এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে ভাঙচুরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সোমবার (২১ আগস্ট) রাতে কর্মবিরতি ঘোষণার পরপরই হাসপাতালের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রয়েছেন সব ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে ব্যাহত হচ্ছে সেবা কার্যক্রম।
জানা যায়, সোমবার বিকালে হাসপাতালের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোগী মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের কথাকাটাকাটি হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ, রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সদের হেনস্তা করেন। এ সময় চিকিৎসকরা দৌড়ে পাশের ওয়ার্ডে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এরপর রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডের ভেতরে চিকিৎসক ও নার্সের কক্ষে ভাঙচুর চালান।
আরও পড়ুন: সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে হাড়ভাঙা রোগীর কিডনি অপসারণের অভিযোগ
ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মো. মোস্কাকিম বলেন, এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। রোগীর স্বজনরা মৃত্যু মেনে নিতে পারে না। তারা ডাক্তারদের উপর হামলা ও হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। এভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে বৈঠক করে অনির্দিষ্টাকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. রাকিব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত মজুমদার সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, মারা যাওয়া রোগীর স্বজনরা দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্রমাগত ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান এবং শারিরীক হেনস্তা করার চেষ্টা করে। এরপর হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনা প্রমাণ করে হাসপাতালে চিকিৎসকদের কোনো সুস্থ কর্মপরিবেশ নেই।
এ অবস্থায় হাসপাতালের ইন্টার্ন ডাক্তারদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, দোষীদের বিচারের দাবিতে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হলো।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হেনস্তা ও ভাঙচুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে মারা যাওয়া রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক ভূঁঞা বলেন, একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনার প্রেক্ষিতে ইন্টার্ন চিকিৎকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
চিকিৎসকদের নিরাপত্তায়ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।