ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে চাঞ্চল্যকর ফল ব্যবসায়ী মো. সাইদুর রহমান হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১ম আদালত) আয়েশা আক্তার সুমি এই আদেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চর-শিবপুর গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে কাজল মিয়া (৪৯), একই উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে রিপন মিয়া (৩২) ও নজরুল ইসলামের ছেলে রাসেল মিয়া (৩০)।
রায় ঘোষণার সময় রিপন মিয়া ও কাজল মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাসেল মিয়া পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর লঞ্চঘাট এলাকার মেঘনা নদী থেকে ফল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর একদিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি।
সাইদুর রহমান উপজেলার বাহেরচর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। তিনি উপজেলার করইকান্দি ফেরিঘাট এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন। নিহতের ভগ্নিপতি লোকমান মিয়া বাদী হয়ে একই বছরের ১ অক্টোবর রাসেল মিয়াকে আসামি করে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর দুই আসামি রিপন মিয়া ও মো. কাজল মিয়ার সম্পৃক্ততা পেয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন।
পরে বাঞ্ছারামপুর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী অফিসার মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী মামলাটি তদন্ত করে আসামি মো. রাসেল মিয়া, রিপন মিয়া ও মো. কাজল মিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে পুলিশ অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
পরে গ্রেপ্তাররা আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামিরা জানায়, পাওনা ২০ হাজার টাকা না পেয়ে সাইদুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন। পরে আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি মো. রাসেল মিয়া, রিপন মিয়া ও মো. কাজল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড করা হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজাদ মিয়া বলেন, রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন সামি বলেন, রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
আরও পড়ুন: জিসান হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড