বৃহস্পতিবার বিকালে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের কার্যালয়ে বিভাগীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের জরুরি সভায় ধর্মঘট শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা
নতুন সিদ্ধান্তের ফলে বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সিলেটের সব উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে সব ধরনের গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
ধর্মঘটটি শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও খ্রিষ্টানদের বড়দিন ও মাজার জিয়ারতে আসা লোকজন এবং ভ্রমণ পিপাসু মানুষের যাতায়াতের মানবিক দিকটি বিবেচনা করে কর্মসূচি শিথিল করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল।
আরও পড়ুন: সিলেটে চলমান ধর্মঘটে বিপাকে সাধারণ মানুষ
জরুরি সভায় পাথর উত্তোলন নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) ‘অপপ্রচারের’ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাজ উদ্দিন। সেই সাথে তিনি কোয়ারি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ ও ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।
সভায় পরিবহন নেতারা বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে আইনগত কোনো বাধা নেই। হাইকোর্টের ভোলাগঞ্জ ও বিছনাকান্দি কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের আদেশ রয়েছে। কিন্তু জেলা ও স্থানীয় প্রশাসন পাথর উত্তোলনে বাধা দিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ আদালতের নির্দেশবিরোধী।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সিলেট বিভাগীয় মালিক-শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠক করে সামনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান নেতারা।
আরও পড়ুন: যুক্তরোষ্ট্রে পারিবারিক ইমিগ্রেশন ভিসা চালুর দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন
মালিক-শ্রমিকদের জরুরি বৈঠকে উপস্থিত থেকে সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করেন বাংলাদেশ সড়ক শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সিলেট বিভাগীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আবু সরকার, সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ জিয়াউল কবির পলাশ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৩ দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু মঙ্গলবার
পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়া- এ পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এর আগে, ২০১৪ সালে বেলার দায়ের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।
সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আন্দোলন শুরু করেন পাথর ব্যবসায়ীরা। এবার তাদের সাথে যুক্ত হন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। তারা একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ করার পর পরিবহন ধর্মঘট ডাকেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের ২য় দিন চলছে, ভোগান্তি চরমে
তারা বলছেন, পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় সিলেটের ট্রাক মালিক-শ্রমিকরা গভীর সংকটে পড়েছেন। এছাড়া কোয়ারিতে কাজ না থাকায় জাফলং ও গোয়াইনঘাট সড়কে বাস ও অটোরিকশার যাত্রীও অনেক কমে গেছে। ফলে সকলেই ক্ষুব্ধ। তাই পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলনে সব পরিবহনের শ্রমিক-মালিক সম্পৃক্ত হয়েছেন।