যশোরের অভয়নগরে শ্বশুরবাড়ির লোকের নির্যাতন সইতে না পেরে এক নারীর ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার রাজঘাট রেলক্রসিংয়ের পাশে খুলনাগামী বেতনা ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
নিহত সুমাইয়া বেগম (২২) ওই উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের আলী হোসেন চুন্নির ছেলে রকি শেখের স্ত্রী এবং খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙা গ্রামের মহিরুল ইসলামের মেয়ে।
নিহত সুমাইয়ার বাবা মহিরুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘গত তিনবছর আগে রকির সঙ্গে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে রকি সুমাইয়ার ওপর যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। আমি তাদের এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর রকি আমার মেয়ের গলায় ছুরি দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি এবং মামলা করি। পরে সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন আমার বাড়ি এসে আলোচনা করে মামলা মীমাংসা করে মেয়েকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন নির্যাতন চালিয়েই যেতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে তাই আমার মেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা!
তিনি আরও বলেন, ‘সুমাইয়া আত্মহত্যার আগে আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছিল। সে তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা বলছিল। তখন প্রায় দুপুর বারটা বাজে। আমি তাকে মোবাইলে বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ করছিলাম। সে আমাকে বলেছিলো বাবা তোমার নাতিকে দেখে রেখো। তখন মোবাইলে আমি ট্রেন আসার শব্দ শুনছিলাম। হঠাৎ একটি শব্দ শুনলাম, এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটুপর জানতে পারি সে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
এ বিষয়ে যশোর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা