বাংলাদেশ
রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের ৯৬ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা ঘোষণা
রোহিঙ্গাদের জন্য ৯৬ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ মিলিয়ন ডলার ও যুক্তরাজ্য ৩৬ মিলিয়ন ডলারের অনুদান ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায় অবিচাররের প্রসঙ্গ দিয়ে সম্মেলনের সূচনা করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আনালেনা বেয়ারবক। মিয়ানমারের ক্রমবর্ধমান সংকট গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে সতর্ক করেন তিনি।
বেয়ারবক বলেন, ৫০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু একই ধরনের অভিজ্ঞতা বহন করছে। শুধু বাংলাদেশের কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরেই ৮ লাখ শিশু বিদ্যালয়ের বাইরে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, ২০২৫ সালের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা এখনো মাত্র ১২ শতাংশ অর্থায়ন পেয়েছে। এটি সবাইকে ‘লজ্জিত’ করার মতো বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় সহায়তা বাড়াতে উপস্থিত দেশগুলোর প্রতি তিনি আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য রাজনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই সংকটের কেন্দ্রে রয়েছেন রোহিঙ্গা মুসলিমরা, যাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়েছে, ঘরবাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছে এবং আশ্রয়শিবির কিংবা নির্বাসনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছে, আর অসংখ্য মানুষ মিয়ানমারের ভেতরে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনের লক্ষ্য রাজনৈতিক সমাধান: মৌনির সাতৌরি
রোহিঙ্গাকর্মীদের সঙ্গে উদ্যোগে পদক্ষেপ নিতেই জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা, রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা একত্রিত হয়েছিলেন
এ সময় প্রতিবেদন ও সংবাদ সম্মেলনে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে রোহিঙ্গাদের ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরা হয়। যারমধ্যে রয়েছে জোরপূর্বক নিয়োগ, যৌন সহিংসতা, বিমান হামলা, অনাহার আর গণ-বাস্তুচ্যুতি।
রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার তহবিল ফুরিয়ে আসছে বলে সতর্ক করে মানবিক সংস্থাগুলো বলেছে, শরণার্থীরা অপুষ্টিতে ভুগছে এবং অনেকেই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রাযর দিকে ঝুঁকছে।
রোহিঙ্গাদের মূল আবাসভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অবস্থা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছে মানবিক সংস্থাগুলো। সেখানে সাধারণ মানুষজন সেনাবাহিনী ও জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের মাঝে আটকা পড়েছে বলে মন্তব্য করা হয়।
মানবাধিকার পদদলিত
জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্যাবিনেট প্রধান কোর্টনি রাট্রের মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের এই সংকট লাখ লাখ মানুষের মানবাধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তাকে পদদলিত করেছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
অবিলস্বে ৩টি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেগুলো হলো—আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষা, মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের ওপর চাপ কমাতে বিনিয়োগ বাড়ানো।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের তবহিল নভেম্বরের মধ্যেই ফুরাবে, বিশ্বজুড়ে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান ডব্লিউএফপির
বিবৃতিতে জোর দিয়ে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে, সমাধানও সেখানেই নিহিত। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
জরুরি পদক্ষেপের দাবি
রোহিঙ্গা কর্মীদের কাছে এই সম্মেলন কেবল সচেতনতা তৈরির সুযোগ নয়, বরং ন্যায়বিচারের দাবি জানানোর একটি মঞ্চ।
মিয়ানমার উইমেনস পিস নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা ওয়াই ওয়াই নু প্রতিনিধিদের বলেন, ২০১৭ সালে যখন ৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে, সেখানে কিন্তু নৃশংসতা শেষ হয়নি বরং আরও ভয়াবহ হয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে রোহিঙ্গাদের হত্যা, জোরপূর্বক সেনা নিয়োগ, যৌন সহিংসতা ও অনাহারে ফেলে দেওয়ার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
ওয়াই নু সতর্ক করে বলেন, এখনই কোনো পদক্ষেপ না নিলে ততক্ষণ পর্যন্ত রোহিঙ্গারা নিজভূমির বাইরে পাড়ি জমাতেই থাকবে, যতক্ষণ না মিয়ানমারে আর কোনো রোহিঙ্গা অবশিষ্ট থাকে।
তাছাড়া সীমান্ত পেরিয়ে মানবিক সহায়তা করিডর, লক্ষ্যভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা ও নৃশংসতার বিচার দাবিও জানান তিনি।
মানবতার জন্য পরীক্ষা
আরাকান ইয়ুথ পিস নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা রফিক হুসন নিজ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জানান, কীভাবে জান্তা বাহিনী রোহিঙ্গা পুরুষ ও ছেলেদের জোর করে সেনা হিসেবে প্রায়শই মানবঢাল বানিয়ে ব্যবহার করেছে। এক সপ্তাহেই অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: টেকসই সমাধানে রোহিঙ্গাদের ক্ষমতায়িত কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিচ্ছে ইইউ
গ্রাম পোড়ানো, ড্রোন হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের মে মাসের এক হামলায় একদিনেই ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
হুসন আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাহীনতার এ সংকট নিরসন করা কেবল এই পরিষদের নয়, মানবতারও পরীক্ষা।
এ সময় উত্তর রাখাইনে আন্তর্জাতিক তদারকিতে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
শান্তির কোনো স্পষ্ট রূপরেখা নেই
জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপ বলেন, মিয়ানমারের বহুমাত্রিক সংকট ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
কোনো যুদ্ধবিরতি না থাকার কারণে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। এ বছর পরবর্তী নির্বাচনের পরিকল্পনা বৈধতা নয়, সহিংসতা বাড়াবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
শান্তির কোনো স্পষ্ট রুপরেখা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিয়ানমারের জান্তা সরকাররে প্রতি নিন্দা ক্রমশ কমছে, অথচ নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন জুলি।
অবশ্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা জাগ্রত করা গেলে এখনো সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।
সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে বেয়ারবক বলেন, রোহিঙ্গারা আট বছরের দুঃসহ জীবন, বাস্তুচ্যুতি ও অনিশ্চয়তা সহ্য করেছে। তাদের সহনশীলতা বিস্ময়কর। আমাদের প্রতিক্রিয়াও সেই মানের হতে হবে।
এ দিকে শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রোহিঙ্গা কর্মীরা। ওয়াই ওয়াই নু বলেন, ন্যায়বিচার কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়। সেটিই একমাত্র প্রতিরোধ, একমাত্র শান্তির পথ।
৮৯ দিন আগে
বাগেরহাটে দুর্গোৎসবে ডিউটিরত পুলিশ-আনসারের ওপর হামলা, ৩ নারী আটক
বাগেরহাটের চিতলমারীতে শারদীয় দুর্গোৎসবে ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুইজনকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার হাড়িয়ারঘোপ (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের আমোদিনীর বাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সামনে রাস্তায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই পুজামন্ডপে দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্যকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা করা হয়।
হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তিনজন নারী আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। হামলার ঘটনার পর ওই পুজামন্ডপে নিরাপত্তায় সর্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন চিতলমারীর বড়বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সঞ্জয় মন্ডল, এএসআই আক্তার হোসেন, এএসআই বশির আহম্মেদ এবং কনস্টেবল সাগর মল্লিক। এদের মধ্যে এসআই সঞ্জয় মন্ডল এবং এএসআই আক্তার হোসেন চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শ্বাসরোধ করে যে আনসার সদস্যকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে তার নাম মো. আল আমিন (৩০)।
আটক তিন আসামি হলেন— সাথী বেগম (৪৫), পান্না বেগম (৩৮) এবং লাভনী বেগম (৩২)। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য এবং তাদের বাড়ি চিতলমারী উপজেলার হাড়িয়ারঘোপ গ্রামে।
পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় বড়বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই বশির আহম্মেদ বাদি হয়ে নারীসহ নয় জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ১০–১২ জনকে আসামি করে সোমবার চিতলমারী থানায় মামলা দায়ের করেন। হামলার পর পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত ওই তিন আসামিকে আটক করে।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বড়বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সঞ্জয় মন্ডল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, রবিবার রাতে হাড়িয়ারঘোপ (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের আমোদিনীর বাড়ি সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সামনে রাস্তায় আনসার সদস্য আল আমিন দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় হাড়িয়ারঘোপ গ্রামের হাফিজ শিকদার তাকে জিজ্ঞাসা করে—“এখন কয়টা বাজে?” ৭টা বাজে বলায় হাফিজ শিকদার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে তার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছুটে এলে হাফিজ শিকদার পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখান থেকে চলে গেলে পুনরায় হাফিজ এসে আনসার সদস্য আল আমিনকে হুমকি দেয়।
এসআই সঞ্জয় মন্ডল আরও জানান, পরবর্তীতে আনসার সদস্যকে হুমকির খবর পেয়ে ডিউটিতে থাকা অবস্থায় তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে পৌঁছান। এরপর হাফিজ শিকদার এবং তার পরিবারের নারী-পুরুষসহ কয়েকজন সেখানে এসে ডিউটিরত অবস্থায় তাদের উপর হামলা চালায়। ওই হামলায় চারজন আহত হয়। হামলাকারীদের কাছে ধারালো দা, টর্চলাইট, লাঠিসোটা এবং ইট-পাটকেল ছিল।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদাৎ হোসেন জানান, পুলিশ উপর হামলার ঘটনায় সোমবার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত তিনজনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
৮৯ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে: ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় সশস্ত্র নেতাকর্মীরা দেশের ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৫৪তম সাক্ষীর জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর (পিপিএম)।
আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ দেওয়া জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় সশস্ত্র নেতাকর্মীরা দেশের ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। এছাড়া ৫০টিরও বেশি জেলায় আন্দোলনকারীদের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
সাক্ষীর জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, আমি তদন্তকালে পেয়েছি যে ২০২৪ সালের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার যত গুম, খুন, জখম, অপহরণ ও নির্যাতন করেছে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতায় টিকে থাকা। এছাড়া গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিরোধী দল, মত ও প্রতিপক্ষের ওপর হত্যা, জঙ্গি নাটক, জোরপূর্বক অপহরণ, গুমসহ পাতানো নির্বাচনের মতো সবকিছুর মূলে ছিল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখন ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য যত রকমের ব্যবস্থা আছে তার সবই গ্রহণ করেছে। এর ফলশ্রুতিতে ২০২৪ সালের আন্দোলনে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে।
এ দিকে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার জবানবন্দির অংশবিশেষ ও জব্দ করা ভিডিও বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সেই জুলাই আন্দোলনে নৃশংসতা নিয়ে বিবিসি ও আল জাজিরায় প্রচারিত ভিডিওচিত্রও জব্দ তালিকার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত হয়। ঐতিহাসিক এই মামলায় এর আগে সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা অনেক পরিবার। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করছেন। অপর প্রসিকিউটররাও শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এক পর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে রাজসাক্ষী হয়ে তিনি সাক্ষ্য দেন।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার চলছে।
৯০ দিন আগে
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে এজেন্সি মালিকদের ৩টি প্যাকেজ ঘোষণা
সরকারের মতো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়ও আগামী বছর হজ পালনে তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি হোটেলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এই হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য তিনটি হজ প্যাকেজ করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য খাওয়া ও কুরবানিসহ বিশেষ হজ প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, সাধারণ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে ব্যয় হবে সর্বমোট ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।
সরকারি ব্যবস্থাপনা হজযাত্রীদের খাবার খরচ প্যাকেজের বাইরে থাকলেও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত সার্ভিসের জন্য খাবারের মূল্য প্রতিটি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত বলেও জানান হাব মহাসচিব।
প্রতি সৌদি রিয়াল ৩২ টাকা ৮৫ পয়সা ধরে প্যাকেজের খরচ হিসাব করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে এ রেটে কোনো পরিবর্তন এলে তা প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
গত বছর হাবের কমিটি না থাকায় এজেন্সি মালিকরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: হজ প্যাকেজ ঘোষণা রবিবার: এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩টি প্যাকেজ, কমছে খরচ
সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকদের ব্যানারে একটি পক্ষ দুটি প্যাকেজ এবং বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকদের ব্যানারে আরেকটি পক্ষ তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে।
খাবার খরচ যুক্ত করে সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ধরেন সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা।
অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী মালিকদের ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম প্যাকেজের মূল্য ধরা হয় ৫ লাখ ১৮ হাজার, দ্বিতীয় প্যাকেজের মূল্য ধরা হয় ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সরকারি ব্যবস্থাপনার ঘোষণা করেন। তিনি জানান, আগামী বছর প্যাকেজ–১ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা। এছাড়া হজ প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা এবং হজ প্যাকেজ-৩ এ ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ শিরোনামে একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ১৮৫ টাকা। সরকার অনুমোদিত এ প্যাকেজ নিয়ে এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমোদিত পেলো ৩৩ ব্যাংক
হজ এজেন্সিগুলোর জন্য সাধারণ হজ প্যাকেজ ও সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে বিশেষ প্যাকেজ থেকে কম-বেশি করে তারা নিজস্ব প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন হাব মহাসচিব।
বিশেষ হজ প্যাকেজের সুবিধা
হাব মহাসচিব জানান, বিশেষ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৭০০ মিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকায় আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান এবং মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটাগরি সার্ভিস সহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ।
এ ছাড়া মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; এটাচড বাথ সহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৫ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে।
সাধারণ হজ প্যাকেজের সুবিধা
হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান এবং মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটাগরি সার্ভিস সহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে।
মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত। এটাচড বাথ সহ হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে।
সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজের বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা
হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৬/৭ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান এবং মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটাগরি সার্ভিস সহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে।
আরও পড়ুন: ১০ দিনে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন ২৫ হজযাত্রী
মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; এটাচড বাথ সহ হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে।
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে প্যাকেজের সব টাকা
ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক হজযাত্রী কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে। হজ প্যাকেজের বাকি অর্থ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে বা অফিসে জমা দিতে হবে এবং মানি রিসিট গ্রহণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই মধ্যস্বত্বভোগীর কাছে লেনদেন করা যাবে না।
কোনো এয়ারলাইন্স এ বছর ডেডিকেটেড ফ্লাইট ছাড়া সিডিউল ফ্লাইটে কোনো হজযাত্রী বহন করতে পারবে না জানিয়ে মহাসচিব বলেন। প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার কোনো খাতে খরচ বাড়ালে তা প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে যোগ হবে এবং হজযাত্রীকে তা পরিশোধ করতে হবে।
হাব মহাসচিব বলেন, গত বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। এবার ১২ হাজার ৯৯০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। বিমান ভাড়া কমানো হয়েছে যাতে প্যাকেজের মূল্যও কমানো যায়।
তিনি বলেন, গত দুই বছরে হজযাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত এক লাখ টাকা বিমান ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। এটি হজযাত্রীদের প্রতি অন্যায় ছিল। এক ডলারের দাম তখন ১০০ টাকা ছিল, এখন ১২২ টাকা ৫০ পয়সা। এবার বিমান ভাড়া সঠিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
৯০ দিন আগে
আসন্ন নির্বাচন ঘিরে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় বাংলাদেশে চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার উদ্যোগে পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ সংহতি প্রকাশ করেন।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন আয়োজনে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত শাসকগোষ্ঠী ও তাদের দোসররা চুরি করা অর্থ ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এর জবাবে মহাসচিব গুতেরেস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার উদ্যোগের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘের ধারাবাহিক ভূমিকারও প্রতিশ্রুতি দেন।
আরও পড়ুন: সম্পদ তার প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দিন: প্রধান উপদেষ্টা
বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
বৈঠকে রাজনৈতিক সংস্কার, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত নৃশংসতার দায় নিরূপণ, সংরক্ষণবাদী শুল্ক নীতির কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্য উদ্বেগ এবং আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মহাসচিবকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে যেসব সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে এবং তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার ১৪ মাসের প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বের প্রশংসা করে গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশের এ কঠিন উত্তরণ প্রক্রিয়ায় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বকে তিনি সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছেন।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলন আহ্বান করার জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, এ সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক আলোচনায় অগ্রাধিকারে এবং আশ্রয় শিবিরে মানবিক সহায়তার জন্য জরুরি তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রাখবে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন ও সংহতি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
৯০ দিন আগে
দেশ পুনর্গঠনে প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
দেশ ও জাতির পুনর্গঠনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ‘এনআরবি (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি) কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিস’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় প্রবাসীদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও বিনিয়োগকে আরও গতিশীলভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশ ও জাতির পুনর্গঠনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সত্যিই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীদের তিনি বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রবাসীদের অপরিসীম অবদান স্বীকার করেন অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাদের পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
`এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিস’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াতের মার্কিন প্রতিনিধি নাকিবুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা আখতার হোসেন এবং ড. তাসনিম জারা।
আরও পড়ুন: সম্পদ তার প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দিন: প্রধান উপদেষ্টা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা দেখছি তা এগিয়ে নিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
প্রবাসীদের আরও সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব এমন হবে না। গ্যালারিতে বসে দেখার দিন শেষ। আমরা এখন নিজে খেলব।’
এ আয়োজনে 'শুভেচ্ছা' নামে একটি মোবাইল অ্যাপের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা, নির্দেশনা এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক অ্যাপের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন, যার মধ্যে তিনটি মূল ট্র্যাক রয়েছে, তা হলো— নাগরিক সেবা, কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এবং বিনিয়োগ।
৯২ দিন আগে
খাগড়াছড়িতে চলমান অবরোধের মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি
খাগড়াছড়িতে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছেন জেলা প্রশাসন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
খাগড়াছড়ির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি এবং জনগণের জান ও মালের ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারির আদেশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আজ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় এই আদেশ জারি করা হয়। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
১৪৪ ধারা জারির ফলে খাগড়াছড়ি সদর ও পৌর এলাকায় চার বা ততোধিক মানুষের জমায়েত, মিছিল, সমাবেশ, মাইকিং ও অস্ত্র বহনসহ যেকোনো ধরণের উস্কানিমূলক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে একমাত্র বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষায় সাঁওতালদের বিক্ষোভ সমাবেশ
৯২ দিন আগে
হজ প্যাকেজ ঘোষণা রবিবার: এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩টি প্যাকেজ, কমছে খরচ
আগামী বছরের হজযাত্রীদের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিমান ভাড়া কিছুটা কমায় চলতি বছরের তুলনায় খরচও কমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নির্বাহী কমিটির সভা শেষে প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। এক্ষেত্রে চলতি বছর ২টি হজ প্যাকেজ ছিল। অন্যদিকে চলতি বছরের মতো আগামী বছরও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। হজ এজেন্সিগুলো এর নিচে কোন প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে না।
রবিবার বিকালে সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এই কমিটির সভাপতি হিসেবে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এ সভায় হজ প্যাকেজ অনুমোদিত হলে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চলতি বছরের হজে বিমান ভাড়া ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। বহু দেন-দরবারের পরও হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমোদিত পেলো ৩৩ ব্যাংক
জানা গেছে, গত কিছুদিন ধরেই হজের বিমান ভাড়া নির্ধারণের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনা চলছিল। দুই উপদেষ্টা একসঙ্গে সভায় ছিলেন। কিন্তু, ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে ঐক্যমত হয়নি।
ধর্ম মন্ত্রণালয়, বিমান ভাড়া এক হাজার ডলার (এক লাখ ২২ হাজার টাকা-শুল্ক ছাড়া) নির্ধারণের বিষয়ে অনড় অবস্থান নেয়।
অন্যদিকে, বিমান মন্ত্রণালয় গত হজের বিমান ভাড়া (এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা) ধরে প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ জানায়। পরবর্তী সময়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে ভাড়া কমানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে তা জানানো হবে।
গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বিমান ও উপর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের দপ্তরে বৈঠকে বসেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। বৈঠকে দুই উপদেষ্টা ছাড়াও ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ার ও মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শেষ পর্যন্ত আগামী হজের বিমান ভাড়া এক হাজার ১০০ ডলার নির্ধারণের (এক লাখ ৩৪ হাজার ২০০ টাকা-শুল্ক ছাড়া) বিষয়ে অনড় থাকে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
কিন্তু বিমান মন্ত্রণালয় ভাড়া এক হাজার ২০০ ডলার ধরে হজ প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ জানায়। তারা আরও কিছুটা সময় নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে ভাড়া আরও কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। তখন যাতে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া সমন্বয় করে নেওয়া হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী হজের বিমান ভাড়া এক লাখ ৫৫ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের থেকে ভাড়া ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা কমতে পারে।
এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘বিমান ভাড়া নিয়ে একটা আলোচনা হয়েছে। বিমান ভাড়ার ওপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক ও সিভিল এভিয়েশনের ফি কমানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে। রবিবার প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা হজের বিমান ভাড়া চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছি। একটা নির্ধারিত হয়েছে তবে সেটা আমরা এই মুহূর্তে বলতে চাচ্ছি না।
আগামী হজ কার্যক্রম আগেভাগে শেষ করতে হবে: কোটাসহ সময়সীমা দিল সৌদি সরকার
ধর্ম মন্ত্রণালয় এক হাজার ১০০ ডলার প্রস্তাব করেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেখেন, আমার প্রচেষ্টার কোনো অন্ত নেই। আমরা চেষ্টা করছি যতটা কমানো যায়। কিন্তু আমরা যদি এখন এমন একটা সংখ্যা বলি, যেটা যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি, সেটা তো ভালো হবে না। প্রাথমিকভাবে একটা চূড়ান্ত হিসাব আমরা তাদেরকে দিয়ে দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি সেখান থেকে যদি আরও ভালো কিছু করা যায়।’
চলতি বছর হজে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। আর প্যাকেজ-২ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হয় ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। আর বেসরকারিভাবে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা। এর ভিত্তিতে প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিগুলো।
আগামী বছর হারাম শরীফের একেবারে কাছাকাছি ৫০০ থেকে ৭০০ মিটারের মধ্যে হোটেলের সুবিধা দিয়ে একটি প্যাকেজ হবে। গত বছরের প্যাকেজ-২ এ আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে এই প্যাকেজটি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে খরচও পড়বে সবচেয়ে বেশি।
আরেকটি প্যাকেজ হবে হারাম শরীফের ২ কিলোমিটারের মধ্যে। যেটি এবার প্যাকেজ-১ ছিল। এবার এ প্যাকেজের খরচ গতবারের থেকে কিছুটা কমবে।
আরেকটি প্যাকেজ হবে হারাম শরীফ থেকে দূরবর্তী আজিজিয়া এলাকায় আবাসন সুবিধা সম্বলিত। এটি হবে সাশ্রয়ী প্যাকেজ। এই প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে সাড়ে চার লাখ টাকার মতো খরচ হতে পারে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে এজেন্সিগুলোর জন্য যে প্যাকেজ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, সেক্ষেত্রে চলতি বছরের তুলনায় খরচ কিছুটা কমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগামী বছর খাবার খরচ ও কোরবানি প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত থাকবে নাকি বাইরে থাকবে সেই বিষয়ে শনিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে হজ অনুবিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
আগামী হজ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার অনুমতি পেল ১৫৫ এজেন্সি
সৌদি সরকারের রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী বছরের (২০২৬) হজের কার্যক্রম বেশ আগেভাগেই সম্পন্ন করতে হবে। গত কয়েক বছরের মতো আগামী বছরও বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। যদিও গত দুই হজে বাংলাদেশের কোটা পূরণ হয়নি।
আগামী বছর হজে যেতে চার লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন গত ২৭ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর বাকি টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধন চললেও রোডম্যাপ অনুযায়ী, এবার ১২ অক্টোবরের মধ্যে প্যাকেজের পুরো টাকা নিয়ে হজের নিবন্ধন শেষ করতে হবে।
শনিবার সকাল পর্যন্ত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯৫৪ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক হাজার ১৩৫ জন হজযাত্রী প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন। হজ প্যাকেজ ঘোষণা না হওয়ায় অর্থাৎ কত খরচ হবে সেটি নির্ধারিত না হওয়ায় হজযাত্রীরা নিবন্ধনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছর হজ হয়েছিল ৫ জুন। গত বছরের ৩০ অক্টোবর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সরকার।
হজ এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার ইউএনবিকে বলেন, বর্তমানে হজ নিবন্ধনের গতি কম। আমরা চাই হজ প্যাকেজ দ্রুত ঘোষণা করা হোক। প্যাকেজ ঘোষণা দেরি হওয়ার কারণে নিবন্ধনে গতি অনেক কম। প্যাকেজ ঘোষণা হলে আশা করি নিবন্ধনে গতি বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি হজযাত্রীদের স্বার্থে হজের বিমান ভাড়া যৌক্তিকভাবেই নির্ধারণ করা হবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
৯৩ দিন আগে
চলতি মাসে তৃতীয় বারের মতো ভূমিকম্প অনুভূত, এবার উৎপত্তিস্থল যশোরে
চলতি মাসে তৃতীয়বারের মতো দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এবার যশোরের মনিরামপুরে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে, যার মাত্রা রিখটার স্কেলে ৩.৫।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ২৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। উৎপত্তিস্থল ছিল মনিরামপুর, যা ঢাকার আগারগাঁও থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১৫৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ভূমিকম্পটি মৃদু এবং স্বল্পস্থায়ী হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে পোস্ট দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
চলতি মাসে এই ঘটনা ভূমিকম্পের তৃতীয়বারের হিসেবে রেকর্ড হলো। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের আসামে ৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্প এবং ২১ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের ছাতকে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৯৩ দিন আগে
লোকালয়ে ঢুকে পড়া সুন্দরবনের দুই চিত্রা হরিণ উদ্ধার
সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয় থেকে দুটি চিত্রা হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
শনিবার বেলা ১০টার দিকে বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার জোড়া ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় হরিণ দুটি উদ্ধার করা হয়। পরে নৌকায় করে সুন্দরবনের করমজল এলাকায় অবমুক্ত করা হয়।
বন বিভাগ জানায়, পশুর নদ পাড়ি দিয়ে সুন্দরবন ছেড়ে হরিণ দুটি লোকালয়ে প্রবেশ করেছিল। উদ্ধার হওয়া চিত্রা হরিণ দুটি স্ত্রী প্রজাতির এবং তাদের বয়স সাত থেকে আট বছর।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, খবর পেয়ে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় হরিণ দুটি উদ্ধার করা হয়। সুন্দরবন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। গ্রামবাসীর তাড়া খেলেও হরিণ দুটি সুস্থ ছিল। পরে নৌকায় করে সুন্দরবনে এনে করমজল এলাকায় অবমুক্ত করা হয়।
আজাদ কবিরের ধারণা, বাঘের তাড়া খেয়ে শুক্রবার রাতে হরিণ দুটি সুন্দরবন ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করেছিল। তিনি আরও জানান, মাঝে মাঝে বন ছেড়ে হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী লোকালয়ে প্রবেশ করে। খবর পেলে বন বিভাগের সদস্যরা সেসব প্রাণী উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করেন।
৯৩ দিন আগে