ভারতের কর্ণাটকের মাইসুরুতে মাইসুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর প্রজেক্ট টাইগারের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন।
সাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণে শূন্য শিকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বন্য বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে। এটি একটি আশার বিষয় যে বন্য বাঘের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: দেশকে দূষণমুক্ত করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন যে সরকার জাতীয় প্রাণী এবং অন্যান্য বন্য প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়েছে।
শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (২০২২ থেকে ২০৩৪) এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২০২৭) বাস্তবায়ন করছে। যার মধ্যে রয়েছে বাঘ জরিপ; জেনেটিক অধ্যয়ন; সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ড্রোন দিয়ে স্মার্ট টহল ও পর্যবেক্ষণ; সুন্দরবন ও বাংলাদেশে বাগের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বন বিভাগের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি।
মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণে সহযোগিতা জোরদার করতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১১ সালে একটি প্রটোকল সই হয়।
মন্ত্রী বলেন, বাঘ-মানব সংঘাত প্রশমিত করতে আমাদের সরকার গ্রাম টাইগার রেসপন্স টিম, কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ গঠন করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নিয়োজিত করেছে।
তিনি বলেছিলেন, বন্যপ্রাণী শিকার ক্ষতিপূরণ বিধিমালা-২০২১ -এ বাঘের আক্রমণে নিহত ব্যক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসা প্রতিরোধ এবং বন্যপ্রাণী শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে বন বিভাগের অধীনে বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, শেখ কামাল বন্যপ্রাণী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে; যা মানসম্পন্ন কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ) চালু করেছেন যা বিশ্বের সাতটি বড় বিড়াল যেমন-বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, তুষার চিতা, পুমা, জাগুয়ার ও চিতার সুরক্ষা এবং সংরক্ষণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।
অনুষ্ঠানে এসব প্রজাতিকে আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর পরিবেশ ও বনমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশকে শব্দদূষণমুক্ত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী