ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আতিয়ার রহমান জানান, সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত তিনি খেতে ছিলেন। এরপর বাড়িতে যান। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তিনি খেতে গিয়ে দেখেন সবগুলো গাছের পাতা মাচার ওপর নুইয়ে পড়েছে। কারণ খুঁজতে গিয়ে গাছের গোড়ায় হাত দিয়ে দেখেন গাছগুলো গোড়া থেকে কাটা রয়েছে। একে একে সবগুলো গাছ কাটা দেখতে পান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আতিয়ার ছয় বিঘা জমি লিজ নিয়ে নানা ফসলের চাষ করেন। যার মধ্যে বেশির ভাগই থাকে সবজি। এ বছর এক বিঘা জমিতে বেগুন, দুই বিঘাতে মুলা, কিছু অংশে ওল, হলুদ এবং ৫০ শতকে লাউয়ের চাষ করেন। আগস্ট মাসের শুরুর দিকে লাউয়ের বীজ বপন করা হয়। ডায়না নামের হাইব্রিড জাতের লাউ হওয়ায় অল্পদিনের মধ্যে গাছগুলো বড় হয়ে যায়। প্রায় ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় করে সেখানে মাচা দেন তিনি। গাছগুলো মাচায় যাওয়ার পর ফুল আসতে শুরু করেছিল। কিছু কিছু গাছে লাউও ধরেছিল। এ পর্যন্ত এ খেতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। যার বেশির ভাগ তিনি ধার-দেনা করেছিলেন।
আতিয়ার বলেন, গত দেড় মাস তিনি এ খেতে রাত-দিন পড়ে থেকেছেন। সবকিছু নিজেই তদারকি করতেন। প্রতিটি গাছেই তার হাতের ছোয়া রয়েছে।
‘আশা ছিল এ খেত থেকে আড়াই লাখ টাকার লাউ বিক্রি করব। কিন্তু এখন সব শেষ হয়ে গেছে। কীভাবে আমার দেনা পরিশোধ করব?’ সংবাদকর্মীদের কাছে দুঃখ করে বলেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত এ কৃষক বলেন, ‘ফসলের সাথে এভাবে কেউ শত্রুতা করতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না।’
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিকদার মো. মোহাইমেন আক্তার জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত খেতটি পরিদর্শন করেছেন। কৃষক যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবর্ণা রানি সাহা বলেন, ‘ওই কৃষক লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’