রাজনীতি
রাজনৈতিক দলগুলো গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: নাহিদ
গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো গণঅভ্যুত্থান ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্টদের, গণহত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা বলছিলাম, ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাষ্ট্রপতি থাকতে পারে না, এই প্রজন্ম ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সরিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেই চুপ্পুকে সরাতে ভয় পেয়েছে। তারা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’
সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১১টার দিকে পাবনা শহিদ চত্বরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মুজিববাদী ৭২’র সংবিধান বদলে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে: নাহিদ
নাহিদ বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, মিডিয়া, পুলিশ, আমলা, সেনাবাহিনী ও সংবিধানের সংস্কার লাগবে। সংস্কারের মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশ গড়ব। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের দেওয়ালে আমাদের ছাত্ররা যে গ্রাফিতি এঁকেছিল, সেই গ্রাফিতির মাধ্যমেই নতুন সংবিধান লেখা হয়ে গেছে। সেসব গ্রাফিতির মাধ্যমেই ৫ আগস্ট-পরবর্তী গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার কথা লেখা হয়ে গিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগামীর সংবিধান রচনা করব। সেই সংবিধানের মাধ্যমেই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। ৩ আগস্ট নতুন সংবিধান, বিচার সংস্কারের দাবিতে গণমানুষের মুক্তির ইতিহাস জাতির সামনে প্রস্তাব করব। সেইদিন সবাইকে আসার আহ্বান রইল।’
পথসভায় দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পাবনার আহ্বায়ক বরকতউল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
৫ ঘণ্টা আগে
৩ আগস্ট এনসিপির ‘চল চল, ঢাকা চল’ কর্মসূচি ঘোষণা হাসনাতের
যারা সংস্কার পিছিয়ে দিচ্ছে, তারাই নির্বাচনও পিছিয়ে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাবনা শহিদ চত্বরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আমরা নাকি নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাই। নির্বাচন তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা সংস্কার পিছিয়ে দিচ্ছে। আপনারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের রব তুলে নির্বাচন-বিরোধী ও গণতান্ত্র-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি এনসিপির
তিনি বলেন, ‘ভারতের ষড়যন্ত্র ও মিডিয়ার ষড়যন্ত্র থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। একটি দল আমাদের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, এই অভ্যুত্থানের আইনগত ভিত্তি নেই। তারা নতুন করে মুজিববাদের ঠিকাদারি নিয়েছে। আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে চল চল ঢাকা চল কর্মসূচি থাকবে।’
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে যাব না। আমরা এই মিডিয়া সংস্কার করেই ছাড়ব। মিডিয়াকে মাফিয়াতন্ত্র মুক্ত করেই ছাড়ব।’
পথসভায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পাবনার আহ্বায়ক বরকতউল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
৫ ঘণ্টা আগে
মুজিববাদী ৭২’র সংবিধান বদলে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনিসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৭২’র সংবিধান হলো মুজিববাদী সংবিধান, ওটা আওয়ামী লীগের সংবিধান। ওই সংবিধান পরিবর্তন করে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের মুক্তির সোপান চত্বরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত জুলাই পদযাত্রার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাস্তায় নেমেছিলাম, যে পরিবর্তন আমরা চেয়েছিলাম, সেই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের চাওয়া ছিল, জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ নিয়েও এখন তালবাহানা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার ধ্বংসের মধ্য দিয়ে নতুন দেশ গড়ার লড়াইয়ে যখন আমরা মাঠে নেমেছিলাম, সিরাজগঞ্জের মতো বাংলাদেশের সব জেলার মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল।’
‘এই যে গণহত্যা হয়েছে, আপনার সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছে; সেইসবের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা নির্বাচনের দিকে এগোতে পারি না।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘সকল অন্যায়ের অবশ্যই বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি সংস্কারও করতে হবে। আমরা পুরনো সিস্টেমে ফিরে যেতে চাই না, যেতে দেওয়া হবে না। এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে বাংলাদেশে আর কখনো কেউ স্বৈরাচারী হতে না পারে।’
আরও পড়ুন: নতুন বাংলাদেশ পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না: নাহিদ ইসলাম
তিনি বলেন, ‘বিচারব্যবস্থা সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতেও আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ৭২’র সংবিধান হলো মুজিববাদী সংবিধান, ওটা আওয়ামী লীগের সংবিধান, যে সংবিধান গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করেনি। বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্রেও পরিণত করতে পারেনি। তাই ওই সংবিধান পরিবর্তন করে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে। যে সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান ও বৃটিশবিরোধী সংগ্রামের কথা থাকবে।’
সিরাজগঞ্জের মাটি প্রতিরোধের ঘাঁটি উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘আমরা সেই প্রতিরোধ দেখেছি জুলাই গণঅভুত্থানেও। জুলাই গণঅভুত্থানের সময় সিরাজগঞ্জে ১৩ জন শহিদ হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থেকে ফ্যাসিবাদী হটানোর যে লড়াই শুরু হয়েছে, সেই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আগামী বাংলাদেশে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্য পৃথিবীর সামনে তুলে ধরব। কর্মসংস্থান করা হবে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুব্যবস্থা করা হবে।’
জনতার উদ্দেশে এই এনসিপি নেতা বলেন, ‘জুলাই গণঅভুত্থানের মত জাতীয় নাগরিক পার্টির ওপর আস্থা রেখে, আমাদের সমর্থন দিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত সিরাজগঞ্জ গড়ে তুলুন।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, যুগ্ম সদস্য সচিব সাঈদ মুস্তাফিজ প্রমুখ।
৮ ঘণ্টা আগে
আগামী নির্বাচনে তরুণদের চোখে সবচেয়ে এগিয়ে বিএনপি: জরিপ
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, আগামী নির্বাচনে তরুণদের চোখে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে।
সানেম-অ্যাকশনএইড পরিচালিত ‘যুব জরিপ-২০২৫’ শীর্ষক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণে সারা দেশের আট বিভাগের ২ হাজারের বেশি পরিবারের ওপরে এ জরিপ চালানো হয়েছে।
জরিপের তথ্যানুযায়ী, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আনুমানিক ৩৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট পাবে। বিএনপির পড়েই আছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে মনে করছেন তরুণরা।
অন্যান্য ইসলামপন্থী দল, এনসিপি ও জাতীয় পার্টির অবস্থান আরও নিচে। এছাড়াও, যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারতো, তবে ১৫ শতাংশ ভোট পেত বলে মনে করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা। বিএনপির প্রতি পুরুষ ভোটারদের সমর্থন নারীদের তুলনায় একটু বেশি। জামায়াতের ক্ষেত্রেও পুরুষ সমর্থন বেশি নারীর তুলনায়। অন্যদিকে, এনসিপির প্রতি নারীদের সমর্থন পুরুষদের চেয়ে বেশি, এবং শহরাঞ্চলে এই দলের জনপ্রিয়তা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি।
দেশের তরুণদের মধ্যে ৯৩ দশমিক ৯৬ শতাংশই আশাবাদী আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। তবে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ ইতোমধ্যেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা হারিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ৭৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ তরুণ, অন্যদিকে ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ তরুণ ভোট দিতে অনাগ্রহী বলে জরিপে উঠে এসেছে।
পড়ুন: নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: সিলেটে মির্জা ফখরুল
জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী রাজনীতি ও সংস্কার নিয়ে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি জরিপে উঠে এসেছে। রাজনৈতিক সচেতনতার দিক থেকে মাত্র ২৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ তরুণ নিয়মিত দেশের রাজনীতির হালচাল অনুসরণ করেন, ৩৯ দশমিক ০৯ শতাংশ মাঝে মাঝে করেন, আর ৩৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ এ ব্যাপারে একেবারেই আগ্রহী না।
নারীদের মধ্যে ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ জাতীয় রাজনীতিতে আগ্রহী না, যেখানে পুরুষদের মধ্যে এ হার ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ঘনিষ্ঠভাবে রাজনীতি অনুসরণকারী তরুণের হারও খুব কম—পুরুষদের মধ্যে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। আঞ্চলিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও একই চিত্র—পুরুষদের মধ্যে ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ১৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
জরিপে রাজনৈতিক দলের কার্যকারিতা নিয়ে তরুণদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি স্পষ্ট। মাত্র ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর এজেন্ডায় দেশের প্রকৃত সমস্যার প্রতিফলন ঘটে, যেখানে ৪৯ দশমিক ৪২ শতাংশ একেবারেই এ বিষয়ে একমত না। দেশের ৫০ শতাংশ তরুণ মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সঙ্গে কোনো সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি, আর বিপরীতে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ মনে করেন যে দলগুলো তরুণদের সঙ্গে যুক্ত।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়েও তরুণদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন সংস্কার ছাড়াই পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। তবে ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন, যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব। অপরদিকে, ১১ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আরও অবনতি দেখছেন এবং ১৩ দশমিক ১ শতাংশ মনে করেন, কিছুই পরিবর্তন হবে না।
পড়ুন: অধস্তন আদালত উপজেলা পর্যায়ে নেওয়ার প্রস্তাবে জামায়াতের সায়
দেশের ৮২ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ কোনোভাবেই রাজনীতিতে যুক্ত হতে আগ্রহী না। ১১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণের মধ্যে কিছুটা আগ্রহ আছে এবং মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ বর্তমানে কোনো না কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।
রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে তরুণদের প্রত্যাশা অনেকটাই আদর্শভিত্তিক। ৬০ শতাংশ তরুণ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন তারা পৃষ্ঠপোষকতা, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতা দূর করবে। ৫৪ শতাংশ চায় নিয়মিত নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রথা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক। পাশাপাশি, ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত নয়।
জরিপ পরিচালনা করা সংস্থা দুটি জানিয়েছেন, জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে তরুণরা রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের গতিপথ, অন্তর্ভুক্তি ও কার্যকারিতা সম্পর্কে কীভাবে চিন্তা করছে—তাও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে জরিপটিতে। জরিপটি তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে। সার্বিকভাবে, এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিলো তরুণদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষাগুলো আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা, যেন তা নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় এবং যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়।
২১ ঘণ্টা আগে
নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: সিলেটে মির্জা ফখরুল
নির্বাচিত সরকারের চেয়ে কোনো সরকার শক্তিশালী হতে পারে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এতে বিনিয়োগ থেমে যাবে, নারী-শিশুর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরা চরম অবনতি ঘটবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার এখন দেশে প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকাল ৩টায় নগরীর একটি হোটেল মিলনায়তনে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি সম্মানে একটি বিশেষ স্মরণ ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমনিতেই হাসিনা পালিয়ে যায়নি। বহু মানুষের আত্মত্যাগ, রক্ত, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে জনগণ মত প্রকাশে স্বাধীন থাকবে, নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে, তরুণরা কর্মসংস্থান পাবে, জনগণ চিকিৎসার সুযোগ পাবে—এমন একটি কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। আমাদের প্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনও অসুস্থ অবস্থায় আমাদের প্রেরণা ও পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। এখন আর কেবল কথার রাজনীতি নয়, এখন সময় কাজের। ত্যাগ ও রক্তের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়েছি। গত ১৫ বছরে এই শাসকগোষ্ঠী প্রায় বিশ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। শুধু গত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ৩৬ দিনের মধ্যে দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। তাদের পুনর্বাসন, সন্তানদের শিক্ষার নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আশা মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি নতুন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, অর্থবহ নির্বাচন চাই—যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এম. এ. মালিক ও ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রমুখ।
২২ ঘণ্টা আগে
অধস্তন আদালত উপজেলা পর্যায়ে নেওয়ার প্রস্তাবে জামায়াতের সায়
বিচার ব্যবস্থাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অধস্তন আদালতকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যেতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের দ্বিতীয় পর্যায়ের দশম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এমন তথ্য দিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
তিনি বলেন, ‘অধস্তন আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ—অর্থাৎ অধস্তন আদালতকে জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাবে একমত পোষণ করেছে জামায়াত। আমরা তাদের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছি। কারণ হচ্ছে, আজকে যে ঐকমত্য কমিশন, আজকে যে অন্তর্বর্তী সরকার, আজকে যে বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থান—৫ আগস্টের পরিবর্তনের যে জনআকাঙ্ক্ষা, সেটিকে কেন্দ্র করে। আমরা জনস্বার্থে আদালতকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই।’
কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘একজন উপজেলায় বসবাসকারী নাগরিক যদি বিচারপ্রার্থী হন, তাকে যোগাযোগের বিরাট জটিল অবস্থা অতিক্রম করে জেলায় যেতে হয়। ফলে এখানে অর্থনৈতিক একটি বিষয় আছে। দূরত্ব ও সময়ও একটি বিষয়। সেখানে গিয়ে জেলা পর্যায়ে আইনজীবী ঠিক করে বিচার পাওয়া—এই যে মানসিক দুর্ভোগ—থাকা-খাওয়া—সবমিলিয়ে একটা কষ্টকর অবস্থা তার হয়।’
‘বিশেষ করে, বিচারপ্রার্থী যদি একটু আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হন, তার জন্য আরও দুর্বিষহ পরিস্থিতি চলে আসে। এ জন্য আমরা বলেছি যে জনগণের কষ্ট লাঘব করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিচারকে সহজীকরণের জন্য এবং মামলার চাপ কমানোর জন্য আমরা এটিকে সমর্থন করেছি। এটি যেন উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৪৯৫টি উপজেলা আছে। আবার বেশ কিছু বর্তমানে সংবিধানের ভিতরেই আছে, বিচারের জন্য কিছু চৌকি স্থাপন করা আছে। এখানে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, পর্যায়ক্রমে যাতে সব উপজেলায় বিচার-আদালত নিয়ে যাওয়া হয় আর চৌকিগুলোকে স্থায়ী আদালতে রূপান্তর করা হয়।’
‘আমরা নীতিগতভাবে একমত হয়েছি, জনস্বার্থে বিচার ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে। এখানে আরেকটি সমস্যা হচ্ছে যে বিচার ব্যবস্থা যদি অধস্তনে চলে যায়, তাহলে দুর্নীতি বাড়বে, আমাদের দেশে যে দালাল চক্র আছে, তারা বিচারপ্রক্রিয়ায় জড়িত লোকদের সাথে যোগসাজশ করে অথবা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করবে। আলোচনায় এই কথাটা উঠে এসেছে।’
কিন্তু মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে না ফেলে চিকিৎসা নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যদি মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে, জনসচেতনতা বাড়ে, মানুষকে শিক্ষিত করা গেলে এই জিনিসগুলো দূর করা যাবে। আর দুর্নীতি কোথায় নেই? জেলা পর্যায়ের বিচারে কি দুর্নীতি হয় না। হাইকোর্টের বিচারপতির সই জাল করে রায় বের করার নিউজ তো আপনারাই করেছেন।’
আলোচনায় গ্রাম আদালতের বিষয়টিও উঠে এসেছে জানিয়ে জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি বলেন, ‘গ্রাম আদালতে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেটিকে আরও কার্যকর করার কথাও আমরা বলেছি। যেমন, এখানে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। সেই জায়গায়, এখতিয়ার যদি একটু বাড়ানো যায়।’
‘সেখানে সালিশ করার মতো লোকের অভাব রয়েছে। তাদের যদি প্রশিক্ষণের মধ্যে আনা যায়, সবদিক থেকে আরও এখতিয়ার ও পাওয়ার ফাংশন দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলে অনেক বিষয় ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম আদালতে এসে শেষ হয়ে যেতে পারে। বিচার আদালতের দ্রুত নিষ্পত্তির একটি মাধ্যম হতে পারে এটি,’ যোগ করেন আযাদ।
১ দিন আগে
আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আশা মির্জা ফখরুলের
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (৭ জুলাই) সকালে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশ সঠিক পথে অগ্রসর হবে।’তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলন, বিশেষ করে জুলাইয়ের রক্তাক্ত ছাত্র গণঅভ্যুত্থান যে নতুন পথ দেখিয়েছে তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে সবাইকে।’
এ ছাড়া, বিএনপির প্রায় ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং এসব মামলা ও দমন-পীড়নের কারণে অনেক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লববিরোধী: ফখরুল
এর আগে, সকাল ৯টা ২৫ মিনিটির দিকে বিএনপি মহাসচিবসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকার একটি ফ্লাইটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এ সময় সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী জানান, সোমবার বিকালে সিলেটের পাঠানটুলা এলাকার সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মিলাদ মাহফিলে অংশ নেবেন মির্জা ফখরুল।
পাশাপাশি সিলেটের দরগাহ গেট এলাকার হোটেল স্টার প্যাসিফিকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সিলেটে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিবের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ অন্যান্য নেতারা।
১ দিন আগে
নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লববিরোধী: ফখরুল
যারা নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাচ্ছেন, নিশ্চিতভাবেই তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি কিংবা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সমর্থক না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (৬ জুলাই) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায়, তারা নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়, তারা নিশ্চয়ই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তি নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে সংস্কার কমিশনের সংস্কার বিষয়ে বিএনপি কোন কোন বিষয়ে একমতে পৌঁছেছে সেটিরও একটি পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে প্রথম যে প্রস্তাব ছিল, আমরা আমাদের মতামত দিয়ে দিয়েছি, এটা বহু আগে দিয়েছি। তারপরে তো সরকার বলেছে তারা দায়িত্ব নিয়েছে তারা করবে। এখন পর্যন্ত তারা কিছু আনেনি।’
‘আমরা যেকোনো সময়ে যেকোনো ব্যাপারে আলোচনায় সব সময় ছিলাম, এখনো আছি। এই ব্যাপারে আমাদের কোনো সমস্যা নেই,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মিডিয়ার কিছু অংশ ও কিছু ব্যক্তি তারা বিএনপির সংস্কার সম্পর্কে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন, যেগুলো সঠিক নয়। বিএনপির কমিটমেন্ট টু রিফর্মস, এটা কোয়েশ্চেন করবার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি হচ্ছে সেই দল যে, ২০১৬ সালে খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ তিনি সংস্কারের কথা বলেছিলেন। তারপরে বিএনপি ’২২ সালে ২৭ দফা এবং অন্যান্য দলের সাথে আলোচনা করে ’২৩ সালে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি আমরা দিয়েছি।
‘এটাতে আমরা আন্তরিক বলেই কিন্তু ৩১ দফা নিয়ে সারা দেশে অসংখ্য প্রোগ্রাম করেছি, জনগণের কাছে যাওয়া হয়েছে, সুধী সমাজ, সুশীল সমাজের কাছে যাওয়া হয়েছে। আজকে একটা মহল, একটা চক্র অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করবার একটা অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সব প্রস্তুতি আছে, মব মোকাবিলায় সচেষ্ট সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে বিএনপির শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কত কর্মসূচি, কত সমাবেশ, কত লাঠিপেটা আপনারা দেখেছেন, আপনারা কাভার করেছেন। এখন বিএনপিকে নিয়ে এই প্রশ্নটা কেন করে? এটাকে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ছাড়া আমি কী বলব?
‘বিএনপিকে মেলাইন করা, তাকে ভুলভাবে চিত্রিত করতে এটা একটা গোষ্ঠীর প্রচেষ্টা চালানো মাত্র। কোনো একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি বা কয়েকটি গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারণা সমানে করে যাবেন আর সেটাতে তারা মনে করবেন জনগণ খুব সাড়া দিচ্ছে। জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। জনগণ বলতে গুটিকতক শহুরে লোক নয়, জনগণ বলতে সারা বাংলাদেশ।’
বিএনপির নীতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি প্রমাণ করেছে, এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সংস্কার আমাদের দলের প্রতিষ্ঠা জিয়াউর রহমান করেছেন। বাক স্বাধীনতা, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা, সংগঠন করবার স্বাধীনতা, সংসদীয় গণতন্ত্র, এমন কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে তিন তিনটা নির্বাচন সব কিছুই বিএনপি। সব কিছুই সংস্কারের মাধ্যমে বিএনপি করেছে।’
বিএনপির অবদান নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির পাঁয়তারা করে কোনো লাভ হবে বলে সতর্ক করেছেন ফখরুল।
সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হতে পারে না, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে কী না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা মনে করি যে, জনগণ নির্বাচন চায়, যেটা আলোচনা হয়েছে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
সেই লক্ষ্যেই দেশ এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যেতে চায়। আমরা কোনো বিপ্লবের মাধ্যমে বা অন্য কিছুর মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা ১৫ বছর ধরে লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি একটা মাত্র উদ্দেশ্যে যে আমরা গণতন্ত্রের ফিরে যেতে চাই।
১ দিন আগে
নতুন বাংলাদেশ পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না: নাহিদ ইসলাম
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রবিবার (৬ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিচার, সংস্কার, তারপর নির্বাচনের’ দাবিতে চলমান জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। এরআগে পাশের জেলা নওগাঁ থেকে দুপুর ২টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তিমোড়ে উপস্থিত হন এনসিপির নেতারা। এরপর পদযাত্রা শুরু হয়।
পরে এটি বাতেনখাঁ মোড়, নীমতলা মোড়, বড় ইন্দারা মোড়, গাবতলা মোড় ও ক্লাব সুপার মার্কেট হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন নতুন এই রাজনৈতিক দলের নেতারা।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা এসেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের বার্তা নিয়ে, যে বার্তা একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখায়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়।’
‘গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ চেয়েছি, আমরা রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার চেয়েছি, আমরা গণত্যাকারীদের বিচার চেয়েছি। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ চেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ খাতে বৈষম্যের শিকার। বাংলাদেশের সব জেলায় এমন বৈষম্য দূর হবে আমরা সেই স্বপ্ন দেখি।’
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কঠোর সমালোচনা করে নাহিদ বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গ্রেনেড মারে, এখানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটনায়। আমরা কিন্তু এইসব আগ্রাসন আর মেনে নেব না।’
আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে বাণিজ্যের চোখে দেখে ওয়াশিংটন: কুগেলম্যান
‘সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ হয়েছে। আর আগ্রাসন চালানো হলে, আমার ভাইদের হত্যা করা হলে আমরা লং মার্চ ঘোষণা করবো। আমাদের সীমান্ত আমরাই রক্ষা করবো।’
দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন, সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ওপর দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নির্মম নির্যাতন করেছে। সেই নির্যাতনকে সায় দিয়ে দিল্লির সরকারও সীমান্তে হত্যা চালিয়েছে।’
সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে। ভারত আর কোনোদিন আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতে পারবে না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ আঞ্চলিক বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আর পুরোনো সিস্টেমে চলতে পারে না ‘
এ সময়ে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিতি ছিলেন। পরে এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয় উদ্বোধন শেষে রাজশাহীর উদ্দেশে রওয়ানা দেন তারা।
১ দিন আগে
জামায়াতের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ রিজভীর
জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামী জনমতের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে দ্বিচারিতা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (জামায়াত) নির্বাচন পেছাতে চান কেন? বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে ৫ আগস্ট। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে দেড় বছর সময় পাওয়া যাবে। এত সময় কি সংস্কার করার জন্য যথেষ্ট নয়?’
রবিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে এসব কথা বলেন রিজভী।
পরোক্ষভাবে জামায়াতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একদিকে তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে, অন্যদিকে কিছু আসনে প্রার্থীও দিচ্ছে। এটিই হলো দ্বিচারিতা।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, জামায়াত ৩৩ থেকে ৩৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে, অথচ এখন তারা নির্বাচন পেছাতে চায়। ‘একদিকে মনোনয়ন দিচ্ছে, আরেকদিকে ভোট পেছানোর দাবি করছে।’
রিজভী বলেন, ‘জনগণের মনোভাব বুঝতে জামায়াতের ইতিহাসই ব্যর্থ। ১৯৭১ সালে তারা যদি জনগণের মন বুঝত, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করত না। তারা ১৯৮৬ সালে এরশাদের অধীনে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচনে যেত না। তারা সবসময় জনগণের মতামত উপেক্ষা করেছে। আসলে তাদের কাছে জনগণই কোনো বিষয় নয়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই রাজনীতি করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘তাই তো তারা একা নির্বাচন করলে দুই-একটার বেশি আসন পায় না।’
রিজভী বলেন, ‘এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান, আর মুসলমানরা কথা রাখে। কিন্তু তারা (জামায়াত) কোনোদিন কথা রাখে না। খালেদা জিয়াই কথা রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসী এখন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন।’
নির্বাচনের সময় পেছানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী। বলেন, ‘সমতাভিত্তিক পরিবেশ তৈরির জন্য এখনো যথেষ্ট সময় আছে। তাহলে ভোট পেছানোর দরকার কী?’
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা রাজনৈতিক নয়, বরং সামাজিক অপরাধ বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘সামাজিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। নির্বাচনের দোষ কী?’
তিনি বলেন, ‘কিছু দল হয়তো নির্বাচনের সময় পিছিয়ে দিয়ে নিজেদের অবস্থান জোরদার বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চাইছে।’
তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কোনো দল বা ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে বাড়তি সময় দেবে না। আমরা চাই তারা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক। কারণ, রাষ্ট্র পরিচালনার অনেক দায়িত্বই নির্বাচিত সরকারের।’
আওয়ামী লীগের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা একসময় অংশ নিয়েছিলেন, এখন তারা নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছেন বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী।
কারবালার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘ইমাম হোসাইন অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আজকের কিছু রাজনৈতিক দল সেই ইতিহাস থেকে কিছু শিখেছে কি না, জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও তারা (জামায়াত) বলছিল পরিবেশ অনুকূলে নয়। এখন ভোট পেছানোর দাবি করছে। কেন? ১৫–১৬ বছরের আন্দোলন, এত ত্যাগ, গুম, হত্যা—সবই তো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। তাহলে নির্বাচনই এখন দোষী হয়ে গেল?’
আরও পড়ুন: জামায়াত ‘ঘোলা পানিতে’ মাছ শিকারের চেষ্টা করছে: অভিযোগ রিজভীর
২ দিন আগে