ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং মধ্যরাত বা মঙ্গলবার ভোরে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
সোমবার সর্বশেষ আবহাওয়া কার্যালয়ের বুলেটিনে এ কথা বলা হয়েছে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, ‘পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম অংশ এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নোঙর করে রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ লোকজনকে সরিয়ে নিতে সাত হাজারেরও বেশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে।
অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করেছে চট্টগ্রাম ও অন্যান্য পার্বত্য জেলায় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া উপকূলীয় সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার জেলার নিচু এলাকা এবং তাদের উপকূলবর্তী দ্বীপ ও চর এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, পাঁচ থেকে আট ফুট উচ্চতায় বাতাসসহ জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হবে।
দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের ইউএনবি সংবাদদাতারা সোমবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং জলোচ্ছ্বাসের কথা জানিয়েছেন।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপৎসংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ছয় নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে সিত্রাং কেন্দ্রীভূত হয়।
উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ তিনটি অদূরবর্তী দ্বীপসমূহ সাত নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া এসব জেলার নদীবন্দরকে তিন নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তিনটি উপকূলীয় দ্বীপও ছয় নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ায় ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর কারণে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।