বাংলাদেশ
প্রশাসক বসবে একীভূত হতে যাওয়া সংকটাপন্ন পাঁচ ইসলামী ব্যাংকে
সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ইসলামী ব্যাংক গঠনের লক্ষ্যে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যান্য বোর্ড সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই প্রশাসক নিয়োগ ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করার বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করা হবে।
তিনি জানান, এ প্রক্রিয়া সহজ করতে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ ও সহায়ক আইনসমূহে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।
প্রতিটি ব্যাংকে একজন করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হবে, যিনি চারজন কর্মকর্তার সহায়তায় দায়িত্ব পালন করবেন। আমানতকারীদের অর্থ সুরক্ষিত রাখা এবং ব্যাংকিং খাতে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে একটি নতুন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক, যার সম্ভাব্য নাম হবে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’। নতুন এ ব্যাংকটির জন্য লাইসেন্স ইস্যু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করেন, এ একীভূতকরণ দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করবে এবং পুনর্গঠনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
একীভূত হওয়ার পর বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বিলুপ্ত হবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর শেয়ার বাতিল ঘোষণা করা হবে। ব্যাংকগুলোর সব সম্পদ ও দায় নতুন প্রতিষ্ঠানের অধীনে স্থানান্তরিত হবে।
সরকারি বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন ব্যাংকের শেয়ার পরবর্তীতে বেসরকারি খাতে বিক্রি করা হবে। বড় অঙ্কের আমানতকারীদের ক্ষেত্রে তাদের আমানতের একটি অংশ শেয়ারে রূপান্তরের সুযোগ দেওয়া হতে পারে, তবে ছোট আমানতকারীরা বিনা বাধায় অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আর এক্সিম ব্যাংকের মালিক নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নাজরুল ইসলাম মজুমদার।
১০৩ দিন আগে
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিক্ষোভ-অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের দাবিতে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চলমান বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেছে সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এর ফলে গণপরিবহনের যাত্রী ও চালকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে, দাবি পূরণ না হলে আগামী রবিবার নতুন করে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে কর্মসূচি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলন ঘিরে গঠিত সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্বকারী ও আলগী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. পলাশ মিয়া।
তিনি বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলেই স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকব, সমাধান না হলে আবারও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে ভাঙ্গা ঈদগাহ জামে মসজিদ চত্বরে সর্বদলীয় নেতাদের উপস্থিতিতে স্থগিত বিষয়ে ঘোষনা দেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা।
এতে উপজেলা বিএনপির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সহিংসতাকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা বলেন, যারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় না, তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নিক্সনের টাকায় নিক্সনের ও কাজী জাফর উল্যাহর ইন্ধনে এই ধ্বংসাত্মক হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানান।
আজ পূর্ব ঘোষিত তিনদিনের কর্মসূচির শেষ দিন ছিল। সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গাছের গুড়ি ও বিদ্যুতের খুটি ফেলে দুই ঘন্টা অবরোধ করলেও সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি সহিংসতাকে কেন্দ্র করে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় একত্রে টহল দিতে দেখা যায়।
সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে মহাসড়কের হামিরদি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, বিদ্যুতের খুটি ও গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখেন। পরে নিজেদের সমঝোতায় সাড়ে ৯ টার দিকে তুলে নেন। তবে স্থানীয়দের মধ্যে এখনও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ দিকে, স্থানীয়রা নতুন করে পাঁচ দফা দাবি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
দুই ইউনিয়নের পুনর্বহালের দাবি সহ দাবিগুলো তুলে ধরে স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম খান বলেন, আলগী চেয়ারম্যানকে বিনাশর্তে মুক্তি দিতে হবে, দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, রাতের বেলায় প্রশাসন দিয়ে হয়রানি করা যাবে না এবং নতুন করে মামলা দেয়া যাবে না।
উত্তাল ভাঙ্গা: থানাসহ চারটি সরকারি দপ্তরে হামলা-ভাঙচুর, আহত অনেকে
জানা যায়, গত ৪ সেপ্টেম্বর সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে পাশ্ববর্তী ফরিদপুর-২ আসনকে সংযুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশন।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পরেরদিন ৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গায় সকল মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এ ছাড়া ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর পুনরায় দুটি মহাসড়ক ও ঢাকা-খুলনা রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় ‘আলগী ও হামিরদি ইউনিয়ন এবং ভাঙ্গা উপজেলার সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে।
ওইদিন রাতেই এই কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আলগী ইউপি চেয়ারম্যান ম.ম. সিদ্দিক মিয়াকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে তাকে পুলিশের দায়েরকৃত দ্রুত বিচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় ৯০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
এরপর রবিবার সড়ক অবরোধের পাশাপাশি রেলপথও অবরোধ করা হয়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার দুপুরে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতায়। ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা শুরু করে থানা, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়, নির্বাচন অফিস, হাইওয়ে থানা কার্যালয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালান হামলাকারীরা।
রাতে পরিদর্শনে আসেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক সহ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা।
এ সময় ডিআইজি হামলাকারীদের ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের কাছে ইউনিয়ন দুটি পুনর্বিবেচনাকরণে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা। এরপরেই আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
এ সব বিষয় নিয়ে দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, ভাঙ্গাবাসীর দাবির বিষয়ে উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে একটি রিটের শুনানি হবে, সে পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া সহিংসতার ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণে কাজ চলছে।
সহিংসতার ২৪ ঘন্টায়ও কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার শামসুল আজম বলেন, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
১০৪ দিন আগে
সার আমদানিতে ‘বিশেষ সুবিধা’ দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করলেন অর্থ উপদেষ্টা
সার আমদানিতে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দায়িত্ব মূলত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় এমন অনুমোদন দিয়েছে, এমন কথা সঠিক নয়। সার আমদানি মূলত কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও শিল্প মন্ত্রণালয় পরিচালনা করে। এটি তাদের দায়িত্ব।’
সার আমদানি নিয়ে সম্প্রতি একটা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে আপনারা কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টা দেখছি। চটকরে আপনে বললেন আর আমরা ব্যবস্থা নেবো বিষয়টা সে রকম না।
কোনো তদন্ত চলছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিস্তারিত জানি না। যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই তা খতিয়ে দেখবে। আমরাও বিষয়টা খতিয়ে দেখবো।
তিনি আরও বলেন, সর্বনিম্ন দরদাতাকে বেছে না নেওয়া হয়ে থাকলে তা পর্যালোচনা করা উচিত এবং এ ধরণের বিষয় অবশ্যই তদন্তযোগ্য।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয় সাম্প্রতিক সময়ে সার আমদানিতে অনিয়মের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য’ বলে বিবৃতি দেয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারি নীতির আলোকে নন-ইউরিয়া সার বেসরকারি আমদানিকারক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তি বা সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি) চুক্তির মাধ্যমে আমদানি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কেবল সর্বনিম্ন দরদাতা কোম্পানিকেই ক্রয়াদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করেছে এবং অস্বাভাবিক মুনাফা রোধ করেছে বলে মন্ত্রণালয় দাবি করে।
বাংলাদেশের সার চাহিদা একক কোনো দেশ পূরণ করতে না পারায়, অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে একাধিক দেশ থেকে আমদানি করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিআইএফ (কস্ট অ্যান্ড ফ্রেইট) মূল্য দূরত্ব ও পরিবহন খরচের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বুলেটিন— আরগাস এফএমবি ও ফার্টিকন ব্যবহার করে আমদানি মূল্যের যাচাই করা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ধাপে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, ২ লাখ ৫৫ হাজার টন ডিএপি এবং ৯০ হাজার টন এমওপি সরবরাহের চুক্তি দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে একই দামে ৯০ হাজার টন টিএসপি এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি সরবরাহের অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, দেশে যখন সারের সংকট চলছে, ঠিক সে সময় এক ব্যক্তির একাধিক কোম্পানিকে সার আমদানিতে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অসাধু কার্যক্রমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এ অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছে মন্ত্রণালয়।
১০৪ দিন আগে
কোনো সরকার নাগরিকের মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করতে পারে না: অধ্যাপক ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেছেন। এ সময় দুর্গাপূজার আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেছেন, কোনো সরকার নাগরিকদের মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অধিকার রাখে না।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আসন্ন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি পরিদর্শন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি মনে করেন, পুরো বাঙালি জাতি একটি বড় পরিবার। সরকারের দায়িত্ব হলো সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা। তাছাড়া, অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর তার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, পূজার সময় ঢাকায় না থাকার কারণে ভেতরে ভেতরে আক্ষেপ থাকলেও মন্দিরে গিয়ে তিনি শান্তি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: তরুণেরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যা অমীমাংসিত থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সবাই এ দেশের নাগরিক, কারও প্রতি বৈষম্য করা হবেনা বলেও আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, নিজেকে মনে করিয়ে দিন, আপনি এই দেশের নাগরিক, এবং আপনাকে সংবিধান প্রদত্ত অধিকার ও মর্যাদা অবশ্যই দিতে হবে।
ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, পূজার আনন্দ উপভোগ না করতে পারার আশঙ্কায় তিনি আগেভাগেই সেখানে গেছেন।
এর আগে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুর্গাপূজা ঘিরে যেন কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তার আগে, গতকাল (সোমবার) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হিন্দু নেতারা।
সে সময় প্রধান উপদেষ্টাকে আসন্ন দুর্গাপূজার মণ্ডপগুলোতে যেতে আমন্ত্রণ জানান বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
১০৪ দিন আগে
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে সহায়তা করছে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সহায়তা করছে এবং নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংস্কার কার্যক্রমকে সমর্থন দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইইউয়ের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
(১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাবেক রাষ্ট্রদূতদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার অ্যাম্বাসাডরস (এওএফএ) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেছেন, বাংলাদেশ ও ইইউয়ের সম্পর্কের মূলভিত্তি হলো মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি।
তিনি বলেন, আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য হলো সমৃদ্ধি গড়ে তোলা, একসঙ্গে কাজ করে টেকসই প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়া, বিনিয়োগ সক্রিয় করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
দেশের বিভিন্ন স্থানে তার সফরের প্রসঙ্গ টেনে মিলার জানান, তিনি ঢাকার বাইরে মানুষের প্রয়োজন বোঝার চেষ্টা করছেন এবং ইইউ-অর্থায়িত প্রকল্প থেকে উপকৃত জনগণের সঙ্গে যুক্ত হওয়ারও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
স্থানীয় পর্যায় থেকে পরিস্থিতি বোঝা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত অতিক্রম করছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় রূপান্তরে কীভাবে সহায়তা করা যায় এবং নতুন চ্যালেঞ্জ কিংবা সহায়তার অনুরোধের দ্রুত জবাব দেওয়া যায়— তা নিয়ে ভাবছে ইইউ।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন দেশটিতে মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা, গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠা করা এবং নাগরিক সমাজের জন্য পরিসর তৈরির একটি অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে বলেও জোর দেন মিলার।
সংস্কার আলোচনায় ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষার দৃঢ় মিল রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, শান্তি, অংশীদারত্ব ও সহযোগিতায় আমরা অটল থাকব, আপনারা আমাদের ওপর ভরসা রাখতে পারেন। বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতেও তারা সাহায্য করবে বলে আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত মনোনীত হলেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন
বাণিজ্য প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত জানান, ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। ইইউ একটি দৃঢ় অংশীদার। পরিবহন, জ্বালানি, পানি, ডিজিটাল ও টেলিকম খাতে নিরাপদ ও টেকসই সংযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে দেশকে রূপান্তরিত করবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (ইআইবি) বাংলাদেশে তাদের ঋণ দ্বিগুণ করবে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই তা করা হবে। পাশাপাশি, ইউরোপের ভেতর থেকে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ নিশ্চিতে ইইউ তাদের বাজেট ব্যবহার করছে।
রাষ্ট্রদূত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করার ইইউয়ের অব্যাহত দায়িত্বের কথাও এ সময় উল্লেখ করেন।
১০৪ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশি পণ্যে আরোপিত মার্কিন শুল্ক আরও হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এসব বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ কারণে ব্রেন্ডেন লিঞ্চকে ধন্যবাদ জানান তিনি। সেইসঙ্গে ইউনূস এ পদক্ষেপকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের একটি বড় মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তিন দিনের সফরে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় এসেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও সয়াবিনসহ কৃষিপণ্য আমদানি বাড়ানোর আগ্রহও প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়া জ্বালানি খাতে সহযোগিতা জোরদার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি, বেসামরিক বিমান কেনা, মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আবুল কালাম আজাদ।
এদিকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততায় ধারাবাহিক অগ্রগতির ওপর গুরুত্বারোপ করে চলমান আলোচনার খসড়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের স্বার্থের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে। তাই প্রক্রিয়াটি আরও সহজ ও আশাব্যঞ্জক হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ১১ দফা 'বাংলাদেশ লেবার অ্যাকশন প্ল্যান' বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক শ্রমমান ও ন্যায্য অনুশীলন রক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ এবং স্বল্পসুদে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি প্রত্যাশা করছে।
সেইসঙ্গে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করবে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত মনোনীত হলেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন
বৈঠকে ব্রেন্ডান লিঞ্চ বাংলাদেশের গঠনমূলক মনোভাবের প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের অংশীদারিত্ব আরও সুদৃঢ় হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি একতরফাভাবে কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর ফলে আলোচনার প্রক্রিয়া মসৃণ হয় এবং ইতিবাচক ফল এসেছে।
শুল্ক চুক্তি ও আমদানি প্রতিশ্রুতিগুলো সময়মতো বাস্তবায়নের গুরুত্বও তুলে ধরেন এই মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টাশেখ বশিরউদ্দীন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউএসটিআরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক এমিলি অ্যাশবি, টেকসই উন্নয়নবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুরশেদ, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন।
১০৫ দিন আগে
তরুণেরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যা অমীমাংসিত থাকবে না: প্রধান উপদেষ্টা
তরুণদের মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, তরুণেরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই আর অমীমাংসিত থাকতে পারে না।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ও তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণামূলক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ১২ তরুণের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
তরুণদের উদ্দেশে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি যুবসমাজের প্রত্যেক সদস্যকে আহ্বান জানাই, তোমাদের মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখো। তোমাদের সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ না রেখে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হোক। আমি বিশ্বাস করি, তরুণেরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই আর অমীমাংসিত থাকতে পারবে না।’
তিনি বলেন, তিনি বলেন, ‘আমরা তোমাদের নতুন নীতি, যুগান্তকারী ধারণা ও সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে দেখতে চাই। তোমাদের সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশ একটি উন্নত, মানবিক ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন আন্তর্জাতিক গণিত-জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে পদকজয়ী ৬ শিক্ষার্থী
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমরা তারুণ্যের শক্তিকে উদ্যাপন করছি। এটিই আমাদের জাতির চালিকা শক্তি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যখন একটি দেশের যুবসমাজ সক্রিয় থাকে, উদ্যমী ও উদ্ভাবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে রাখতে পারে না।’
স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য নিরসন ও সামাজিক ন্যায়বিচারে তরুণদের অবদান তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং জাতি গঠনে তাদের নেতৃত্বের ভূমিকাও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের চলার পথে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। কখনো তা জনস্বাস্থ্যের সংকট, কখনো শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগ, আবার কখনো পরিবেশগত বিপর্যয়। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে হতাশ না হয়ে বরং আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করি, এ কাজেও আমাদের তরুণেরা নেতৃত্ব দেবে।’
স্বেচ্ছাসেবাকে আত্ম-উন্নয়ন এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশের আদর্শ মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তরুণেরা কেবল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই থেমে থাকবে না, বরং সমাজের নীতিনির্ধারক, উদ্ভাবক এবং পরিবর্তনের স্থপতি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরবে।
১০৫ দিন আগে
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারলে মার্কিন শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে: উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরও কিছুটা কমাতে চায় বাংলাদেশ।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, পাল্টা শুল্ক বিষয়ে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তিন দিনের সফরে আজ ঢাকায় এসেছে প্রতিনিধি দলটি। তাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি নিম্নমুখী করার যে উদ্দেশ্য আমাদের, সেই উদ্দেশ্যসাধন করতে পারলে আমরা আশা করতে পারি যে, আমাদের শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শিগগিরই রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ইতোমধ্যে দেশটি থেকে যেসব পণ্য কেনার পরিমাণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, এগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত কৃষি ও জ্বালানি পণ্যের পাশাপাশি বিমান কেনার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কেনাকাটার বিষয়েও ভালো অগ্রগতি হয়েছে।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
গত ৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে ২০ শতাংশ কার্যকর করেছে। তবে দেশটির সঙ্গে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। পাল্টা শুল্ক অন্তত ১৫ শতাংশে নামিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে চায় ঢাকা। এ কারণে আলোচনার জন্য ইউএসটিআরের কাছে সময় চেয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে সাড়া দিয়ে ঢাকা সফরে এসেছে সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল। তিনি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
১০৬ দিন আগে
অনেক জায়গায় পূজা কমিটির মধ্যে কোন্দল রয়ে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দুর্গাপূজা উদযাপনে অনেক জায়গায় পূজা কমিটির মধ্যে কোন্দল রয়ে গেছে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
দুর্গাপূজার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, পূজার ক্ষেত্রে যত ধরনের প্রস্তুতি আছে আমাদের নিতে হবে। পূজা একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, এটার পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। কে কোন ধর্মের আমরা সেটা দেখবো না, আমাদের সবার দায়িত্ব তারা যেন পূজাটা ভালোভাবে করতে পারে। এজন্য সবার সাহায্য-সহযোগিতা দরকার।
তিনি বলেন, পূজার ক্ষেত্রে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য আমাদের যা যা করার আমরা সবই করব। পূজাটা যেন নির্বিঘ্নে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে করতে পারে সেজন্য আমরা সব ব্যবস্থা করে দেব। এটার পবিত্রতা যেন রক্ষা হয় আমরা সব ব্যবস্থা করবো।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চালু হচ্ছে অ্যাপ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘অনেক জায়গায় একটু সমস্যা আছে। কমিটির নিজেদের মধ্যে একটা কোন্দল রয়ে গেছে। আমরা অনুরোধ করব, তাদের নিজেদের কোন্দলটা মিটিয়ে পূজাটা যাতে ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। আপনারা (সাংবাদিক) লোকজনকে বলবেন, আমরাও বলব। আমরা আশা করি পূজাটা খুব ভালোভাবে ও নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশ এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে হয়ে যাবে।'
এ সময় লুট হওয়া অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র প্রতিদিনই উদ্ধার হচ্ছে।
জাতীয় নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে খুব ভালো থাকে, এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
ডাকসু-জাকসু নির্বাচন হলো। এ নির্বাচন নিয়ে কি আলোচনা হয়েছে কিনা সে প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এগুলোর মধ্যে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যতটুকু দায়িত্ব ছিল, আমরা মনে হয় সেটা শতভাগ সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই। আমাদের প্রস্তুতিরও কোনো অভাব ছিল না।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জটা কিভাবে মোকাবেলা করা হবে সে বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জাতীয় নির্বাচন তো আরও অনেক পরে। এটার জন্য আমরা ট্রেনিং শুরু করে দিয়েছি। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।
১০৬ দিন আগে
কেবি কলেজের শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম ফজলুল হক ভূঁইয়ার আশ্বাসে আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের শিক্ষকরা।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেবি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে চোখে লাল কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
আব্দুল্লাহ রনি ইউএনবিকে বলেন, অতি দ্রুত বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য। তার আশ্বাসের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে, কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক ক্ষতির ভয়ভীতি, হাত-পা ভেঙে ঝুলিয়ে রাখার ভয় এবং বহিরাগত ও অভ্যন্তরীণ নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গতকাল দুপুর থেকে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যোগ দেন কলেজের অন্য শিক্ষকরা।
১০৬ দিন আগে