বাংলাদেশ
বগুড়ায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের পর পুলিশে হস্তান্তর
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে মেহেদী হাসান নামে এক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। সে বগুড়া পৌর ছাত্রলীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে মেহেদী তার বড় বোন ও ভাগিনাকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন এবং মারধর শুরু করেন।
খবর পেয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ মেহেদীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নেন। এ সময় তাকে আরেক দফা মারধর করা হয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
১১৭ দিন আগে
জুলাই-আগস্টে রপ্তানি আয় ৮৬৯ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ১০.৬১ শতাংশ
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৮৬৯ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি হলেও চলতি বছরের আগস্টে রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমেছে। ২০২৫ সালের আগস্টে ৩৯২ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৪০৩ কোটি ডলার।
পড়ুন: আগস্টে ২৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের কারণে বৈশ্বিক চাহিদা ও সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ আসার হার কমে যায়। তবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনা শেষে রপ্তানি চাহিদা আবারও বেড়েছে।
ইপিবি জানিয়েছে, অর্থবছরের প্রথম দিকের মাসগুলোতে রপ্তানি পারফরম্যান্স স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিলেও আগস্টের মন্দা বৈশ্বিক চাহিদার ওঠানামা ও বাজারের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের চ্যালেঞ্জগুলো সামনে এসেছে।
১১৭ দিন আগে
নুরের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম রাজনীতিবিদ নুরুল হক নূরের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নুরুল হক নূরের সহধর্মিনী মারিয়া আক্তার, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে নুরুল হকের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মারিয়া আক্তার। তিনি জানান, নূরের মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে, নাকের হাড় ভেঙেছে, তিনি চোয়ালে ও মেরুদন্ডে আঘাত পেয়েছেন। সুচিকিৎসার জন্য নুরকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান মারিয়া আক্তার।
এসময় তাৎক্ষণিকভাবে সুচিকিৎসার জন্য নুরকে বিদেশে পাঠাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা সবাই স্তম্ভিত। তার সুচিকিৎসায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে।'
পড়ুন: নুরের উপর এমন বর্বর হামলার ঘটনা আ. লীগ আমলেও ঘটেনি: উপদেষ্টা আসিফ
এসময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, হামলার ঘটনায় বিচারপতি আলী রেজার নেতৃত্বে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হচ্ছে। আগামীকালের মধ্যেই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হবে। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তকাজ সম্পন্ন করবে।
১১৭ দিন আগে
বাকৃবির একাডেমিক কাউন্সিল সভার পরবর্তী ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
গত ৩১ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী কর্তৃক মিলনায়তনের সব গেইট বন্ধ করে সভায় উপস্থিত সবাইকে প্রায় ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখে ধ্বংসাত্মক ঘটনা, ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করাসহ সার্বিক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম ফজলুল হক ভূঁইয়ার আদেশক্রমে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হেলাল উদ্দীনের সই করা এক আদেশনামায় এ তথ্য জানানো হয়।
তদন্ত কমিটিতে মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদারকে সভাপতি এবং সংস্থাপন শাখা-২ এর ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. মো. মঞ্জুর হোসেনকে সদস্য সচিব হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন— ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ, কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী ফরহাদ কাদির, কৃষি অর্থসংস্থান ও ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান, পূর্ত বিভাগ-১ এর অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী এনামুল হক।
আদেশে যথা দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন বা সুপারিশ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, গত ০৭ আগস্ট বাকৃবির পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা তাদের চাকরির ক্ষেত্র বাড়ানো এবং চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নিশ্চয়তায় কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবর পাঠায়।
এতে বলা হয়, উপাচার্য বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে গত ১২ আগস্ট একটি কমিটি গঠন করে দেন। গঠিত কমিটির সুপারিশে গত ৩১ আগস্ট সকাল ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় ২৫১জন শিক্ষকের উপস্থিতিতে উপস্থাপন করা হলে শিক্ষা পরিষদ কমিটির সুপারিশ মোতাবেক ৩টি ডিগ্রি দেওয়ার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
১১৭ দিন আগে
সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদের আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজধানীর মগবাজার এলাকার সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের মসজিদে আগুন লেগেছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে।
স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
ঘটনাস্থলে দমকল বাহিনীকে ডাকা হয় এবং তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করে।
এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং কেউ আহতও হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল তা তদন্ত করছে কর্তৃপক্ষ।
১১৭ দিন আগে
হাসিনা-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ড হয়েছে: সাবেক আইজিপি মামুন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে দেশে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে বলে আদালতে স্বীকার করেছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার(২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ রাজসাক্ষী হিসেবে এই জবানবন্দি দেন আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে সমন্বয়কদের আটক রেখে মানসিক নির্যাতন করে আন্দোলন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে আসামি হিসেবে রয়েছেন তিনি। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলায় দোষ স্বীকার করে নিয়ে 'অ্যাপ্রুভার' (রাজসাক্ষী) হয়েছেন। আজ এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের ১১তম দিনে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এ মামলার ৩৬তম সাক্ষীর জবানবন্দি দিলেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই কৌশলি চাকরি। সব সময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। আমার এই চাকরিজীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি সব সময় যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরিজীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালীন সময়ে সংঘটিত হয়েছে, তার দায় আমি স্বীকার করছি।’
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, ‘আমি গণহত্যার শিকার প্রত্যেকের পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী এবং ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দেবেন।’
পড়ুন: জুলাই হত্যা মামলায় সালমান, আনিসুল ও চৌধুরী মামুন ফের রিমান্ডে
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমার এই সত্য ও পূর্ণ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটিত হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন, বাকিটা জীবন কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।’
জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব আরও বেড়ে যায়। প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন কিছু কিছু কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
তিনি বলেন, এসব কর্মকর্তা প্রায় রাতেই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠকে করতেন। গোপন সেসব বৈঠক গভীর রাত পর্যন্ত চলতো। বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা হলেন—সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবিপ্রধান হারুনুর রশীদ, এসবির মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, এএসপি কাফী, ওসি মাজহার, ফোরকান অপূর্বসহ আরও অনেকে। এর মধ্যে কারও কারও সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
রাজসাক্ষী মামুন জবানবন্দিতে আরও বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় চেইন অব কমান্ড মানতেন না এসব কর্মকর্তা। কিন্তু আমি চাইতাম তারা পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক। মূলত পুলিশ বাহিনীতে গড়ে তোলা দুটি গ্রুপই এসব কর্মকাণ্ড চালাতো। এছাড়া দুই গ্রুপের নেতৃত্বদানকারীরা চাইতেন তাদের নিজস্ব বলয়ের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং পাক এবং ঢাকায় থাকুক। জবানবন্দিতে র্যাবে থাকাকালীন টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন বা টিএফআই সেলসহ বহু বন্দিশালার বর্ণনাও দেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুন।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বিভিন্ন বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
এর আগে গত ১০ জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
ওইদিন তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে—তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।’
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠনের সময় মামুন এসব কথা বলেন।
একই দিন এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে-১। মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।
১১৮ দিন আগে
কুড়িগ্রামে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা পেলেন শিক্ষক
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে রাজকীয় বিদায় জানানো হয়েছে। দীর্ঘ ৩২ বছরের শিক্ষকতা জীবনের পর তার অবসরকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর ) বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিদায় অনুষ্ঠানে প্রাক্তণ ও বর্তমান শিক্ষার্থী, সহকর্মী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষককে বিদায় জানাতে জড়ো হওয়া সবার চোখেমুখে ছিল আবেগের ছাপ।
সকাল সাড়ে ১১টায় বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার বের করা হয়। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বালারহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজার সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাহতাব হোসেন, নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান মজি, সাধারণ সম্পাদক মুসাব্বের আলী মুসা, জামায়াতের সভাপতি সামচুল হুদা বাবুল, মেঘ বাড়ী হাউজিরের চেয়ারম্যান এমদাদুল মিলন, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন, রাবাইতাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসর প্রাপ্ত অধ্যক্ষ হোসেন আলী ব্যাপারী, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এনছার আলী প্রমুখ।
পড়ুন: কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলে অপরাধ দমনে উড়ছে পুলিশের ড্রোন
বিদায়ী সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৯৯৩ সালের ১ আগষ্ট থেকে এই বিদ্যালয়ে আছি। গত ১ সেপ্টেম্বর ছিল আমার শেষ কর্ম বিবস। প্রিয় জায়গা ছেড়ে যেতে হচ্ছে। এ রকম বিদায় আমাকে অভিভূত করেছে। সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কারণেই আজকের এই দিন সম্ভব হয়েছে। সবাই দোয়া করবেন অবসর সময়টা যেন পরিবারকে নিয়ে সুন্দরভাবে কাটাতে পারি।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রধান আব্দুল হানিফ সরকার বলেন, ১৯৯৩ সালের ১ আগষ্ট থেকে এই প্রতিষ্ঠানে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ ৩২ বছর কেটে দিয়েছেন। আমার সঙ্গে তার পথচলা ২১ বছর। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিদায় নিয়েছেন প্রিয় সহকর্মী। তিনি ছিলেন পরামর্শদাতা ও পথচলার সাথী। তার সুস্থতা ও সুন্দর জীবনের জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।
অনুষ্ঠান শেষে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীসহ বিদায়ী শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিজ গ্রাম নাওডাঙ্গা বকুলতলায় পৌঁছে দেন। গ্রামজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীদের অশ্রু ও মানুষের আবেগ মিলেমিশে এ বিদায়কে পরিণত করে এক অবিস্মরণীয় মুহূর্তে।
১১৮ দিন আগে
নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছা্ত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীর বিরুদ্ধে রিটকারী এক নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীকে হেনস্থাসহ সারা দেশে নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ করেন, ‘ছাত্রশিবিরের নেতারা ধারাবাহিকভাবে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে। বিশেষ করে যারা শিবিরের বিপরীতে অবস্থান নেয় বা মত প্রকাশ করে, তাদেরকে লক্ষ্য করে অবমাননাকর মন্তব্য, হুমকি ও হয়রানিমূলক আচরণ করা হচ্ছে।’
এ সময় বক্তারা বলেন, একজন নারী শিক্ষার্থী যখন ডাকসু নির্বাচনে শিবির প্রার্থীর বিরুদ্ধাচরণ করে রিট করেন, তখন তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি একটি ভয়ংকর নজির।
তারা বলেন, এটি শুধু ব্যক্তি আক্রমণ নয়, বরং দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীর নিরাপদ অংশগ্রহণের ওপর একটি সরাসরি আঘাত।
এ সময় জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, চব্বিশের আগস্ট না হলে সাদিক, ফরহাদ কি প্রকাশ্যে আসতো? এই বাংলাদেশে কোনো গণহত্যাকারীর ঠাঁই নেই, এই বাংলাদেশে কোনো গণধর্ষকের ঠাঁই নেই।
তিনি বলেন, কিছু কিছু কুলাঙ্গার মব তৈরির চেষ্টা করছে। একাত্তরে যেভাবে নারীদের দেখিয়ে দিতো এরা এখন সেভাবে দেখিয়ে দিতে চায়। প্রতিটা ক্যাম্পাসে কিছু কিছু মানুষ গুপ্ত রাজনীতি করে মব তৈরি করে। শিবির অস্বীকার করছে আলী হোসেন তাদের লোক নয়। বাংলাদেশের মানুষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল দেখতে চায় আপনারা কতজন লোক আছেন। ইন্টেরিম সরকারকে বলতে চাই ওদের এই গুপ্ত রাজনীতি আপনারা বন্ধ করুন। ছাত্রসংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে একদল লোক মব সৃষ্টি করে। এদেশে গণহত্যা, গণধর্ষণকারীদের ঠাঁই নেই।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, আমরা গত ১৭ বছর নিজেদের ব্যানারে রাজনৈতিক মিছিল করেছি। এর ফলে আমাদের শত শত নেতাকর্মী হামলা, মামলা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তিন নেতাকে গুম করা হয়। তারা এখনও নিখোঁজ। কিন্তু এতো অত্যাচারের পরও ছাত্রদল অন্য কিছুর আশ্রয় নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, শিবিরের অনেকে ছাত্রলীগের ছায়াতলে, ব্যানারে এমনকি পোস্টেড নেতা ছিলেন। এ ছাড়াও জুলাই-২৪ এরপর অনেক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তাদের অপকর্ম, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছেন। যারা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে দাবি তুলেছিলেন, তারাও এখন শিবিরের সভাপতি-সেক্রেটারি। ৭১-এ আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন, এখনও তাদের আদর্শ ধারণ করছেন। আপনারা কখনোই বাংলাদেশ নামক দেশ চাননি।
এ সময় সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন, মাহমুদুল হাসান খান, রবিউল আউয়াল, রফিকুল ইসলাম, নাহিয়ান বিন অনিক, রাসেল মিয়া, ওহিদুজ্জামান তুহিন, জাহিদুল ইসলাম, রাশেদ খান, রাহাতসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
১১৮ দিন আগে
নড়াইলে ডাকাতির সময় হত্যা, পাঁচজনের যাবজ্জীবন
নড়াইল সদর উপজেলায় ডাকাতিকালে নির্মল পোদ্দারকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক এলিনা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (অতিরিক্ত পিপি) অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাহিন মুন্সি, আক্তারুজ্জামান বাবুল, সেলিম, নজরুল ইসলাম মৃধা ও তেজারত মোল্যা। এর মধ্যে তেজারত মোল্যা কারাগারে উপস্থিত ছিলেন, অন্য চারজন পলাতক রয়েছেন।
পড়ুন: ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে গৃহশিক্ষকের যাবজ্জীবন
মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুন রাতে সদর উপজেলার ভওয়াখালী গ্রামে ডাকাতরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে নির্মল পোদ্দারকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পলি পোদ্দার নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত পাঁচ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ দেন। তবে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
১১৮ দিন আগে
শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেগুলোতে চলমান সমস্যার সমাধান হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে শিগগিরই সেই সমস্যার সমাধান হবে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে তা দুঃখজনক। এজন্য মন্ত্রণালয় উদ্বিগ্ন। তবে আলোচনা করেই এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। শিগগিরই এসব ঘটনার সমাধান হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।
পড়ুন: বাকৃবির আর্থিক লেনদনকারী প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলালেন আন্দোলনকারীরা
চলমান সমস্যাগুলো দ্রুততম সময়ে সমাধান করা হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ফলে শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতি কারো কাম্য নয়। তবে সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।
১১৮ দিন আগে