র্যাবের হেফাজতে নিহত নওগাঁ ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাবের তদন্ত দল।
সোমবার দুপুরে জেসমিনের ছেলে শহীদ হোসেন সৈকত ও তার ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলামকে নওগাঁ সার্কিট হাউসে নিয়ে গিয়ে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত দল।
জেসমিনের ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: জেসমিনের মৃত্যু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে নয়: চিকিৎসক
আমিনুল ইসলাম জানান, র্যাব সদস্যদের হাতে আটকের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ২২ মার্চ জেসমিনকে প্রথমে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ মার্চ তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমি এবং জেসমিনের ছেলে সৈকত জেসমিনের সঙ্গে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলাম, তাই র্যাব কর্মকর্তারা এই সময়ের মধ্যে যা ঘটেছে তা জানতে চেয়েছিলেন। এছাড়া তদন্ত দল আমাদের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নিয়েছে।
তবে মায়ের মৃত্যুর বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কিছু বলেননি জেসমিনের ছেলে।
এর আগে জেসমিনের মৃত্যুর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পায় রাজশাহী পুলিশ।
এর আগে গত রবিবার বিকালে সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন রামেক হাসপাতালের ফরসেনিক বিভাগ।
রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী সুলতানা জেসমিন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা গেছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ‘ব্রেন হেমারেজের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এমন কোনো লক্ষণ নেই।’
এছাড়া আদালতে প্রতিবেদন পৌঁছানোর আগে ‘স্পর্শকাতর’ এই বিষয় নিয়ে কেউ কথা বলবেন না বলে জানিয়েছিলেন।
এদিকে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড ২৫ মার্চ জেসমিনের মৃত্যুর পর আরএমসিএইচ মর্গে ময়নাতদন্ত করে।
এছাড়া ২৭ মার্চ পুলিশ রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তলব করেন হাইকোর্ট।
এদিকে সুলতানাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা র্যাব সদস্যদের বিষয়েও বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে সংবাদপত্রের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানাকে ২২ মার্চ সকালে নওগাঁ শহরের মুক্তিমোড় এলাকা থেকে র্যাব সদস্যরা আটক করে এবং ২৪ মার্চ রামেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এলিট ফোর্স।
তারা দাবি করেছে যে ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারণ তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় হাইকোর্টে জামিন পাননি হলমার্কের জেসমিন
র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না: মোমেন