বাংলাদেশ
বাংলাদেশের জনগণের সামগ্রিক কল্যাণের প্রতি ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ: নয়াদিল্লি
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছে, ভারত সেটি লক্ষ করেছে।
‘ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতাসহ সামগ্রিক কল্যাণের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’
এদিকে, আজ রায় ঘোষণার পর আরও একবার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।
সেখানে বলা হয়, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।
দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব বলেও বিজ্ঞিপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
৪১ দিন আগে
হাসিনা ও কামালকে হস্তান্তরে ভারতকে চিঠি পাঠানো হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত পাঠানোর চিঠি এখানে ভারতের মিশনে অথবা দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, এর আগেও আমরা চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। আজ রায় হয়ে গেছে, আমাদের তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত আনতে হবে।
এর আগেও বাংলাদেশের চিঠির জবাব দেয়নি ভারত। এ ছাড়া এই আইনে নানা ফাঁক রয়েছে—এই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা চিঠি দেব। আইনি ফাঁক যদি থাকে, তবে সেটা আইনবিদরা দেখবেন।
প্রচলিত আইনে ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনি বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না। আইনের মানুষরা এটি নিয়ে বলতে পারবেন।
ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেয়, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমি অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কোনো মন্তব্য করব না।
সোমবার দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণহত্যার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি এই মামলার অন্য আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে পেয়েছিলেন তিনি।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ, নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং ৩০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই পাঁচ অভিযোগ হলো— উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।
৪১ দিন আগে
হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায়: অন্তর্বর্তী সরকার
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের পর বিবৃতি দিয়েছে অন্তবর্তী সরকার।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।
এতে বলা হয়েছে, রায়-পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায়কে ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। তবে সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যে কোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
সোমবার দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণহত্যার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পাশাপাশি এই মামলার অন্য আসামি হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জবানবন্দিতে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে পেয়েছিলেন তিনি।
রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেয়ায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ, নিরস্ত্র দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং ৩০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছিল।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই পাঁচ অভিযোগ হলো— উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।
৪২ দিন আগে
শেখ হাসিনার বিচারের রায়ে আমি বিস্মিত নই, সন্তুষ্ট: আইন উপদেষ্টা
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিচারের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, এই রায়ে আমি বিস্মিত নই। একই সঙ্গে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে প্রত্যার্পণের জন্য চিঠি দেওয়া হবে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন, আজকে বাংলাদেশের মাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা ঘটেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে শত শত মানুষের মৃত্যু, হাজার হাজার মানুষের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা, অঙ্গহানির ঘটনা, বিকলাঙ্গ হওয়ার ঘটনার জন্য যে নৃশংস খুনী দায়ী ছিল, আজকে সেই শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। একই সঙ্গে তার প্রধান সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আজকে জুলাই গণভুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন। আজকে আমার বিশেষ করে মনে পড়ছে যারা জুলাই গণআন্দোলনকালে প্রাণ হারিয়ে ছিলেন আবু সাঈদের কথা; মুগ্ধ, ওয়াসিম, ইয়ামিন, আনাসসহ সবার কথা মনে পড়ছে। মনে হচ্ছে আজকে তাদের বিদেহী আত্মা হয়তো একটু শান্তি পাবে। আজকে তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের কথা মনে পড়ছে, হয়তো এই রায়ের মধ্যে দিয়ে তারা সামান্য হলেও সান্ত্বনা পাবেন।
উপদেষ্টা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট, কিন্তু আমি বিস্মিত নই। কারণ শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে জোরালো, বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলেই তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।
তিনি বলেন, আমি আজকে আরেকটা কথা বলতে চাই, সেটা হচ্ছে— আমরা শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যার্পণের জন্য ভারতের কাছে আবার চিঠি লিখব। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে— এটা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটা শত্রুতা। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় আচরণ। আজকে একটা বিচার হয়েছে। আমরা যতদিন আছি, বিচারকার্য পূর্ণ বেগে চলবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আমি এই বিচারের জন্য বিচার-সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, বিশেষ করে আমাদের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল, তার সহযোগীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। যারা সাক্ষী দিয়েছেন, তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা যতদিন আছি, বিচারকার্য পূর্ণ উদ্যমে চলবে এবং আমরা আশা করি, আগামীতে যে-ই সরকারে নির্বাচিত হবে, এই বিচারের গুরুদায়িত্ব থেকে কোনো অবস্থাতেই যেন তারা পিছপা না হয়।
৪২ দিন আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড, মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে শেখ হাসিনা ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। একই অপরাধের মামলায় মামলার রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে ৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার রায় পড়া শুর হয়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্যান্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, পলাতক আসামিদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলাটি (মিসকেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মামলায় আসামি ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজস্বাক্ষী) হয়েছেন। দোষ স্বীকার করে ঘটনার বিবরণ দিতে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ হওয়ার আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১২ মে চিফ প্রসিকিউশন কার্যালয়ে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। আর ১ জুন প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে। ওই অভিযোগে শেখ হাসিনাকে জুলাই-আগস্টে নৃশংস ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ছিল: গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এরপর তিনি হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের দমন করার নির্দেশ দেন। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ।
৪২ দিন আগে
এবারের নির্বাচন দেশ রক্ষার নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
আগামী নির্বাচন ও গণভোটে শতভাগ সততা, নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের নির্বাচন গতানুগতিক কোনো নির্বাচন নয়; বরং এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়নকৃত ৫০ জেলা প্রশাসকসহ ৬৪ জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনকে শুধু পাঁচ বছরের সরকার গঠনের একটি নির্বাচন নয়; বরং গণভোট যুক্ত হওয়ায় এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি নির্বাচন। জাতি বহু প্রহসনের নির্বাচন দেখেছে, সেই স্মৃতি ছাপিয়ে যেতে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন; এই নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণতা দেওয়ার নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির জন্য নির্ধারিত হবে শতাব্দীর গতিপথ।’
এই নির্বাচনে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নবজন্ম লাভ করবে এবং জেলা প্রশাসকরা থাকবেন ধাত্রীর ভূমিকায়।’
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধান তিনি বলেন, ‘আপনাদের যা যা জানা প্রয়োজন, সব জেনে নেবেন। নির্বাচনকে একইসঙ্গে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে।’
৪২ দিন আগে
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় পড়া শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় পড়া শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় পড়া শুর হয়।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন। একইসঙ্গে ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় বড় স্ক্রিনে রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া প্রচার করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজেও।
মামলার অন্য দুই আসামি হলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে।
জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলাটি (মিসকেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মামলায় আসামি ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজস্বাক্ষী) হয়েছেন। দোষ স্বীকার করে ঘটনার বিবরণ দিতে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ হওয়ার আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১২ মে চিফ প্রসিকিউশন কার্যালয়ে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। আর ১ জুন প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে। ওই অভিযোগে শেখ হাসিনাকে জুলাই-আগস্টে নৃশংস ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো: গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। এরপর তিনি হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের দমন করার নির্দেশ দেন। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি মামলা করা হয়েছে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম রায়।
৪২ দিন আগে
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লালদিয়ার দায়িত্বে থাকবে বিদেশিরা: আশিক মাহমুদ
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ও পোর্ট বিষয়ক পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে চলে যাচ্ছে, এমন ধারণা ভুল। বিদেশি অপারেটররা শুধু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে, মালিকানা থাকবে বাংলাদেশের কাছেই।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, ‘বন্দরের মালিকানা বাংলাদেশের কাছেই থাকছে। লালদিয়া চরে নিজস্ব অর্থায়নে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস বিশ্বমানের একটি নতুন টার্মিনাল নকশা ও নির্মাণ করবে। নির্মাণকাল তিন বছর। এরপর একটি নির্দিষ্ট সময় তারা অপারেট করবে। সময় শেষে সব আমাদের বুঝিয়ে দেবে। মনে করুন, গাড়িটা আমাদের, তারা শুধু ড্রাইভার। তাহলে গাড়িটা কি তার হয়ে গেলো?’
গ্লোবাল অপারেটরের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে আশিক বলেন, বাংলাদেশের বন্দরের প্রধান সমস্যা দুর্নীতি ও দীর্ঘ ওয়েটিং টাইম। প্রতিযোগী দেশগুলো, বিশেষ করে ভিয়েতনাম—গ্লোবাল অপারেটর দিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর পরিচালনা চালু করে কাই মেপ বন্দরকে বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ৭ম স্থানে তুলেছে।
‘আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে ৪০৫টি বন্দরের মধ্যে ৩৩৪তম স্থানে। তাই এমন অপারেটর দরকার যারা প্রযুক্তি, দক্ষতা ও প্রক্রিয়াগত উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত ফল দিতে পারবে,’ তিনি বলেন।
আশিক আরও জানান, দেশের তরুণ জনশক্তি এপিএম-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে ভবিষ্যতে দেশ-বিদেশে বন্দর পরিচালনায় নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে। ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার, আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত বন্দর পাবার আশা করতে পারি,’ তিনি যোগ করেন।
এপিএম টার্মিনালস এপি মোলার-মেয়ার্স্ক গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যারা বিশ্বের শীর্ষ ২০টির মধ্যে ১০টি বন্দর পরিচালনা করছে। বর্তমানে ৩৩টি দেশে ৬০টির বেশি টার্মিনাল তারা অপারেট করে।
আশিক জানান, লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল একটি পূর্ণাঙ্গ পিপিপি প্রকল্প, যার প্রধান দিকগুলো হলো:
• সম্পূর্ণ বেসরকারি বিনিয়োগ: সাইনিং মানি ২৫০ কোটি টাকা এবং নির্মাণে মোট প্রায় ৬,৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এপিএম। সরকারি অর্থায়ন বা গ্যারান্টি নেই।
• ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি: শর্ত মেনে চললে মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
• রাজস্ব কাঠামো: অপারেটর যত কনটেইনার হ্যান্ডেল করবে, প্রতিটির জন্য সরকার নির্দিষ্ট ফি পাবে। ভলিউম কম হলেও ন্যূনতম একটি নির্ধারিত ভলিউমের ভিত্তিতে ফি প্রদান করতে হবে।
• নিয়ন্ত্রক সংস্থা: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পুরো প্রক্রিয়ার রেগুলেটর হিসেবে থাকবে।
তিনি বলেন, ভারতের মুম্বাই পোর্টে ২০১৮ সালে ৬০ বছর, চীনের সাংহাইয়ে ৫০ বছর এবং ভিয়েতনামের কাই মেপ বন্দরে ৫০ বছরের পিপিপি চুক্তি হয়েছে। সেই তুলনায় লালদিয়ার ৩০ বছর মেয়াদকে মাঝারি বলা যায়।
চুক্তির পূর্ণাঙ্গ দলিল প্রকাশ না করার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী পিপিপি কাঠামোর চুক্তিপত্র আইনগত কারণে প্রকাশ করা হয় না।
“চুক্তির বাণিজ্যিক ও অপারেশনাল তথ্যগুলো গোপনীয়তার শর্তে সুরক্ষিত। বিশ্বব্যাংক ও এডিবি-ও সম্পূর্ণ দলিল নয়, বরং সারাংশ প্রকাশের পরামর্শ দেয়,” তিনি বলেন।
আশিক বলেন, জনগণের অবগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ—যেমন মালিকানা, আয় কাঠামো—ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।
জি-টু-জি পদ্ধতিতে টেন্ডার, প্রাকযোগ্যতা যাচাই, টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল মূল্যায়ন এবং ডিউ ডিলিজেন্সের মাধ্যমে অপারেটর নির্বাচন করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, আইনজীবী ও কনসালট্যান্ট নিয়োগ করা হয়েছে এবং আন্তমন্ত্রণালয় টেন্ডার কমিটি কাজ করেছে।
শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর ইস্যুর তুলনায় তিনি বলেন, লালদিয়া প্রকল্পে কোনো ঋণ নেওয়া হয়নি—এটি সম্পূর্ণ বেসরকারি বিনিয়োগ।
“হাম্বানটোটা চীনা ঋণে নির্মিত এবং ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে শ্রীলঙ্কা নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়। লালদিয়ায় মালিকানা রাষ্ট্রের থাকবে, এবং অর্থনৈতিক কাঠামো ঝুঁকিমুক্ত রাখতে রিস্ক শেয়ারিং, ট্রাফিক স্টাডি, কারেন্সি রিস্ক এবং স্টেপ-ইন রাইট নিশ্চিত করা হয়েছে।”
অপারেটর ব্যর্থ হলে বা চুক্তি ভঙ্গ করলে পারফরম্যান্স ভিত্তিক KPI, পেনাল্টি, স্টেপ-ইন রাইট, টার্মিনেশন ও হ্যান্ড-ব্যাক প্রভিশনের মাধ্যমে সরকার প্রয়োজনীয় সময়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে তিনি বলেন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ সব নিরাপত্তা সংস্থার প্রটোকল অপরিবর্তিত থাকবে।
ডেটা লোকালাইজেশন, সাইবার সিকিউরিটি, ব্যাকগ্রাউন্ড স্ক্রিনিং ও অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সরকারের অনুমোদিত স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী পরিচালিত হবে।
সব মিলিয়ে দেশের যা লাভ
• বছরে অতিরিক্ত ৮ লাখ TEU ধারণক্ষমতা যুক্ত হবে—বর্তমান সক্ষমতার তুলনায় প্রায় ৪৪% বেশি।
• আমদানি-রপ্তানি দ্রুত হবে, খরচ কমবে।
• এখনকার তুলনায় দ্বিগুণ বড় কনটেইনার জাহাজ ভিড়তে পারবে।
• দূরবর্তী দেশের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ যোগাযোগ সম্ভব হবে।
• ৫০০–৭০০ জনের সরাসরি, এবং আরও কয়েক হাজার পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
• স্থানীয় প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপকরা বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ পাবেন।
• ডিজিটাল অপারেশন সিস্টেম ও আধুনিক লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনা চালু হবে।
• লালদিয়া হবে দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব গ্রিন পোর্ট।
৪২ দিন আগে
শেখ হাসিনার রায় ঘিরে ট্রাইব্যুনালে সেনা মোতায়েন চেয়ে চিঠি
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আবারও চিঠি দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে সেনাসদরে এই চিঠি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
সুপ্রিমকোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ মুয়াজ্জেম হোছাইন জানিয়েছেন, গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্যকে কেন্দ্র করেও সেনা সদস্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় এবার সোমবার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা সদস্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, এই মামলায় রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার সেনা মোতায়েন করতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে। সেই অনুযায়ী সেনাও মোতায়েন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট ও ট্রাইব্যুনালে।
এদিকে, এই রায়কে ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে সতর্ক রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নাশকতা প্রতিরোধে রাজধানীতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।
৪২ দিন আগে
ট্রাইব্যুনাল রায় যা-ই দিক, তা কার্যকর হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান মামলার রায় প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল কী রায় দেয় তা তো জানি না, তবে আগামীকাল সোমবার ট্রাইব্যুনাল রায় যা-ই দিক, তা কার্যকর হবে এবং জনগণ তা মেনে নেবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পুরোপুরি প্রস্তুত।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জেলা পুলিশ লাইন্সে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো বা খুবই খারাপ তা বলবো না, এখন যে পরিস্থিতি আছে তা মোটামুটি সন্তোষজনক। দেশ স্বাধীনের পর থেকে ৫৪ বছরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব ভালো—তা কেউ কোনোদিন বলেনি। দুই-চার দিন ধরে দুয়েকটা জায়গায় ঝামেলা হচ্ছে, তাও সকলের সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর করতে মাঠ প্রশাসনকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এবার নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশা করি।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া শুধু প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে না। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, সর্বোপরি জনগণের কার্যক্রমের ওপরও নির্ভর করে। জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে কেউ তা থামাতে পারবে না।
বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনি পোস্টার হচ্ছে, কিছু দল প্রার্থী ঘোষণা করেছে, যা ভালো দিক বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
৪৩ দিন আগে