বাংলাদেশ
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে: আইন উপদেষ্টা
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
বিএনপির সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় যা বুঝেছি, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাননি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে— সেটাই বলেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছেন। আমরা তাদের বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের নিশ্চয়তা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন। জনপ্রশাসন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় ধরনের বদলির ব্যাপারটি তিনি নিজে দেখবেন।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়— এটা বলেনি। বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে। আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে, সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা পরিষদ ছোট হবে কিনা জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এ ধরনের কথা কোথাও আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনার বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে কিনা— এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপন হয়নি।’
দলীয় কেউ অন্তর্বর্তী সরকারে থাকলে সে বিষয়ে বিএনপির দৃষ্টিআকর্ষণের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা তো তারা আগেও বলেছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তিনি আরও নিবিড়ভাবে মনিটর করবেন।’
একজন উপদেষ্টা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন— এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করার মতো অবস্থানে নেই। আমি জনপ্রশাসনের দায়িত্বে নেই।’
তাছাড়া, জনপ্রশাসনের নিয়োগ-বদলি দলীয়ভাবে হয় না বলেও মনে করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সব দলই অভিযোগ করে। এক দল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে এই দলের লোক আছে। যেহেতু সব দলই অভিযোগ করে অন্য দলের লোক আছে, তার মানে হচ্ছে আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি।’
৬৮ দিন আগে
১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে হাজির হওয়া অভিযুক্ত কর্মকর্তারা জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন— র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে); র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।
ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকীকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সকালে অভিযুক্তরা তিনটি মামলায় আদালতে হাজির হন। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, তিনটি মামলায় মোট ৩৪ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রয়েছেন।
প্রথম মামলায় ১৭ জন, দ্বিতীয় মামলায় ১৩ জন এবং তৃতীয় মামলায় চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। হাসিনাকে দুটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। মোট অভিযুক্ত ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে হেফাজতে আছেন।
এই তিন মামলার মধ্যে দুটি হয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম, র্যাবের টিএফআই এবং সেনাবাহিনীর জেআইসি সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনায়।
অন্যটি জুলাই অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোর থেকেই ট্রাইব্যুনাল সংলগ্ন হাইকোর্টের মাজারগেট, মৎস্য ভবন, কাকরাইলসহ একাধিক স্থানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের লক্ষ্য করা গেছে।
এর আগে গত (৮ অক্টোবর) বুধবার আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত গুমের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এরপর গত ১১ অক্টোবর সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানানো হয়।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর আমলে নেওয়ার জন্য শুনানি শুরু হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ আজকের মধ্যে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
৬৮ দিন আগে
এক যুগে সড়কে ঝরেছে ১ লাখ ১৭ হাজার প্রাণ
দেশে গত ১২ বছরে ৬৭ হাজার ৮৯০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ২১ জন আহত হয়েছেন বলে তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
দুর্নীতি ও সরকারের ভুল নীতি সড়কে গণহত্যার জন্য দায়ী উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক বলেন, সড়ক পরিবহন খাতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও কতিপয় দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তার চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। এসময় ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, লাইসেন্সবিহীন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক নিয়োগ, সড়কে ত্রুটি, চালকদের মাদক নেওয়া, বেপরোয়া গতি, অযোগ্য চালকদের লাইসেন্স দেওয়া এবং লাইসেন্সবিহীন ও প্রশিক্ষণহীন চালকদের হাতে যানবাহন তুলে দেওয়া হয়।
যাত্রী কল্যাণের মহাসচিব জানান, এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের ২০১৪ সাল থেকে অন্তবর্তী সরকারের ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিগত এক যুগে দেশে ৬৭ হাজার ৮৯০টি সড়ক দুর্ঘটনায় এক লাখ ১৬ হাজার ৭২৬ জন নিহত ও এক লাখ ৬৫ হাজার ২১ জন আহত হয়েছেন। যাত্রী কল্যাণ সমিতি শুধু গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে এ তথ্য পেলেও দেশের হাসপাতালগুলোর চিত্র বলছে হতাহতের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। সাম্প্রতিক বছরের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৪৫ হাজার। এসব যুদ্ধে যে পরিমাণ লোক মারা গেছে বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
মোজাম্মেল হক জানান, ওবায়দুল কাদের এক যুগের বেশি সময় ধরে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী থাকলেও এ খাতে বিশৃঙ্খলা থামাতে তার কৌশলগত পরিকল্পনায় চরমভাবে গলদ ছিল। এ কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি চরমভাবে বেড়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পরও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের নীতি ও কৌশল পরিবর্তন না হওয়ায় দুর্ঘটনার লাঘাম টানা যাচ্ছে না। ফলে সড়কে গণহত্যা বন্ধ, যানজট ও দুর্ঘটনা কমানো এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিত করা না গেলে এ খাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিবহন খাত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে দেশের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি আরও বাড়বে।
অটোরিকশার কারণে ঢাকা অচল হয়ে যাবে জানিয়ে যাত্রী কল্যাণের মহাসচিব বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার উন্নত গণপরিবহন নামানোর পরিবর্তে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন দিয়ে রাস্তায় নামানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় অজ্ঞতা, অনভিজ্ঞতা ও নানাবিধ গলদ থাকায় এ কার্যক্রম শুরু করা হলে এক বছরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহর অটোরিকশার কারণে অচল হয়ে যাবে। তাই এমন সিদ্ধান্ত থেকে ফেরত এসে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সরকারি উদ্যোগে ম্যাস ট্রানজিটের (পাতাল মেট্রোরেল) ব্যবস্থা করতে হবে।
তার পরামর্শ হলো, সেখানে সরকারি উদ্যোগে ডিজিটাল লেনদেনের ভিত্তিতে কমপক্ষে দুটি বাস র্যাপিড ট্রানজিট লেন চালু করলে উন্নত দেশের আদলে পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরত আসবে। যাতায়াতের গতি বাড়বে। সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমবে। মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি কমবে। দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে। না হলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের হাতের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি মিলবে না।
৬৮ দিন আগে
শাকসু নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আমলে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা গণতন্ত্র চর্চা, নেতৃত্ব বিকাশ ও অধিকার আদায়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এর ফলে প্রশাসনের স্বেচ্ছাচার বেড়েছে, শিক্ষার্থীদের সমস্যা উপেক্ষিত হয়েছে এবং ছাত্র রাজনীতি দখলদারত্বমূলক হয়ে উঠেছে।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা বহুবার শান্তিপূর্ণভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন একাধিকবার মৌখিক আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’
শিক্ষার্থীরা জানান, শাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য গত ১৯ অক্টোবর মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কোনো ঘোষণা দেয়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, ‘বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ২টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।’
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
৬৮ দিন আগে
ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তিগুলোর মাত্র একটি বাতিল হয়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের সঙ্গে দশ চুক্তি বাতিলের যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, ‘যে তালিকা একজন উপদেষ্টার ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, সেটা সঠিক নয়। এই তালিকার অধিকাংশ চুক্তি বাস্তবে নেই। একটি চুক্তি আছে অনেক পুরোনো। আর কয়েকটি চুক্তি আছে, যেগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে, ঠিক ওই নামে নেই।’
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দাবি করেছেন যে, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে করা ১০টি চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে ‘বাতিল ও বিবেচনাধীন চুক্তি/প্রকল্পগুলোর’ একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে একটা চুক্তিই বাতিল করেছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসই’র সঙ্গে টাগ বোট চুক্তি, এটা আমরা বাতিল করেছি। বিবেচনা করে দেখা গেছে যে এটি বাংলাদেশের জন্য খুব একটা লাভজনক নয়।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যখন কোনো চুক্তি সই হবে বা বাতিল হবে, তখন আমরা আপনাদের জানাব।
উপদেষ্টা জানান, ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেল সংযোগ প্রকল্প, অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ নামে কোনো প্রকল্প নেই। আশুগঞ্জ–আগরতলা করিডোর নামে নেই কিছু, যে নামে আছে তা হচ্ছে আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেন প্রকল্প, এটার একটা প্যাকেজ বাতিল হয়েছে। ফেনী নদী পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নামে কিছু নেই, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক আছে, সেটা বাতিল হয়নি।
কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন প্রকল্প বলে কিছু নেই উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন জানান, যেটা আছে সেটা একটা সমঝোতা স্মারক। এটি স্থগিত হয়নি। বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি নামেও কোনো চুক্তি নেই। যেটা আছে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য পরিবহণ, সেটা বাতিল হয়নি। ফারাক্কা বাঁধ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব, এরকম কিছু নেই। সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প নামে কোনো প্রকল্প নেই। পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি, এরকম কোনো চুক্তি হয়নি।
উপদেষ্টা জানান, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে। আদানি বিদ্যুৎ নিয়ে যেটা বলা হয়েছে সেটা মোটামুটি ঠিক আছে। এটা পুনর্বিবেচনার জন্য আলোচনা চলছে। গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর শেষ হবে। এটা নবায়নের জন্য আলোচনা হবে, যোগাযোগ চলছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। খুব যে অগ্রগতি, তা নয়।
এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে ঢাকার অনুরোধের আপডেট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে কোনো আপডেট নেই। আপডেট হলে আমরা জানাব।’
ত্রিপুরায় তিন বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ন্যায্য ও পূর্ণাঙ্গ বিচার প্রক্রিয়া প্রত্যাশা করে। ‘আমরা আশা করি, তারা (ভারতীয় কর্তৃপক্ষ) তা নিশ্চিত করবে।’
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায় এবং পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) সফরকে স্বাগত জানায়।
তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বার্থে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে চাই এবং সে দিকেই এগোচ্ছি।
৬৮ দিন আগে
নুরের ওপর হামলা: তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ল
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং গুরুতর আঘাতের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বেড়েছে। কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গত ৪ সেপ্টেম্বর গঠন করা তিন সদস্যের এ কমিশনের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আলী রেজা। কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এক মাস বা ৩০ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৯ অক্টোবর।
কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর আদেশ ২০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।
কমিশন গত ২৯ আগস্ট নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং গুরুতর আঘাতের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত এবং উল্লিখিত ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশও দেবে এই কমিশন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে এবং কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যে কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়ান দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার পর গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা দলটির নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করেন। তখন দলের সভাপতি নুরুল হক গুরুতর আহত হন। নুরের মাথায় আঘাত লাগে এবং নাকের হাড় ভেঙে যায়। প্রাথমিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এরপর তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে সম্প্রতি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন নুর।
৬৮ দিন আগে
গ্যাস চুরির অভিযোগে অনন্ত জলিলের কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন
দেড় কোটি টাকার ওপরে বকেয়া এবং গ্যাস চুরির অভিযোগে সাভারে অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন এজেআই গ্রুপের কারখানার দুটি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি।
বিল বকেয়া এবং মিটার টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে চুরির অভিযোগে গেল রোববার (১৯ অক্টোবর) হেমায়েতপুরের ওই কারখানার দুটি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং মিটার জব্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসনের ভিজিল্যান্স টিমের ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম রাসেল।
তিতাস কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কারখানাটির ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বকেয়া রয়েছে এবং মিটার টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস চুরির প্রমাণ পাওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ওই দিন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে শ্রমিকদের অবরোধের মুখে পড়েন তিতাস কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে এজেআই গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অনন্ত জলিল বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই কারখানা নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে।
তবে তিনি অনিয়মের দায় অস্বীকার করে বলেন, মাসে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা লাভ দেবে— এই শর্তে ৫ বছর মেয়াদে চলতি বছরের ১ মে মো. জুয়েল ইসলাম নামে একজনকে পলো কম্পোজিট নিট ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ডাইংয়ের সব সেকশন ইজারা দিয়েছিলাম। সে গ্যাস বিল বকেয়া রেখে এবং মিটার টেম্পারিং করে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। তার (জুয়েল) বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় মামলা দিয়েছি।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসনের সাভার আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এজেআই গ্রুপের কারখানায় তিনটি সংযোগ রয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল হলেও টেক্সটাইল চলত গ্যাসে। টেক্সটাইলের দুটি সংযোগের (সংকেত নম্বর-৩৩৮০০০৪০৪ ও ৮৩৮০০০৪০৪) বিপরীতে বকেয়া বিল রয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, আমরা বকেয়া আদায় করতে গিয়ে দেখি গ্যাস চুরি হচ্ছে। তাই মিটারগুলোও জব্দ করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী ‘চোরাই’ গ্যাসের মূল্য বাবদ জরিমানা ও বকেয়া বিল প্রদান সাপেক্ষে সংযোগ পুনরায় চালু করা হবে।
তবে তৈরি পোশাক কারখানার অপর সংযোগটি অন্তত জলিল ও তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা আফিয়া নুসরাত বর্ষার মালিকাধীন এবি গ্রুপের নামে। চাইনিজ একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়া ওই প্রতিষ্ঠানের গ্যাস বিল নিয়মিত আছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
৬৮ দিন আগে
এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ
আন্দোলনের মুখে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের হাউস রেন্ট এলাউন্স (বাড়িভাড়া ভাতা) বাড়িয়েছে সরকার। এটি চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।
ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দুই ধাপে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে ভাতা মূল বেতনের ৭.৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২,০০০ টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এতে মোট ভাতা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২,০০০ টাকা) হবে, যা ১ জুলাই ২০২৬ থেকে কার্যকর হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সরকারি বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই ভাতা বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মূল বেতনের ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) বাড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে বাড়িভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন শুরু করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা।
সরকারি আদেশ অনুযায়ী, বাড়তি ভাতা সংশ্লিষ্ট এমপিও নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নন-গভর্নমেন্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) মানবসম্পদ কাঠামো ও এমপিও নীতি ২০২১, মাদ্রাসা এমপিও নীতি ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এবং পেশাগত, ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও মাছ চাষ ডিপ্লোমা এমপিও নীতি ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, এই ভাতা বৃদ্ধির কারণে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোনো অতিরিক্ত পাওনা দাবির সুযোগ সৃষ্টি হবে না। সব আর্থিক বিধি-কানুন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
এ ছাড়াও, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে একটি সরকারি আদেশ (জিও) জারি করে চার কপি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নতুন এই আদেশের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পূর্বের সার্কুলার বাতিল করা হয়েছে।
৬৯ দিন আগে
‘তুমি না সরলে, আমি মাহীরের হব না’, জোবায়েদের বাঁচার আকুতি শুনে বর্ষা
গুরুতর আহত অবস্থায় নিহত জোবায়েদ শেষ মুহূর্তে সিঁড়িঘরে দাঁড়িয়ে থাকা বর্ষার কাছে তাকে রক্ষার আকুতি জানিয়েছিলেন।
কিন্তু বর্ষা তখন রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে থাকা জোবায়েদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহীরের হব না।’
এরপরই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ, জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এসএন নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মাহীর ও বর্ষার মধ্যে প্রায় দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে বর্ষা জোবায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন, যা মাহীর মেনে নিতে পারেননি।এ বিষয়ে বারবার ঝগড়ার পর বর্ষা মাহীরকে জোবায়েদকে হত্যার জন্য উসকে দেন, বলেন নজরুল ইসলাম।
মাহীর এরপর তার বন্ধু আইলানকে পরিকল্পনার কথা জানায়। পরে তারা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বউবাজার এলাকা থেকে ৫০০ টাকায় একটি সুইচ-গিয়ার ছুরি কেনে।
ঘটনার দিন বর্ষা মাহীরকে জানিয়ে দেন, জোবায়েদ কখন টিউশনের জন্য তার বাসায় আসবেন।জোবায়েদ ভবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে মাহীর তার মুখোমুখি হয়ে তর্কের একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে জোবায়েদের গলায় আঘাত করে হত্যা করেন।
ডিএমপি’র লালবাগ জোনের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা স্বীকার করেছেন, জোবায়েদের শেষ কথা ছিল, ‘আমাকে বাঁচাও।’
উত্তরে বর্ষা বলেন, ‘তুমি না সরলে, আমি মাহীরের হব না।’
সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, পল্টন ও বংশাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।গ্রেপ্তাররা হলেন, মাহীর রহমান (১৯), বারজিস শবনম বর্ষা (১৯) এবং ফারদিন আহমেদ আইলান (২০)।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুরান ঢাকার বংশাল থানাধীন নূর বক্স লেন এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত জোবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। সোমবার (২০ অক্টোবর) তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
৬৯ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি আজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিল শুনানি আজ। এই শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগে থেকেই মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দিন ধার্য রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে আজ (মঙ্গলবার) আবেদনগুলোর শুনানি হবে।
এর আগে, গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রিট খারিজ করেন। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এরই ধারাবাহিকতায় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয় এবং ২০১১ সালের ৩ জুলাই সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশিত হয়।
এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তন আনে।
সরকার পতনের পর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট প্রথম পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। অন্য আবেদনকারীরা হলেন— প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ (প্রয়াত), এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া, জাহরা রহমান।
পরবর্তীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (১৬ অক্টোবর), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (২৩ অক্টোবর) এবং নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথকভাবে একই ধরনের আবেদন জানান।
ফলে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক উদ্যোগ মিলিয়ে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের শুনানিতে রয়েছে।
২৭ আগস্ট শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ, যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে, তা কখন থেকে কার্যকর হবে সে প্রশ্নও রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, গেল দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে নানাভাবে। মানুষ গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেসব সিস্টেম ছিল— সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং মানুষ বিচার পায়নি। যার কারণে এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে প্রধান বিচারপতি হবেন, আর কে সরকার প্রধান হবেন। জনগণের এই ক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। এসব অবজ্ঞা করলেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়।
সে সময় তিনি ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন।
পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়। আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ মঙ্গলবার।
আইনজীবীদের মতে, এই শুনানির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিতে পারে। অনেকের প্রত্যাশা—আদালতের রায় দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও স্থিতিশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে।
৬৯ দিন আগে