ব্যবসা
সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে রিহ্যাব শারজাহ ফেয়ার-২০২৪
‘প্রবাসে উপার্জন স্বদেশে আবাসন’ স্লোগান সামনে রেখে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রিহ্যাব হাউজিং অ্যান্ড রেমিটেন্স ফেয়ার-২০২৪।
৬, ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর শারজাহর এক্সপো সেন্টারে এই ফেয়ার অনুষ্ঠিত হবে।
রিহ্যাবের গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর মেলার উদ্বোধন করবেন।
মেলা উপলক্ষে শারজাহতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের মাঝে এখন থেকেই প্রচার শুরু হয়েছে। মেলায় এখনও অংশ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জুন মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০.৪২ শতাংশ
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) উদ্যোগে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, প্রবাসীদের জন্য হোম লোন ব্যবস্থা সহজ করায় মেলা থেকে ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকছে এ বছর।
শারজাহতে রিহ্যাবের এই মেলায় রিহ্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
ইতোমধ্যে রিহ্যাব ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলিম উল্ল্যাহ এবং কো চেয়ারম্যান মো. ইমদাদুল হক বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে সাক্ষাৎ করে এসেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেছেন, রিহ্যাব হাউজিং অ্যান্ড রেমিটেন্স ফেয়ার-২০২৪ সফলভাবে সম্পন্ন করতে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: বুধবার ৪ ঘণ্টা খোলা ছিল ব্যাংক, দীর্ঘ লাইন গ্রাহকদের
বুধবার ৪ ঘণ্টা খোলা ছিল ব্যাংক, দীর্ঘ লাইন গ্রাহকদের
দেশজুড়ে কারফিউয়ের জেরে সব ব্যাংক টানা তিন কার্যদিবস বন্ধ থাকার পর বুধবার মাত্র চার ঘণ্টা খোলা ছিল। এ সময় গ্রাহকদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতার কারণে বাংলাদেশে টানা পাঁচ দিন ইন্টারনেট ছিল না। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির পর আজ বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সরকারি, বেসরকারি অফিস ও ব্যাংক খোলা ছিল।
বেলা ১১টা থেকে ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকরা ভিড় করেন। বেশিরভাগই টাকা তুলতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের বর্জনের মধ্যে অনলাইনে মুদ্রানীতি বিবৃতি প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন, কাকরাইলসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই প্রতিবেদক ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের অতিরিক্ত ভিড় ও দীর্ঘ লাইন দেখেছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, দিনের বেলায় নগদ জমার চেয়ে উত্তোলন হয়েছে বেশি।
গ্রাহকরা জানান, গত পাঁচ দিন ইন্টারনেট না থাকায় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও অধিকাংশ এটিএম বুথ অচল হয়ে পড়েছে। এর ফলে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা তোলার জন্য আজ ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কাওসার আহমেদ বলেন, 'বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লাইনে দাঁড়িয়েছি। নগদ টাকার অভাবে গত কয়েকদিন আমি খুব উদ্বিগ্ন ছিলাম। এটিএম বুথ থেকেও টাকা তুলতে পারিনি। বেশ কয়েকটি এটিএম বুথ ঘুরে আমার মতো অনেককেই অসুবিধার সম্মুখীন হতে দেখেছি।’
তিনি বলেন, 'আজ ব্যাংক খোলা শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে এখানে চলে এসেছি।’
পূবালী ব্যাংকের দিলকুশা শাখায় টাকা তুলতে আসা অবসরপ্রাপ্ত জয়নাল উদ্দিন বলেন, ‘নগদ অর্থের অভাবে নানা সমস্যায় পড়েছি। কেনাকাটা ও ওষুধ কিনতে যেতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই স্বস্তি পেয়েছি যে ব্যাংকগুলো আজ খুলেছে। হাতে নগদ টাকা থাকলে মনে স্বস্তি থাকে।’
আরও পড়ুন: সীমিত পরিসরে খুলেছে অফিস-ব্যাংক; রাজধানীতে যানজট
খেলাপি ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংক ১১% বললেও প্রকৃত চিত্র ২৫%: ড. আহসান এইচ মনসুর
রবিবার সফল রপ্তানিকারকদের মধ্যে জাতীয় ট্রফি দেবেন প্রধানমন্ত্রী
সফল রপ্তানিকারকদের মধ্যে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি’ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের ট্রফি পাবে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান।
প্রধানমন্ত্রী রবিবার (১৪ জুলাই) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ ট্রফি তুলে দেওয়া হবে।
এ উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর টিসিবি ভবনে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
আরও পড়ুন: শহরের নির্ধারিত আয়ের মানুষ খুব বেশি চাপে আছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
এসময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য ঘোষণার পর থেকে হস্তশিল্পকে যেন রপ্তানি করা যায় সেলক্ষ্যে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। রপ্তানি বাড়লে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। রপ্তানি বাণিজ্যকে বাড়াতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি সহায়ক ভূমিকা রাখবে। চীন, ভারত, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার সুবিধা নিতে কর্মতৎপরতা চালাচ্ছে। সম্প্রতি চীন সফরে বাংলাদেশকে ম্যানুফেকচারার হাব করতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেখছি, যাতে চীনা সরকার সহযোগিতা করবে৷ রপ্তানি বাড়াতে ভারত সফরে বিমসটেক কী করে আরও কার্যকর করা যায় তা আলোচনা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল ব্যবসা, বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশে আসবে।’
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, আরজেএসসির নিবন্ধক (অতিরিক্ত সচিব) মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণে বাছাই কমিটির মাধ্যমে মোট ৩২টি খাতের রপ্তানিকারকদের মধ্যে থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের রপ্তানি আয়, আয়গত প্রবৃদ্ধি, নতুন পণ্যের সংযোজন, নতুন বাজারে প্রবেশ, কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন ইত্যাদি মূল্যায়নপূর্বক বিজয়ী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়। প্রতিটি খাতের জন্য কৃতি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ ট্রফি প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়া সব খাতের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি’ শিরোনামে একটি বিশেষ ট্রফিসহ (স্বর্ণ) মোট ২৯টি স্বর্ণ, ২৭টি রৌপ্য ও ২১টি ব্রোঞ্জ ট্রফি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রপ্তানি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে ইপিবি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
অর্থনৈতিক কূটনীতিতে জোর দিয়ে করেছেন প্রধানমন্ত্রী: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
ব্যাংক আলফালাহর অধিগ্রহণ শুরু করেছে ব্যাংক এশিয়া
পাকিস্তানভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশ অংশের অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ব্যাংক এশিয়া। এটি ব্যাংক এশিয়ার তৃতীয় বিদেশি ব্যাংক অধিগ্রহণ।
এর আগে ২০০১ সালে কানাডাভিত্তিক নোভা স্কশিয়া এবং আরেকটি পাকিস্তানি ব্যাংক মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যক্রম অধিগ্রহণ করে ব্যাংক এশিয়া।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক কর, নিরীক্ষা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (পিডব্লিউসি) বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশ কার্যক্রমের নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন পরিচালনা করা হচ্ছে।
প্রাথমিক অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা, যা ব্যাংক এশিয়া কয়েক কিস্তিতে পাকিস্তানকে হস্তান্তর করবে। চলতি বছরেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তারা।
গত মাসে ব্যাংক এশিয়া ও ব্যাংক আলফালাহ অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ছিলেন ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএনএম মাহফুজ।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ব্যাংক এশিয়া অধিগ্রহণের অর্থ একাধিক কিস্তিতে পরিশোধ করবে, যার একটি অংশ প্রাথমিক পর্যায়ের এক বছর পর পরিশোধ করা হবে।
চীনের সঙ্গে আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক চায় এফবিসিসিআই
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করতে চীনের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়তে চায় দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
এ লক্ষ্যে চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি) ও চায়না চেম্বার অব ইন্টারন্যাশনাল কমার্সের (সিসিওআইসি) সঙ্গে যোগাযোগ আরও জোরদার করতে চায় এফবিসিসিআই।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং, শাংরি-লা সার্কেলে চীনের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
সভায় আরও ছিলেন সিসিপিআইটি ও সিসিওআইসির ব্যবসায়ী নেতারা।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও প্রণোদনা ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনার সুযোগ লুফে নিতে চীনের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের শক্তিশালী অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কৌশলগত অবস্থান এবং অনুকূল ব্যবসায়িক নীতির কথা তুলে ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান এবং চীনা কোনো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে এফবিসিসিআই চীনা বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, হালকা প্রকৌশল খাতের সম্ভাবনা ও সুযোগকে কাজে লাগাতে সিসিপিআইটি ও সিসিওআইসির যৌথ গবেষণা উদ্যোগ এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপর বিশেষ জোর দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এসময় প্রযুক্তি স্থানান্তরে চীনা ব্যবসায়ীদের সহায়তাও চান মাহবুবুল আলম।
বৈঠকে সিসিপিআইটির মহাসচিব সান শিয়াও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের পারস্পরিক সুবিধাগুলোকে আরও শক্তিশালী করে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহের সুবিধার্থে একটি বৈশ্বিক করিডোর নির্মাণে সিসিপিআইটির কার্যক্রম ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
বৈঠকে আরও ছিলেন- এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. খায়রুল হুদা চপল, শমী কায়সার, মো. রাশাদুল হোসেন চৌধুরী (রনি), ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি. আহমদ, এফবিসিসিআইইর সাবেক সহসভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন, এফবিসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ আলী খোকন, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, সাবেক পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর, সিসিওআইসির মহাপরিচালক সু চিনলি, সিসিপিআইটির পরিচালক চু ইয়িংমিন, সিসিপিআইটির চাও চিন।
বাংলাদেশে জুন মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০.৪২ শতাংশ
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনে বাংলাদেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১০ দশমিক ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে, যা মে মাসে ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিবিএসের প্রতিবেদনে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও সামান্য কমার কথা বলা হয়েছে। মে মাসের ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে কমে জুনে ৯ দশমিক ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: কর কাঠামো সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছে আইসিএবি, ব্যাংক ঋণের কারণে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকির বিষয়ে সতর্কতা
দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার মে মাসের ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ থেকে জুনে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশে নেমেছে।
রবিবার (৭ জুলাই) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস।
তবে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ হওয়ায় এখন পণ্য ও সেবায় ভোক্তাদের ব্যয় হচ্ছে ১০৯ টাকা ৭২ পয়সা, যা আগের বছরের জুনে ছিল ১০০ টাকা।
এর প্রভাব পড়ছে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের ব্যক্তিদের ওপর। তাদের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে পরিবারের ব্যয় পরিচালনা করতে সবচেয়ে বেশি লড়াই করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হচ্ছে যা ধারাবাহিকভাবে ৯ শতাংশের ওপরেই রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও এখনও উল্লেখযোগ্য কোনো ফলাফল দেখা যায়নি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেশের অর্থনীতির জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'মূল্যস্ফীতি করের মতো কাজ করে, যা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে সমানভাবে প্রভাবিত করে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতিতে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তরা পরিবারকে সমর্থন করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয় বাড়ানোর জন্য লড়াই করে। গত দুই বছরের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে তাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে।’
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি রোধে সংকোচনমূলক নীতি নিয়ে অসন্তোষের ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর
মূল্যস্ফীতি কমাতে অপ্রক্রিয়াজাত খাদ্যের ওপর শুল্ককর সবসময় কম থাকে: ড. মশিউর রহমান
এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেজিতে ৩০ টাকা
শনিবার ঢাকার কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ১১০ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০ থেকে ৯৭ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
দেশি জাতের পেঁয়াজের প্রধান উৎস ফরিদপুর ও পাবনা থেকে পাইকারি বাজারে সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে।
শনিবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯৭ থেকে ১০৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, সরবরাহ সংকটের কারণে গত সপ্তাহে সব ধরনের দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছি, যেখানে দাম বেশি।’
আমদানি শুল্ক, পরিবহন ও অন্যান্য খরচ হিসাব করলে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম দাঁড়ায় ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। ফলে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও এখন বেশি বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ফের ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
মাজেদ বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের তুলনায় দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মালিবাগ, কারওয়ার বাজার ও হাতিরপুল বাজারের কয়েকজন ক্রেতা কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন।
মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা মাহমুদা আলম বলেন, ‘রাতারাতি পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি আমাদের বিস্মিত করেছে। এভাবে মাংস, সবজিসহ সব জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকলে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ কী করবে!’
রাজারবাগ এলাকার গৃহকর্মী জহুরা বেগম বলেন, ‘কাঁচাবাজারে সবকিছুর দাম বেশি। এখন আমরা পেঁয়াজকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মনে করি না। বেশিরভাগ সময় এটি ছাড়াই রান্না করার চেষ্টা করি।’
প্রায় ৬ মাস বন্ধ থাকার পর গত ৪ মে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর ১৪ মে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। গত ২৩ মার্চ পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ানো হয়।
নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি পাওয়া ৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও ছিল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচসহ সব সবজির দাম বাড়তি
লবিং-রেফারেন্স ছাড়াই চাকরি পেতে প্রয়োজনীয় কিছু দক্ষতা
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজার, সেই সঙ্গে বদলাচ্ছে বাজারের চাহিদাগুলো। এরপরেও লবিং ও রেফারেন্সের মতো চিরাচরিত বিষয়গুলো প্রায়ই প্রার্থীদের মৌলিক দক্ষতা ও যোগ্যতাকে ছাপিয়ে যায়। ফলে সঠিক জানাশোনা বা সুপারিশ ছাড়া চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করতে যেয়ে তাদেরকে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। এই বিড়ম্বনাগুলোকে পাশ কাটানোর জন্য দক্ষতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া উচিৎ। চাকরি ক্ষেত্রে যে সক্ষমতাগুলো দুর্লভ ঠিক সেই দক্ষতাগুলোকে অর্জন করা সম্ভব হলে আলাদা করে আর কোনো কিছুরই প্রয়োজন হয় না। চলুন, চাকুরী পেতে রেফারেন্স বা লবিংয়ের বিকল্প হতে পারে এমন কিছু অপরিহার্য দক্ষতার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
যে দক্ষতাগুলো চাকরি পেতে লবিং বা রেফারেন্সের বিকল্প হিসেবে কাজ করে
ব্র্যান্ডিং
লাখ লাখ প্রতিযোগীদের ভিড়ে আলাদাভাবে নিজেকে প্রকাশ করার একটি মোক্ষম উপায় হচ্ছে সেল্ফ-ব্র্যান্ডিং। এটি একজন ব্যক্তির কাজ, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও অর্জনগুলো পরিবেশনের মাধ্যমে তার একটি স্বতন্ত্র পেশাদার পরিচয় তৈরি করে। এর ফলে নির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রির নিয়োগকর্তারা তাদের নির্দিষ্ট কাজের জন্য সঠিক ব্যক্তিটিকে খুঁজে নিতে পারেন।
বর্তমানে অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আরও কার্যকরভাবে ব্র্যান্ডিং করা যায়। একটি পেশাদার লিঙ্কডইন প্রোফাইল, একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা পোর্টফোলিও বর্তমানে ডিজিটাল ব্র্যান্ডিংয়ের পরিচয় বহন করে। জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমগুলোর পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রি কেন্দ্রিক ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম ও ফোরামগুলোতে সক্রিয় থাকার মাধ্যমেও ব্র্যান্ডিং করা যায়।
এভাবে অনলাইনে ব্যক্তির পেশাগত অবস্থিতি নিয়োগকর্তার কাছে তাকে দৃশ্যমান করে তোলে। এছাড়া জব পোর্টালগুলো বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিত্তিতে নিয়োগকর্তা ও চাকরি প্রার্থীদের একত্রিত করে। এই ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যেও সুবিধা থাকে রিজুমি, সিভি ও ডিজিটাল পোর্টফোলিওর মাধ্যমে সেল্ফ-ব্র্যান্ডিংয়ের।
আরও পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
যোগাযোগের দক্ষতা
শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয়; জীবনের যে কোনো কাজের জন্য সঠিকভাবে যোগাযোগ করা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা। এটি মূলত মৌখিক ও লিখিত- এই দুইভাগে বিভিক্ত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আচরণগত ভাষা মৌখিক যোগাযোগকে সহজে বোধগম্য করে তোলে। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ নামে পরিচিত এই ধরনটি মূলত দেহের অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে কোনো কিছু বোঝানোর চেষ্টা করে। হাত বা মাথা নাড়ানোর সঙ্গে মুখের কথার সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া জরুরি।
একটি পূর্ণাঙ্গ যোগাযোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার জন্য এই সঙ্গতি অপরিহার্য। কেননা একটি যোগাযোগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে বক্তার কথা বলা, আর দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে শ্রোতার প্রত্যুত্তর। এই জবাবে শ্রোতা বক্তার কথা বুঝেছেন কি না তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সাক্ষাৎকার, মিটিং বা আড্ডার সময় মৌখিক যোগাযোগের দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। আর লিখিত যোগাযোগ সক্ষমতা কাজে লাগে ইমেইল, প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন পেশাদার নথির খসড়া তৈরির সময়। বলার সময় কথা ও লেখার সময় বাক্য যত স্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত হয় ততই তা শ্রোতা বা পাঠকের জন্য সহজ হয়ে ওঠে। এর সঙ্গে সব ধরনের মানুষের বোঝার নিমিত্তে সার্বজনীনতা বজায় রাখা আবশ্যক।
সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
চাকরির সঙ্গে সম্পর্কিত সাধারণ দায়িত্বগুলোতে আলাদা মান যুক্ত হয় সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে। এই দক্ষতার মধ্যে রয়েছে সঠিক সমস্যাটি শনাক্ত করা, বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তা বিশ্লেষণ করা এবং কার্যকর সমাধানটি বের করে সেই সমস্যাটির যেন পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: চাকরির ইন্টারভিউয়ে প্রত্যাশিত বেতন নিয়ে যেভাবে কথা বলবেন
নিয়োগকর্তারা এমন ব্যক্তিদের পছন্দ করেন, যারা অপ্রত্যাশিত সমস্যাগুলোর একটি সৃজনশীল সমাধান বের করতে পারে। এ ধরনের ব্যক্তিরা প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহের সময় তার খুটিনাটি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সমাধানের ক্ষেত্রে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হন। এতে বিশদ গবেষণা ও সুচিন্তার প্রয়োজন থাকলেও যারা যত দ্রুত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেন তারা প্রতিযোগিতায় তত বেশি এগিয়ে থাকেন।
যে কোনো পরিবেশে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া
শুধুমাত্র নতুন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নয়, নতুন পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেওয়া অভিজ্ঞ লোকদের জন্যও জরুরি। কেননা প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই আসছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। প্রতিনিয়ত সামনে আসছে নতুন নতুন শর্ত, নতুন পদ্ধতি ও নতুন পরিস্থিতি। আর সেই সঙ্গে পুরনো দায়িত্বের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে নতুন দায়িত্ব। এমন পরিবর্তনের ধাক্কা সামলাতে প্রায়ই প্রয়োজন হচ্ছে দ্রুততার সঙ্গে নতুন কিছু শিখে নেওয়া।
যারা নিজেদের আরামপ্রদ জায়গাটি একবার খুঁজে পাওয়ার পর সেখান থেকে আর বেরতে চান না, তারা এই অবস্থায় সমূহ বিড়ম্বনার শিকার হন। কারণ এক সময় যে কাজ বা দক্ষতাটি বেশ চাহিদা সম্পন্ন ছিল, কয়েক বছরের মধ্যে তার বাজার আর নাও থাকতে পারে। আর তাই ক্যারিয়ারের অগ্রগতির আরেক অর্থ হচ্ছে অভিযোজন ক্ষমতা।
দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রবণতা
একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মানেই অনেক লোকের সমাগম। আর যে কাজে যত বেশি লোক জড়িত থাকে সে কাজে তত বেশি প্রয়োজন হয় সংগঠনের ক্ষমতা। এর জন্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তির মনস্তত্ব ভালোভাবে বোঝার দরকার হয়। এর ধারাবাহিকতায় আরও যুক্ত হয় কাজের পদ্ধতিগত নির্দেশনা প্রদান, কাজ ভাগ করে সমবন্টন ও কোনো সমস্যা হলে সহযোগিতা করা। অর্থাৎ এখানে একসঙ্গে দুটি দক্ষতার প্রয়োজন- এক, যোগাযোগ এবং দুই, সমস্যা সমাধান।
আরও পড়ুন: চাকরির জন্য সিভি তৈরিতে যে বিষয়গুলো পরিহার করবেন
একাধিক মানুষের কারবার থাকলে স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ছোট-বড় দ্বন্দ্বের ব্যাপার থাকে। তাই এখানে দরকার হয় সমঝোতা, আপোস ও গঠনমূলক প্রতিক্রিয়ার। সহকর্মীদের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করা হলে লক্ষ্য অর্জন সহজ হয় ও সেই সঙ্গে কাজের প্রতি সন্তুষ্টিও থাকে।
সময়ানুবর্তিতা
যে কোনো উৎপাদনশীলতাকে তার স্বর্ণশিখরে পৌঁছে দিতে পারে সময়ানুবর্তিতা। জীবনের নানা ক্ষেত্রে সারাদিনে কাজের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাছাড়া চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান থেকে ঠিক করে দেওয়া লক্ষ্যকে অর্জন করতেও অনেক বেগ পেতে হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুয়েকটা কাজ বেশি সম্পন্ন করা সম্ভব হলেও অন্যান্যদের থেকে একটু এগিয়ে থাকা যায়। এরকম কাজের চাপের ক্ষেত্রে গুরুত্বের ভিত্তিতে কাজগুলোকে আগে-পরে সাজানো উচিৎ।
প্রত্যেকটি কাজের জন্য ঠিক করতে হবে একটি নির্দিষ্ট সময়। অতঃপর সেই সময় অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই নির্দিষ্ট কাজটি করার ক্ষেত্রে বদ্ধ পরিকর থাকতে হবে। এভাবে প্রতিদিন নিজের সঙ্গে নিজেই প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া যেতে পারে।
মধ্যস্থতা বা আপোসের দক্ষতা
বিভিন্ন পেশাগত পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষের জন্য সুবিধাজনক ফলাফল অর্জনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপোসের দক্ষতা। চাকরির ইন্টারভিউয়ে বেতন, নতুন বিনিয়োগ বা ঋণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, কিংবা নানা ধরনের প্রকল্পের শর্তাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই। এমনকি প্রতিটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মৌলিক কাজ তথা পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য এই দক্ষতা থাকার আবশ্যক। এই দক্ষতার এক বিরাট অংশজুড়ে রয়েছে সঠিক যোগাযোগ।
আরও পড়ুন: ইউটিউব ভিডিও স্ক্রিপ্ট রাইটিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা
এর সঙ্গে যুক্ত হয় কৌশলগত চিন্তাভাবনা এবং প্রত্যেক পক্ষের চাহিদার ব্যাপারে সম্যক ধারণা। এখানে সার্বিকভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোকে উপজীব্য করে আলোচনায় দৃঢ়তা রাখা জরুরি। তবে সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হয় কূটনৈতিক আলোচনা যেন দ্বন্দ্বের দিকে পরিচালিত না করে।
আত্মবিশ্বাস
এটি এমন এক মৌলিক বৈশিষ্ট্য যার অভাবে যথেষ্ট পারদর্শিতা থাকার পরেও নিমেষেই তা মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে। একজন আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিদের নিজের কর্মক্ষমতার ব্যাপারে দৃঢ় ভাবে অবস্থান নিতে এবং তার কাজ সংক্রান্ত ব্যাপারে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত দিতে পারে। এতে করে যিনি কাজ দিচ্ছেন তিনি সেই ব্যক্তির উপর পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন।
যে কোনো জরুরি অবস্থায় এ ধরনের ব্যক্তিরা তার আশেপাশের লোকদের পরম নির্ভরতার খোরাক যোগান। একটি টিমে কোনো সদস্য যখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন, তখন তার সহকর্মীরা লক্ষ্য অর্জনে নিশ্চয়তা বোধ করেন। এই মানসিকতা তাদের প্রত্যেকের দিক থেকে শতভাগ চেষ্টা করার ইন্ধন যোগায়।
ডিজিটাল সাক্ষরতা
বর্তমানের প্রযুক্তি-নির্ভর কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগের জায়গা দখল করে নিচ্ছে ডিজিটাল ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সফ্টওয়্যার। এমনকি যে প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্য-প্রযুক্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরক্ষ কোনো ভাবেই জড়িত নয়, সেগুলোতেও এখন হরহামেশাই ব্যবহার হচ্ছে নানান ধরনের ডিজিটাল টুল্স।
আরও পড়ুন: চাকরির ইন্টারভিউয়ে নিজেকে শান্ত রাখার উপায়
মাইক্রোসফ্ট অফিস, গুগল ওয়ার্কস্পেস, হোয়াট্সঅ্যাপ এবং জুমের মতো অ্যাপ্লিকেশনগুলো চালানোর দক্ষতা কোনো চাকরি বিজ্ঞপ্তিতে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয় না। নিদেনপক্ষে ধরেই নেওয়া হয় যে কম্পিউটার কিবোর্ড টাইপ করার মতো এই বিষয়গুলোতেও প্রার্থীর অভ্যস্ততা রয়েছে। তাছাড়া ইন্টারনেট নির্ভর দুনিয়ায় ডিজিটাল সাক্ষরতা না থাকলে চাকরির জন্য সেল্ফ-ব্র্যান্ডিং ও যে কোনো মুহূর্তে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব নয়।
পেশাদারিত্ব
ইন্ডাস্ট্রি ভেদে প্রতিটি কাজেরই রয়েছে কিছু নিজস্ব নীতিমালা। এই নিয়মগুলোর আঙ্গিকে একজন ব্যক্তি তার কাজের প্রতি কতটা নিবেদিত তা যাচাই করা হয়। যেমন প্রতিষ্ঠানগত আচরণপ্রথা, সময়ানুবর্তিতা, উপযুক্ত পোশাক, গোপনীয়তা ও ব্যক্তিগত আবেগের বশবর্তী হয়ে বিচার না করা। এগুলো কেবল কর্মজীবনের জন্য পৃথক কোনো বৈশিষ্ট্য নয়। বরং শিক্ষা জীবন থেকে একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তির মাঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এগুলোর আবির্ভাব ঘটে।
বিশেষ করে অনুকরণ প্রক্রিয়াটি শৈশব থেকেই মানুষের মধ্যে বিদ্যমান। তাই পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও অনেকেই অফিসের অদ্ভূত নিয়ম-কানুনেও অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। এখানে সেই অভিযোজন ক্ষমতাও চলে আসে, যা বিশেষ করে শিক্ষানবীশদের জন্য অতীব জরুরি। তাছাড়া এই গুণাবলী সহকর্মী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্ক তৈরিতে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে।
শেষাংশ
এই দক্ষতাগুলোর সঠিক প্রদর্শনের মাধ্যমে লবিং বা রেফারেন্স নির্ভর চাকরির বাজারের দৃশ্যপটে অনেকটাই পরিবর্তন আনা যেতে পারে। বিশেষ করে ডিজিটাল সাক্ষরতার সঙ্গে অনলাইন মাধ্যমগুলোতে নিজের ব্র্যান্ডিং করাটা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ উপযোগী। কেননা এখন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলার পূর্বেই তার ব্যাপারে সম্যক ধারণা লাভের চেষ্টা করে। এখানে যাচাই হয়ে যায়- প্রার্থী কি কি সমস্যা সমাধানে পটু, কতটা বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেছে, এবং তাতে কতটুকু সুসংঘটিত থাকার বিষয় ছিল।
আরও পড়ুন: কর্মজীবনে সাফল্যের জন্য কিভাবে নিজেকে গ্রুমিং করবেন?
পরিশেষে সরাসরি সাক্ষাতের সময় এই ধারণাগুলো প্রতিফলনের পাশাপাশি দেখে নেওয়া হয় তার আপোস করার ক্ষমতা, আত্মবিশ্বাস ও পেশাদারিত্ব। এই দক্ষতাগুলো কেবল চাকরি পাওয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তারও পরে কর্মজীবনে উত্তরোত্তর অগ্রগতির জন্যও সহায়ক।
ইকোনোমিক জোনে ২১.৮৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে চীনের কোম্পানির চুক্তি সই
বেপজার অর্থনৈতিক অঞ্চলে ক্যারি ব্যাগ ও লাগেজ উৎপাদন শিল্প স্থাপনে ২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে চীনের কোম্পানি ইউনিকর্ন হ্যান্ডব্যাগ লিমিটেড।
বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকায় বেপজা কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবির এবং ইউনিকর্ন হ্যান্ডব্যাগ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঝেং শুয়ং নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল: ৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ৪ কোম্পানি
চীনের এই কোম্পানি বছরে ১৭ লাখ ব্যাকপ্যাক, হ্যান্ডব্যাগ, মানিব্যাগ, ব্যাগ, ক্যাপ, বেল্ট ও লাগেজ উৎপাদন করবে। এতে ২ হাজার বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ইউনিকর্ন হ্যান্ডব্যাগ লিমিটেডকে স্বাগত জানিয়ে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করেন, তাদের বিনিয়োগ বাংলাদেশের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখবে।আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ রপ্তানি, বিনিয়োগ ও চাকরি দেখলো ইপিজেড: বেপজা
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায়
ডলার সংকটে ব্যবসায়ীরা চাহিদা মতো এলসি করতে না পারায় গেল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে আমদানি কমলেও কাস্টমস হাউসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৬ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের গেল অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৬ হাজার ১৬৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭৮০ টন পণ্য।
আরও পড়ুন: ৫ দিন পর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি কামাল উদ্দিন শিমুল জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের বিনিময় হারে ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গত কয়েক বছর ধরে এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এতে আমদানি কমায় বছরের শুরুতে রাজস্ব ঘাটতি ছিল দ্বিগুণ পরিমাণ। তবে বছরের শেষে উচ্চ শুল্ক হারের পণ্য আমদানি বেশি হওয়ায় রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে।
আমদানিকারক মনির হোসেন জানান, বৈশ্বিক মন্দায় ডলার সংকট দেখিয়ে দেশের ব্যাংকগুলো বিনিময় হার বাড়ানোয় এলসি খুলতে পারেননি অনেক ব্যবসায়ী। এতে করে বেনাপোল দিয়ে আমদানি কমেছে ব্যাপক হারে। তবে সরকার হঠাৎ বিভিন্ন পণ্য আমদানি উপর শুল্ক বাড়ানোয় কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিম জানান, অর্থবছরে শেষ দিকে উচ্চ শুল্ক হারের বেশি আমদানি এবং সরকার শুল্কহার বাড়ানোয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি রোধে এ বন্দরে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়। অনিয়ম ধরা পড়লে রাজস্ব পরিশোধ পূর্বক ২০০ শতাংশ জরিমানা আদায় করা হচ্ছে বলে কাস্টমসে রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
তাছাড়া গেল অর্থবছরে সরকারের মেগা প্রকল্পের পণ্য বেনাপোল দিয়ে আমদানি হয়েছে। এতে করে কাস্টমসের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি