১৯৭১ সালের এ দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিব রাজধানীর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল সমাবেশের সামনে স্বাধীনতার নবযুগ সৃষ্টিকারী ভাষণ দেন। মুক্তিপ্রেমী লাখো জনতার সামনে ১৯ মিনিট ধরে দেয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেই সাথে তিনি পাকিস্তানের শোষণকারী শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন।
বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৭ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
ইউএনবি প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় ঐতিহাসিক দিবসটি উদযাপনের খবর:
গাজীপুর: দিবসটি উপলক্ষে শনিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বারি’র মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল ওহাব বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উজ্জীবিত করেছিলেন। যার ফলে দেশের সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। তার এই ভাষণের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতার সংগ্রামের পথ নির্দেশিকা। তাই এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ফরিদপুর: সকালে শহরের থানা রোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা আওয়ামী লীগ, শহর আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, মহিলা লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গ সংগঠন।
নড়াইল: বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ উপলক্ষে সকালে জেলা শিশু একাডেমি কার্যালয়ে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ভাষণ প্রতিযোগিতায় ৬টি গ্রুপে শতাধিক শিশু অংশগ্রহণ করে। বিজীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়ারুল ইসলাম।
এছাড়া নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে দুপুর ৩টায় জেলা প্রশাসন নড়াইলের আয়োজনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে ৩০ ফুট লম্বা বঙ্গবন্ধু টাওয়ার প্রদর্শন, ২৭০-৮৫ ফুট বিশিষ্ট বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শন, ৬০-৩৬ ফুট বিশিষ্ট জাতীয় পতাকা প্রদর্শন, সহস্র কণ্ঠে শুদ্ধসুরে জাতীয় সংগীত ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পরিবেশন, গণসংগীত, কবিতা আবৃতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
কুমিল্লা: সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগর উদ্যান সংলগ্ন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে নগরীর রামঘাট এলাকায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।