বাংলাদেশ
সরকারকে তিন ভাগে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে ঐকমত্য কমিশন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে রূপরেখা বা সুপারিশ জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে তিনটি ভাগ রয়েছে। পৃথক তিনটি ভাগে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করবে সরকার।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের তিনটি ভাগের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, যেসব বিষয় সংবিধান-সংশ্লিষ্ট নয়, তা সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে এবং সুপারিশের অনেক বিষয় আছে যা অফিস আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের কোনো মতভিন্নতা নেই। তাই এ দুটি বিষয় অধ্যাদেশ এবং অফিস আদেশের মাধ্যমে অবিলম্বে বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করেছে কমিশন।
এ সময় কোনো বিষয়গুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে এবং কোন বিষয়গুলো অফিস আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাবে, তা সুনির্দিষ্ট করে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সংবিধান-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে আইনি ভিত্তি প্রদান এবং বাস্তবায়নের পথ নির্দেশ করার জন্য সংবিধান সংশ্লিষ্ট ৪৮টি বিষয়ের ব্যাপারে দুটি বিকল্প প্রস্তাব সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
প্রস্তাব দুটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংশোধনের বিষয়গুলো কার্যকর করার জন্য ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ জারি করবে। আদেশ এবং এর তফসিলে উল্লিখিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসমূহ গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। আদেশ জারির পর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে, যা সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। সেখানে একটি প্রস্তাবে জাতীয় সংসদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পাশাপাশি একইসঙ্গে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে।
একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদে সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া বিল গণভোটে উপস্থাপন করা হবে। গণভোটে অনুমোদন পাওয়া সংবিধান সংস্কার বিল পরিষদের সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হবে এবং পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে।
অন্য প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে এবং সংস্কার কার্যক্রম শেষ হলে পরিষদের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
এ সময় কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া, সফর রাজ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
৬১ দিন আগে
প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে জনআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী পদক্ষেপ নেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টা
প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে সরকার জনআকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী কোনো পদক্ষেপ নেবে না বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সরকার জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে একটি বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়ানুগ ও ইনসাফভিত্তিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ নতুন অভিযাত্রায় সরকার গণমানুষের আকাঙ্ক্ষাকে মাথায় রেখেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কোনো ইস্যুকে ঘিরে সমাজে বিশৃঙ্খলা কিংবা জনরোষের সৃষ্টি হয়— এমন কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, সরকারের নীতি ও পলিসিকে বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। এ মন্ত্রণালয়ের যেকোনো প্রদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে জনস্বার্থ ও গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ক্লাসের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের পাশাপাশি মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত স্নাতক ডিগ্রিধারীদেরও সমান সুযোগ রয়েছে।
এর আগে দুই উপদেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার প্রসার, শিক্ষক নিয়োগ প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে ধর্ম উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
৬১ দিন আগে
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৭৪ বাংলাদশি
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৭৪ জন বাংলাদেশি।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরানো হয়। তারা অনিয়মিতভাবে লিবিয়ায় অবস্থান করছিলেন।
প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশে মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন। তাদের অনেকে লিবিয়াতে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশি নাগরিকদের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের এই দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে বিনিময় করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের অনুরোধ জানানো হয়।
প্রত্যাবাসনকৃত প্রত্যেককে পথখরচ, কিছু খাদ্যসামগ্রী, প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনে অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা।
লিবিয়ায় বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে।
৬১ দিন আগে
নির্বাচনে ১৫০ থেকে ২০০ জনের পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ: মিলার
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্ধারিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের একটি বড় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইইউ, যা ২০০৮ সালের পর প্রথম এমন পূর্ণাঙ্গ মিশন হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ তথ্য জানান।
মিলার বলেন, ইইউ পর্যবেক্ষক দল এখনও চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করা হয়নি, তবে এটি ১৫০ থেকে ২০০ সদস্যের মধ্যে থাকতে পারে। কিছু প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে এবং অন্যরা ভোটের সপ্তাহখানেক আগে যোগ দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের পর এই প্রথমবারের মতো ইইউ বাংলাদেশে এ ধরনের পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে।’ একই সঙ্গে ভোট চলাকালে স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগেও সহায়তা করবে ইইউ।
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে উভয় পক্ষ সুশাসন ও সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচনি প্রস্তুতি, বিচার বিভাগীয় ও শ্রম সংস্কার, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
জুলাইয়ের জাতীয় সনদের প্রশংসা করে এটিকে একটি ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ নথি হিসেবে বর্ণনা করে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, এটি (বাংলাদেশে) গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে সুগম করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদারে সম্প্রতি অনুমোদিত শ্রম আইন সংস্কার ও উদ্যোগের প্রশংসা করে এগুলোকে ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্য’ বলেও তিনি অভিহিত করেন।
ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টায় ইইউ’র অব্যাহত সমর্থনের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো সবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ সেই সঙ্গে আসন্ন নির্বাচনকে ‘দেশের সুনাম পুনর্বিন্যাসের সুযোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়া যেন নির্বিঘ্ন হয়, সে লক্ষ্যে ইইউ বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
বৈঠকে উভয় পক্ষ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির সম্ভাবনা এবং বিমান চলাচল ও জাহাজ চলাচলে নতুন সম্ভাবনার সন্ধানসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। মানবপাচার এবং অবৈধ অভিবাসন রোধে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়েও তারা সহমত পোষণ করে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনালের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ গ্লোবাল শিপিং জায়ান্ট এপি মোলার-মায়ের্সকের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মিলার জানান, কোম্পানি লালদিয়াকে এই অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় টার্মিনালগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে।
এ ছাড়াও নির্বাচনি পরিবেশ, প্রার্থীদের যোগ্যতা এবং ভোটের আগে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার বিষয়ে উভয় পক্ষ আলোচনা করে।
৬১ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচনে বেশি নিয়োজিত থাকবে আনসার সদস্যরা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সবচেয়ে বেশি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর ) সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনে আনসারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এই ১৩ জনের মধ্যে তিন জন থাকবে অস্ত্রসহ আর বাকি ১০ জন থাকবে অস্ত্র ছাড়া।’
তিনি আরও বলেন, অস্ত্রবিহীন ১০ জনের মধ্যে ৬ জন থাকবেন পুরুষ আর ৪ জন থাকবেন মহিলা। তাছাড়া এবারই প্রথম প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে অস্ত্রসহ একজন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।’
উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে মোট নয়দিন আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। আগামী নির্বাচনে আনসার সদস্যরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি পর্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের পরোয়া না করে তারা নিষ্ঠা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের সঙ্গে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকেন।
তার মতে, বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের কর্মজীবনের মানোন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করা নৈতিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারের অংশ। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসন বিশিষ্ট ৪টি বড় বাস, ২৪ আসন বিশিষ্ট ২টি মিনি বাস এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ এ বাহিনীর সদস্যদের ছুটি, বিনোদন ভ্রমণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই নানা ধরনের যাতায়াতজনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাদের এই ভোগান্তি লাঘব ও সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই আজকের এই ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
এ সময় ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসটি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সকল সদস্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
বাইরে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান, প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। গত পরশুদিনও আটটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এরকম উদ্ধার হতেই থাকবে এবং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে অস্ত্র উদ্ধার আরো বাড়তে থাকবে এবং একসময় দেখবেন যে বাহিরে আর কোন অস্ত্র বা হাতিয়ার নেই।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ ও বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৬২ দিন আগে
বিটিআরসির ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার ১২ আসমির জামিন
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনার (বিটিআরসি) মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার ১২ আসমির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান উভয় পক্ষের শুনানি শেষে প্রত্যেকের পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন— আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরামের (আইওএফ) নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ মঈনুল হক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আব্দুল হান্নান, আশিক আহমেদ, গাজী মো. সালাহউদ্দিন, হাফিজুর রহমান, খালিদ ইসলাম, মো. মাহতাবুল আমিন, সোহেল শরীফ, তাজিন আলম, নাদির শাহ কোরেশী, মীর নাসির হোসেন ও সিসিও মুসফিক মনজুর।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মহসিন মিয়ার মাধ্যমে গোপনীয়তা রক্ষা করে বেলা আড়াইটার দিকে আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিটিআরসির পক্ষে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম রাজধানীর গুলশান থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তার ছেলে আহমেদ সোহেল ফসিহুর রহমান এবং সায়ান এফ রহমানসহ ২৭ জনের নামে এ মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আইওএফ গঠনের পর প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স এবং চুক্তির শর্ত ও বিশ্বাস ভঙ্গ করাসহ প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আত্মসাৎ করে আসামিরা ।
নেটওয়ার্ক উন্নয়নে আদায় করা মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাতে জড়িত ছিলেন আইওএফ কার্যনির্বাহী কমিটির এসব সদস্য।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক কল পরিচালনায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক গেটওয়ে খাত কুক্ষিগত করেন সালমান এফ রহমান। তার প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে গড়ে ওঠে আইওএফ নামের এ সিন্ডিকেট।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সালমান এফ রহমানের নির্দেশনায় প্রতি মাসে আইজিডব্লিউ অপারেটরদের বিপুল অঙ্কের অর্থ জমা দিতে হতো তার মালিকানাধীন বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেডে। অথচ এ প্রতিষ্ঠানটির নামে আইজিডব্লিউ পরিচালনার কোনো লাইসেন্স নেই। মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের নামে অর্থ সংগ্রহ করা হলেও এর প্রকৃত ব্যবহার সম্পর্কে অবগত নন খোদ আইজিডব্লিউ অপারেটররাই।
সালমান এফ রহমান নেতৃত্ব এজাহারনামীয় আসামিরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে ৫৬৮ কোটি আত্মসাত করে।
৬২ দিন আগে
এক লাখ কর্মী নিয়োগ: প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রগতি জানাল জাপানের প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রগতি জানাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাপানের ‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস’ (এনবিসিসি)-এর প্রতিনিধিদল।
রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস’ হলো ৬৫টিরও বেশি কোম্পানির একটি জাপানি ব্যবসায়িক ফেডারেশন, যারা সম্প্রতি দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুবিধার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওআই) স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির লক্ষ্য জাপানে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন এবং কর্মসংস্থানের জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা, যার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (এসএসডব্লিউও)-এর মতো কর্মসূচির আওতায় এক লাখের বেশি কর্মী নিয়োগ করা হবে।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। পরবর্তীতে ২০২৭ সালে ছয় হাজার ও ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হবে।
এর মধ্যে নির্মাণ খাত, সেবা খাত, এভিয়েশন খাত, গার্মেন্টস ও কৃষিতে সবচেয়ে বেশি কর্মী প্রয়োজন বলে জানান তারা। পাশাপাশি, আগামী দিনে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা বাড়বে বলেও তারা জানান।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সম্ভাব্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোনো ঘাটতি রয়েছে কিনা, তা জানতে চান।
প্রতিনিধিদলের প্রধান, এনবিসিসি-এর চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, ‘আমি গত মার্চ মাসে ট্রেনিং সেন্টারদুটি পরিদর্শন করেছিলাম। এবার এসে অবাক হয়েছি। সাত মাসের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমরা আশাবাদী, আগামী বছরই দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারব।’
তবে প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতায় উন্নতি করা গেলে আরও ভালো হতে পারে বলে জানান তিনি।
‘ভাষাগত দক্ষতা অর্জনই বড় চ্যালেঞ্জ’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ জন্য ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। জাপান থেকে শিক্ষকরা অনলাইনে ক্লাস নেবেন। পাশাপাশি, জাপান থেকে প্রশিক্ষকদের এখানে নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় কিনা, সেটিও বিবেচনা করা যেতে পারে।’
এ সময় বাংলাদেশের নারীদের পারদর্শিতা ও কঠোর পরিশ্রমের কথাও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কেয়ারগিভিং সেক্টরে বাংলাদেশের নারীরা অনন্য। তারা অত্যন্ত যত্নশীল। ভাষাগত দক্ষতা ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ পেলে বাংলাদেশের মেয়েরা জাপানের কেয়ারগিভিং সেক্টরে অনন্য ভূমিকা রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কিছুটা কঠিন মনে হলেও বাংলাদেশের মেয়েদের একবার শিখিয়ে দিলে তারা নিজেরাই অন্যদের শেখাতে পারবে। একবার যাওয়া শুরু হলে অন্যরাও উৎসাহ পাবে।’
এনবিসিসি প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে ৪ লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে। তারা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নার্স নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করবেন।
বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সরকার জাপানে কর্মী নিয়োগে অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করবে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রণালয় থেকে জাপানে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনে একটি নির্দিষ্ট সেল গঠন করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা।
৬২ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশনের শেষ বৈঠক সম্পন্ন, সুপারিশ পেশ আগামীকাল
সরকারের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ দিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সুপারিশ হস্তান্তর করা হবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সমাপনী বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের পর থেকে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান পর্যন্ত সমস্ত ডকুমেন্ট, আলোচনার ভিডিও, অডিও, ছবি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এগুলো মহামূল্যবান সম্পদ। জাতি হিসেবে আমরা কোন প্রেক্ষাপটে কী প্রক্রিয়ায় কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছালাম, তা সকলের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং উন্মুক্ত থাকা দরকার। যত বৈঠক হয়েছে সেগুলোর ছবি ও ভিডিও, যত চিঠি চালাচালি হয়েছে— সমস্ত ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হবে এবং ক্যাটাগরি করে রাখতে হবে। টেলিভিশনে যেসব আলোচনা লাইভ প্রচার হয়েছে, সেগুলো খণ্ড খণ্ড আকারে সংরক্ষণ করতে হবে।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এগুলো হবে ইতিহাসের চিরজীবন্ত দলিল। যারা গবেষণা করতে চায়, তারা যেন এগুলো দেখে কাজে লাগাতে পারে। প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই ডকুমেন্ট থেকে যাবে। এই দলিলগুলোই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে।’
এ সময় রাজনৈতিক দল, ঐকমত্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, গবেষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সমাপনী বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করার পাশাপাশি অন্য সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য কাজ করেছে উল্লেখ করে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি আইন বিশেষজ্ঞ, বিচারপতি, শিক্ষাবিদসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি মূল দায়িত্বের (বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন) একটি কাঠামোগত সংস্কার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান দায়িত্ব ছিল সংস্কারের একটি রূপরেখা তৈরি করা।’
‘মিল-অমিল সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা দৃশ্যমান ছিল। তারা বরাবরই আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। দিনের পর দিন অত্যন্ত ধৈর্য ও বিচক্ষণতার সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছেন।’
৬২ দিন আগে
শৃঙ্খলাভঙ্গ ও নির্দেশনা মানতে না চাওয়া পুলিশ সদস্যদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার হুঁশিয়ারি
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যাদের পেশাদারত্ব ও শৃঙ্খলা নেই, নির্দেশনা মানতে চায় না এবং যারা সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২৭ অক্টোর) ঢাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ‘হল অব প্রাইড’ সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ আয়োজিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সর্বমহলের প্রত্যাশা পূরণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পুলিশের কাঁধে। সবার প্রত্যাশা— বাংলাদেশ পুলিশ জাতীয় নির্বাচনে এমন এক মানদণ্ড স্থাপন করবে, যা শুধু দেশেই নয় বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশসহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনি মাঠে আপনারা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নন; আপনারা জনগণের নিরাপত্তা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও সংলাপ শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষাবলম্বন, বিশেষ সুবিধা প্রদান ও গ্রহণ এবং নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাবা যাবে না।
ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের পেশাদারত্ব, টিম স্পিরিট, শৃঙ্খলা ও মনোবল বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অধীনস্থদের মধ্যে যাদের পেশাদারত্ব ও শৃঙ্খলা নেই, কমান্ড মানতে চায় না এবং যারা সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জেলা পর্যায়ে ঘনঘন কোর কমিটির সভা আহ্বান করতে হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার, মিথ্যা মামলা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
তিনি বলেন, পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চকে আরও সক্রিয় করতে হবে এবং থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে হবে।
এ ছাড়া জেলার কেপিআইগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশসহ সবাইকে সতর্ক করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের ওপর আক্রমণ কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। এ ব্যাপারে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন। এ ছাড়া সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ পুলিশ অফিসারদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপারেরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপদেষ্টা বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপারদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।
৬২ দিন আগে
শাপলার বিকল্প না নিলে এনসিপিকে প্রতীক দেবে ইসি, চলতি সপ্তাহেই গণবিজ্ঞপ্তি
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তালিকা থেকে প্রতীক বেছে নিতে ব্যর্থ হলে নির্বাচন কমিশনই (ইসি) জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) উপযুক্ত প্রতীক বরাদ্দ করবে বলে জানিয়েছেন ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমদ। অন্য প্রতীক দিয়ে এই সপ্তাহেই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
ইসি সচিব বলেন, কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট। প্রতীক বরাদ্দের সময় নিবন্ধনযোগ্য রাজনৈতিক দলগুলোর তালিকা প্রকাশের সঙ্গে প্রতীকের বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হবে।
শাপলা প্রতীক সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি বলেন, কমিশন ইতোমধ্যেই তাদের অবস্থান জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বিকল্প প্রস্তাব কমিশনের কাছে আসেনি। এখনও কমিশনের আগের অবস্থানই আছে। ইসি স্বীয় বিবেচনায় প্রতীক দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি এ সপ্তাহে জারি করবে।
নির্বাচনী প্রস্তুতির অগ্রগতি
নির্বাচন প্রস্তুতি কতটা এগিয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “যদি শতকরা হিসেবে বলেন, তাহলে বলতে পারি আমরা এখন ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ প্রস্তুত। রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন এই সপ্তাহে সম্পন্ন হলে প্রস্তুতি শতভাগে পৌঁছাবে।”
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। তবে সপ্তাহের মধ্যেই তা সম্পন্ন হবে। এতে উদ্বেগের কিছু নেই, সময়মতো সব প্রস্তুতি শেষ করা সম্ভব হবে।”
ইসি সচিব জানান, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নিয়ে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২২টি দলকে প্রাথমিকভাবে যোগ্য হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নিবন্ধন সম্পন্ন হতে পারে। পর্যবেক্ষক সংস্থার ক্ষেত্রেও কাজ দ্রুত এগোচ্ছে।
জুলাই সনদের স্বীকৃতির জন্য গণভোট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমদ বলেন, গণভোট সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনো তথ্য আসেনি। যে বিষয়ে তথ্য নেই, সে বিষয়ে মন্তব্য করার সুযোগও নেই।
৬৩ দিন আগে