বাংলাদেশ
রোমে এফএও সদরদপ্তরে প্রধান উপদেষ্টাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদরদপ্তরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা এফএও সদরদপ্তরে পৌঁছালে সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. কু দংইউ প্রধান ফটকে এসে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
এফএও সদরদপ্তরে ব্রাজিলের কৃষিবিজ্ঞানী ও লেখক জোসে গ্রাজিয়ানো দা সিলভার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: আইএফএডিকে সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার পর ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের (ডব্লিউএফএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি মূল বক্তব্য দেবেন।
৭৭ দিন আগে
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা
ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস বিল্ডিং নম্বর-৫৪'কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এই আদেশ জারি করা হলো। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গুমের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারিকৃত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে
মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত কর্মকর্তা এবং একজন এলপিআরে, অর্থাৎ অবসরোত্তর ছুটিতে ছিলেন। এছাড়া মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ নামের আরেকজন সেনা কর্মকর্তা অদ্যাবধি অনুপস্থিত রয়েছেন। তার কোনো সন্ধান এখনও কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) দায়ের করা মামলাগুলো নিয়েই মূলত আলোচনা হয়।
গত বুধবার আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত গুমের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ২৫ জন সেনাবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা। দুই মামলায়ই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক শুরু
২৮ আসামির মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে নির্যাতনের অভিযোগ এবং ১৩ জনের বিরুদ্ধে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল (জেআইসি)-এ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
পরোয়ানা জারির দিনই তা সংশ্লিষ্ট ১৩টি দপ্তরে পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর কর্মকর্তারা। তবে মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান জানান, পরোয়ানার কপি এখনো সেনাসদরে পৌঁছায়নি। তারপরও তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন এলপিআরে এবং ১৫ জন বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কর্মরত। ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ১৬ জনকে সেনাসদরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৯ অক্টোবরের মধ্যে সেনাসদরে হাজির হয়েছেন ১৫ জন। তারা পরিবার থেকে আলাদা অবস্থায় থাকছেন। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মাদ এখনও উপস্থিত নন।’
৭৭ দিন আগে
আইএফএডিকে সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলকে (আইএফএডি) বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাসহ নারী, কৃষক ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে যুক্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় রোববার (১২ অক্টোবর) ইতালির রোমে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের সাইডলাইনে আইএফএডি প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিওর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই প্রস্তাব দেন।
বৈঠকের এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের জন্য তিনি আইএফএডিকে উৎসাহিত করেন। এ ধরনের একটি তহবিল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে এবং তরুণ, কৃষক, নারী ও মৎস্যখাতের সঙ্গে জড়িতদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে বলেও মনে করেন তিনি।
বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণ শিল্প চালু করা, আম ও কাঁঠালের রপ্তানি বৃদ্ধি, জলবায়ু সহনশীল কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি এবং মহিষের দুধ থেকে মোজারেলা চিজসহ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে খামারিদের সহায়তা– এসব কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
এ সময় আইএফএডি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা। পাশাপপাশি কৃষি, সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা যাচাইয়ে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোরও আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় আইএফএডি প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে অংশীদার হতে এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহী।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ছয়টিরও বেশি কৃষি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে আইএফএডি।
বৈঠকে ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ, কোল্ড স্টোরেজ, গুদামজাতকরণ এবং আম-কাঁঠালের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফলের রপ্তানি সম্প্রসারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আম রপ্তানি শুরু করেছি, তবে পরিমাণ এখনো সীমিত। চীন বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণে আম ও কাঁঠাল আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং কীভাবে বাংলাদেশি নারী দুগ্ধশিল্পীরা ভেড়ার দুধ থেকে মোজারেলা চিজ উৎপাদন করছেন তা উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: কর্মী নিয়োগে সৌদি আরবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো চুক্তি সই
আইএফএডির সমর্থনের মাধ্যমে দেশে চিজ ও অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণের অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতির কারণে বেশিরভাগ জেলে এখনো অগভীর পানিতে মাছ ধরেন। আমরা এখনো গভীর সমুদ্রে যেতে সাহস পাই না। আইএফএডির অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে এই খাতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সম্ভব।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে আইএফএডির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে তারা ৩৭টি প্রকল্পে অংশীদারিত্ব করেছে, যার মোট মূল্য ৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে সরাসরি অর্থায়ন হয়েছে ১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে দেশে ছয়টি প্রকল্প (মোট ৪১২ মিলিয়ন ডলার) চলমান রয়েছে এবং আরও একটি প্রকল্প পরিকল্পনায় রয়েছে।
এর আগে, ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে দিতে রোববার বিকেল ৫টার দিকে রোমে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে তিনি বক্তৃতা দেবেন এবং উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
৭৭ দিন আগে
ইমার সভাপতি তছলিম চৌধুরী, সম্পাদক ফেরদৌস নাঈম পরাগ
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের কর্মকর্তাদের সংগঠন ইলেকট্রনিক মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশনের (ইমা) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ইমার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মোহনা টেলিভিশনের সিইও এবং হেড অব মার্কেটিং তছলিম চৌধুরী। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জিটিভির হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ফেরদৌস নাঈম পরাগ।
এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার সহিদুল ইসলাম এবং নির্বাচন কমিশনার মিনহাজ উদ্দিন ও ডক্টর আল আমিন আগামী দুই বছরের জন্য ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। এতে সহ-সভাপতি পদে একুশে টেলিভিশনের জাকারিয়া হোসেন জয়, চ্যানেল আইয়ের জিয়াউল হক সুমন ও স্টার নিউজের জহিরুল ইসলাম; যুগ্ম সম্পাদকের দুই পদে গ্লোবাল টিভির রফিকুল রহমান নিক্সন ও বিজয় টিভির মাহামুদুল হাসান, অর্থ সম্পাদক এটিএন বাংলার আবদুল মালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক দুরন্ত টেলিভিশনের আশিকুর রহমান অভী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিটিভির দীন ইসলাম তপু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এখন টিভির সরকার হানিফ রাফি, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক চ্যানেল আইয়ের লিমা আক্তার শিমু, আইন সম্পাদক এটিএন নিউজের কারিন কামাল এবং দপ্তর সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন চ্যানেল নাইনের সাইফুল আলম তপু।
এছাড়া নির্বাহী সদস্যের সাতটি পদে নির্বাচিত হয়েছেন মাছরাঙা টিভির আবদুস সালাম সোহাগ, একাত্তর টিভির সোহাগ হোসেন, দেশ টিভির আরিফুল ইসলাম রাজীব, এস এ টিভির শাকিলুর রহমান, এশিয়ান টিভির মাহমুদ জনি, ইনডিপেনডেন্ট টিভির এস এম জুবায়ের ও ডিবিসি নিউজের কে এম রাশেদুল।
সবার সহযোগিতায় সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ইমার নবনির্বাচিত সভাপতি তছলিম চৌধুরী।
৭৭ দিন আগে
ব্যাংক একীভূতকরণ: বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকে বিএসইসির চিঠি
দুর্বল ও তারল্যসংকটে থাকা পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার আশ্বাস থাকলেও সাধারণ বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে।
গেল সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী, একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। তবে সেখানে ওই পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের কোনো শেয়ার থাকবে না। এসব ব্যাংকের শেয়ার নতুন করে ইস্যু করা হবে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থার জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই। এ জন্য দায়ী ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকেরা এবং তারা চিহ্নিত। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা দরকার বলে তারা মনে করছেন।
তারা বলছেন, যেহেতু এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই, তাহলে তাদের শেয়ার কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে? এ কারণে পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণ বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি।
তাদের দাবি, সরকার ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি যেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, একই রকমভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।
গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একীভূত করতে যাওয়া পাঁচটি ব্যাংক; ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসির বর্তমান এই অবস্থার জন্য কোনোভাবেই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দায়ী নন।
ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫ এর ধারা-৭৭ এ বর্ণিত দায়ী ব্যক্তিগণ ব্যাংকগুলোর এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী, যা বাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশে স্বীকৃত।
উক্ত পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে বিএসইসি:
১. ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে প্রদর্শিত সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স, ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক, ক্লায়েন্ট বেজ, হিউম্যান রিসোর্স বেজ, সার্ভিস ডেলিভারি মেকানিজম এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু, ইত্যাদি মূল্যায়ন করে বিক্রয় মূল্য বিবেচনায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নির্ধারণ করা।
২. ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে প্রদর্শিত সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ব্যাংক প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সংরক্ষিত জামানত এবং দায়ী ব্যক্তিপণের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে আদায়যোগ্য অর্থ বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ নির্ধারণ করা।
৩. ধারা-৭৭-এ বর্ধিত দায়ী ব্যক্তিগণ কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ার ব্যাতীত অন্যান্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারগণ বা সাধারণ বিনিয়োগকারী কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ সাধারণ বিনিয়োগকারীর ন্যূনতম স্বার্থ মূল্য বিবেচনা করে একীভূতকরণের অনুপাত নির্ধারণ করা।
৪. উপরিউক্ত মূল্যায়ন বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক পাঁচটির সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ মূল্য অনুপাতে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা। এবং ব্যাংকগুলোতে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ মূল্য অনুপাত নির্ধারণ ও তা ঘোষণা না করে অথবা সাধারণ বিনিয়োগকারী কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ারের এক্যুইজেশন মূল্য নির্ধারণ এবং তা ঘোষণা না করে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত না করার কথাও গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে।
৭৭ দিন আগে
রাবি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলার সব আসামি খালাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ এ চাঞ্চল্যকর মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম জানান, সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সবাইকে খালাস দিয়েছেন। মামলার ১১৪ আসামির মধ্যে ৯ জন মারা গেছেন এবং জীবিত ১০৫ জনের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় ২৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহ মখদুম হল এলাকায় ছাত্রলীগ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন। পরদিন তার লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ম্যানহোলে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামায়াত-শিবিরের ৩৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ২০–২৫ জনকে আসামি করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ ১,২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। এতে জামায়াতে ইসলামী’র তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগরের তৎকালীন আমির আতাউর রহমান, রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেনসহ ১১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর বিচারপ্রক্রিয়া শেষে অবশেষে রবিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘রায়ে খুশি-অখুশি এখনই বলা যাবে না। রায়ের কপি হাতে পেলে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হবে।’
৭৭ দিন আগে
মালিবাগে ট্রেনে কাটা পড়ে শ্রমিকের পা বিচ্ছিন্ন
রাজধানীর শাহজাহানপুরের মালিবাগ রেলগেট এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে রাসেল (২৫) নামে এক নির্মাণশ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় তার বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। সহকর্মীরা প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সহকর্মী নাঈম জানান, রাসেল মালিবাগ রেলগেট এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ করছিলেন। কাজের সময় ট্রেনে কাটা পড়ে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, “মালিবাগ রেলগেট এলাকা থেকে ট্রেনে কাটা পড়ে আহত অবস্থায় ওই শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হলে ভর্তি দেন চিকিৎসক। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি রেলওয়ে থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
৭৮ দিন আগে
ঠাকুরগাঁওয়ে সার সরবরাহের দাবিতে খুচরা বিক্রেতা ও চাষিদের মানববন্ধন
ঠাকুরগাঁওয়ে সার সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবিতে খুচরা সার বিক্রেতা ও আলু চাষিরা মানববন্ধন করেছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে জেলার বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় ‘খুচরা সার বিক্রেতা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে কৃষকরা তীব্র সার সংকটের কারণে সময়মতো জমিতে আলু রোপণ করতে না পারার অভিযোগ করেন। পকেটে টাকা থাকলেও ডিলারদের কাছ থেকে সার না পেয়ে দিনভর ঘুরতে হচ্ছে চাষিদের।
মানববন্ধনে কৃষক সেকেন্দার আলী বলেন, ‘আলুচাষিরা সময়মতো আলু রোপণ করলে বাজারে বিক্রি করে লাভ করতে পারতেন। কিন্তু ডিলাররা মাসে মাত্র এক দিন সার দেওয়ার কথা বলছে। এই অবস্থায় আমরা কোথা থেকে সার পাবো?’
পাড়িয়া গ্রামের কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘সারের জন্য ঘুরতে ঘুরতে আমাদের প্রতিটি ফসল পিছিয়ে যাচ্ছে এবং ফলন কমছে। কৃষকদের কথা ভাবার কেউ নেই।’
খুচরা সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সভাপতি সাবুল ইসলাম বলেন, ‘২০২৩ সালের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিসিআইসি ডিলারদের বরাদ্দকৃত সারের ৬০ শতাংশ খুচরা বিক্রেতাদের দিতে হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে সার সংকট থাকবে না এবং কৃষকরা সহজেই সারের ব্যবস্থা করতে পারবেন।’
মানববন্ধনে সাংবাদিক হারুন অর রশিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জুলফিকার আলী, খুচরা সার বিক্রেতা হাসান আলীসহ সার সংকটে ভুক্তভোগী কৃষকরা বক্তব্য রাখেন এবং অবিলম্বে সারের সুষ্ঠু বণ্টন ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
৭৮ দিন আগে
আমার ছেলেমেয়ে দেশে, আমি একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সম্প্রতি উপদেষ্টারা সেফ এক্সিট চাচ্ছেন—এমন একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তার ছেলেমেয়েরা সবাই দেশেই আছেন। তিনি একা একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করবেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট প্রসঙ্গে তিনিও এমন কিছু চান কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘কে কী চায় সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আমার ছেলেমেয়ে সবাই দেশে। আমি একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করব?’
এরপর বেহাত হওয়া কতগুলো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আইজিপির সঙ্গে কথা বলে পরের সভায় হয়তো জানাতে পারব।’
আরও পড়ুন: আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্বাচনের সময় কেউ যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘সব অস্ত্র সব সময় উদ্ধার হয় না, কিছু অস্ত্র তো বাইরে থাকে। এজন্যই তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজন হয়। যদি সব অস্ত্র উদ্ধার হয়ে যেত, তাহলে তো আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগত না, নির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই হয়ে যেত। কোনো ধরনের অসুবিধা নেই। আল্লাহ চাইলে ভালোভাবে নির্বাচন হবে।’
এদিকে, অভিযুক্ত সেনাবাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর হেফাজতে রেখেই বিচারকার্য করার কথা উঠছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আইনে যেটা আছে, সেটাই করা হবে।
৭৮ দিন আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ যুক্তিতর্ক হয়। প্রথমে প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, প্রথমে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছে প্রসিকিউশন। এরপর নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। শেষ পর্যায়ে যুক্তি খণ্ডন করবে প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষ। এ ধাপ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হবে।
ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ মামলায় বিচার শুরুর পর মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয় গত ৮ অক্টোবর। ওই দিন মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে তৃতীয় দিনের মতো জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপর যুক্তিতর্কের জন্য দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন আমির হোসেন। আর তদন্ত কর্মকর্তার এই জেরা শুরু হয় ৬ অক্টোবর।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। তিনি এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম বা সর্বশেষ সাক্ষী। জবানবন্দিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে গত বছরের জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যকাণ্ড ও ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দিনের মতো জবানবন্দি দেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। সেদিনও বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি নিজের জব্দ করা জুলাই আন্দোলনের নৃশংসতা নিয়ে যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রদর্শন করা হয় ট্রাইব্যুনালে। এছাড়া গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। এমনকি জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর তিন লাখ পাঁচ হাজার গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন তিনি।
২৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীরের জবানবন্দি শুরু হয়। ওই দিন তার জব্দ করা ১৭টি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত হয়। এসব ভিডিওতে জুলাই-আগস্টের নির্মমতা ফুটে ওঠে।
২৪ সেপ্টেম্বর এ মামলার ২২তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন সাক্ষ্য দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। পরে তাকে জেরা করেন আমির হোসেন।
মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। নিজের দায় স্বীকার করে তিনি আগেই হয়েছেন রাজসাক্ষী।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা ও কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার।
এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।
৭৮ দিন আগে