বিশ্ব
ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চাপ দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
তিন বছর আগে ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমণ করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভে ১৮০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে। মার্কিন এই সহায়তার জন্য জেলেনস্কি যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেননি বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। ওভাল অফিসের একটি বৈঠক উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডার মধ্যে ভেস্তে যাওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পদক্ষেপটি নিলেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্প একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর দিকে মনোনিবেশ করছেন এবং জেলেনস্কিকে সেই লক্ষ্যে 'প্রতিশ্রুতিবদ্ধ' দেখতে চান।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি সমাধানে ভূমিকা রাখছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা 'স্থগিত ও পর্যালোচনা' করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা সহায়তার বিষয়ে এসব কথা বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানান।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
ওই কর্মকর্তা বলেন, যতক্ষণ না রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি পান, ততক্ষণ ট্রাম্পের এই আদেশ কার্যকর থাকবে।
ইউক্রেনকে কংগ্রেসের অনুমোদিত সহায়তা আটকে রাখার প্রায় পাঁচ বছর পর সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হলো। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে জেলেনস্কিকে চাপ দেন ট্রাম্প।
২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি গর্ব করেও বলেছিলেন যে, তিনি একদিনের মধ্যে লড়াই বন্ধ করতে পারেন।যুদ্ধ নিয়ে জেলেনস্কির প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে নিজের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালে শান্তি বজায় রাখার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিশ্বাস করা যেতে পারে। এমনকি তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুতিনের প্রশংসাও করে আসছিলেন।
এর আগে সোমবার ট্রাম্প জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেন, যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভবত 'এখনও অনেক দূরে'। অন্যদিকে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের বিষয়ে ইতিবাচক প্রস্তাব দেওয়ার চেষ্টা করেন জেলেনস্কি। এসময় তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধ অবসানে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে।
৩০০ দিন আগে
বাংলাদেশিসহ ১০ অভিবাসীকে গুয়ান্তানামো বে পাঠানোর সিদ্ধান্ত, মামলা
যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির আওতায় বাংলাদেশিসহ ১০ অভিবাসীকে কিউবার কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের ঘটনায় মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১ মার্চ) ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) এই মামলা করেছে।
সংগঠনটির ভাষ্যে, টেক্সাস, অ্যারিজোনা ও ভার্জিনিয়া থেকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভেনেজুয়েলার যে নাগরিকদের আটক করা হয়েছে, তারা কোনো গ্যাং সদস্য বা ঝুঁকিপূর্ণ অপরাধীও নন। অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গুয়ান্তানামো বে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনার পেছনে বৈধ কোনো যুক্তি নেই বলে অভিমত দেয় এসিএলইউ।
আরও পড়ুন: অভিবাসন নীতিতে কঠোর ট্রাম্প, তবে ধনী হলে অন্য কথা
এছাড়া ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এসিএলইউ জানায়, মামলার ১০ জন আটক ব্যক্তির সবাইকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চূড়ান্তভাবে নির্বাসিত করার আদেশ রয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ইতোমধ্যে গুয়ান্তানামো বেতে স্থানান্তরের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিশিয়া ম্যাকলাফলিন শনিবার এসিএলিউয়ের এই আইনি চ্যালেঞ্জকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতে ওই এজেন্সির দায়ের করা মামলার বৈধতা নিয়ে লড়বে ট্রাম্প প্রশাসন।
দ্বিতীয় মেয়াদে মসনদে বসেই অবৈধ অভিসাসীদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হন ট্রাম্প। অভিবাসীদের আটক করে পাঠাতে শুরু করেন নিজ নিজ দেশে।
সূত্র: পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন
৩০১ দিন আগে
‘ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে’ থাকা ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার পর এবার ইউক্রেনের সমর্থনে ইউরোপকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এ সময় ইউরোপের দেশগুলোতে সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারসহ ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে একটি কার্যকরী পরিকল্পনা প্রণয়নের ঘোষণা দেন তিনি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি দেশেরই উচিত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসা। যার কাছে যা আছে, তা নিয়েই অবদান রাখতে হবে। সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে এই বোঝা ভাগ করে নিতে হবে।’
স্থানীয় সময় রবিবার (২ মার্চ) ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে রাজধানী লন্ডনে আয়োজিত সম্মেলনে এসব কথা বলেন স্টারমার। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
সম্মেলনে ইউরোপের দেশগুলোকে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে পরামর্শ দেন স্টারমার। স্টারমার বলেন, ‘ইউরোপ বর্তমানে ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে রয়েছে। শুধু আলোচনা নয়; এবার সময় এসেছে পদক্ষেপ নেওয়ার।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অভ্যর্থনা ও পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন জেলেনস্কি
এর আগে গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাজ্যে বার্ষিক প্রতিরক্ষা খরচ জিডিপির ২.৫ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেন কিয়ার স্টারমার। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত ইউক্রেন ইস্যুতে সহাবস্থানে ছিল ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে হোয়াইট ইউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের সঙ্গেই ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতিতে এলো নাটকীয় পরিবর্তন।
গত তিন বছর ধরে একযোগেই ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। তবে সেই নীতির পরিবর্তন করে ইউক্রেন ও ইউরোপকে এক প্রকার পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসলেন ট্রাম্প প্রশাসন।
এখানেই মতানৈক্য তৈরি হয় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের। এরপর যুক্তরাষ্ট্রকে যে আর আগের মতো ইউক্রেনের পাশে পাওয়া যাবে না; তা আরও নিশ্চিত করে দিয়েছে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসের ঘটনা।
ওই ঘটনার পর আয়োজিত এই সম্মেলনকে স্টারমার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব দূর করাসহ শুক্রবারের আলোচনার আগে শান্তি আলোচনা যে অবস্থানে ছিলো সেখানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য একটা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস ইউরোপীয়দের
এছাড়া ইউক্রেন ইস্যুতে এবার কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন স্টারমার। তিনি বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সম্মেলনের আলোচনায় ৪টি বিষয়ে ইউরোপীয়দের এক হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং শান্তি আলোচনায় কিয়েভকে রাখা, ভবিষ্যতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে কাজ করবে ইউরোপ এবং সর্বোপরি ইউক্রেনের নিরাপত্তায় জোট গঠন ও দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে ইউরোপের দেশগুলো একমত হয়েছেন। এ লক্ষ্যেই তারা কাজ করবে বলে জানান।
এর পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনকে ১৬০ কোটি পাউন্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। এই অর্থে ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হবে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে।
তবে ইউক্রেনের সমর্থনে নেওয়া যেকোনো পরিকল্পনায় বাধ সাধতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্টারমার বলেন, এক্ষেত্রে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন। স্পষ্ট করে কিছু না বললেও সম্মেলনের আগে সংবাদ সংস্থা বিবিসিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ ব্যাপারে তীব্র আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
পরবর্তীতে একটি আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আরও আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। স্টারমার জানান, তিনি পুতিনকে বিশ্বাস করেন না কিন্তু ট্রাম্পের প্রতি তার আস্থা রয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনে জল, আকাশ ও স্থলপথে এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেন কিয়ার স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। এ সমযের মধ্যে তারা স্থায়ীভাবে ইউক্রেনে শান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চিতের বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
৩০১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষার মর্যাদা পেল ইংরেজি
ইংরেজিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষার মর্যাদা দিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে স্বীকৃত জাতীয় ভাষা পেল যুক্তরাষ্ট্র। এতে সেখানে ভিন্ন ভাষায় যারা কথা বলেন, তারা কোণঠাসা হয়ে যেতে পারেন বলেন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১ মার্চ) তার এই আদেশের কারণে সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো—যারা কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল পায়—ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় নথি সরবরাহ ও সেবা দেবে কিনা; সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। অর্থাৎ অন্য ভাষায় যদি তারা সেবা দিতে না চান, তাহলে আইনগতভাবে তাদের বাধ্য করা যাবে না।
২০০০ সালে অ-ইংরেজিভাষীদের ভাষাগত সহায়তা করতে সরকার কিংবা সংস্থাগুলোকে বাধ্য করে দিয়ে একটি ম্যান্ডেট জারি করেছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। নতুন এই আদেশের মাধ্যমে সেটি বাতিল হয়ে গেছে।-খবর এপি, ওয়াশিংটন পোস্ট ও বিবিসির।
ট্রাম্পের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে কেবল যোগাযোগকেই সহজ করা হয়নি, আমেরিকার জাতীয় মূল্যবোধকেও জোরদার করা হয়েছে। একটি সুসংগঠিত ও দক্ষ সমাজ গড়তে এটি সহায়ক হবে।আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
‘এই নীতি আমাদের জাতীয় ভাষা আত্মস্থ করতে ও শেখায় নতুন আমেরিকানদের উৎসাহিত করবে। এতে যুক্তরাষ্ট্র একটি অভিন্ন বসতি হিসেবে গড়ে উঠবে; পাশাপাশি আমেরিকার স্বপ্নপূরণে নতুন নাগরিকদের ক্ষমতায়ন করবে,’ দাবি করা হয় নির্বাহী আদেশে।
আরও বলা হয়, ‘ইংরেজিতে কথা বলার মধ্য দিয়ে তাদের জন্য কেবল অর্থনৈতিক দরজাই খুলে যাবে না, নতুন আগন্তুকরা নিজেদের কমিউনিটির সঙ্গে আরও বেশি করে যুক্ত হতে ও জাতীয় ঐতিহ্যকে গ্রহণ করতে পারবেন। আমাদের সমাজকে তারা আরও বেশি কিছু দিতে পারবেন।’
ইংরেজিকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দিতে প্রচার চালিয়ে আসছে ইউ. এস. ইংলিশ নামের একটি গোষ্ঠী। তারা বলেন, ‘এরইমধ্যে ইংরেজিকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিয়ে ৩০টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে আইন পাশ করা হয়েছে। আলাস্কা ও হাওয়ায় অঙ্গরাজ্যে একাধিক আদি আমেরিকান ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।’
গেল কয়েক দশক ধরেই ইংরেজিকে রাষ্ট্রভাষা করে আইন পাশের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন দেশটির রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা। কিন্তু তারা সফল হতে পারেননি। যারা তাদের বিরোধিতা করছেন, তাদের দাবি—‘বিপুলসংখ্যক মানুষ ইংরেজিতে কথা বলছেন। কাজেই এটিকে আলাদা করে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দরকার নেই।’
এছাড়া এতে অ-ইংরেজিভাষীদের ওপর বৈষম্য চাপিয়ে দেওয়া হবে বলে মনে করেন তারা।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় যারা ইংরেজিভাষী না, তাদের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘খুবই উদ্ভট বিষয় হচ্ছে, তাদের ভাষা আছে, কিন্তু এ দেশের কেউ তা শোনেননি। এটি খুবই ভয়ঙ্কর বিষয়।’
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটের স্পেনিশ ভাষার সংস্করণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ধরনের পরিবর্তনে হিস্পানিকরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
তখন হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘তারা ওয়েবসাইটের স্পেনিশ ভাষার সংস্কারণ ফিরিয়ে আনবেন।’ যদিও এখন পর্যন্ত সেটা করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হোয়াইট হাউসের কোনো সাড়া মেলেনি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদেও হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটের স্পেনিশ ভাষার সংস্করণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেটি পুনর্বহাল করা হয়েছিল।
মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর তথ্যানুসারে, দেশটির ৩৪ কোটি বাসিন্দার মধ্যে ছয় কোটি ৮০ লাখ ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলেন। ১৬০টির বেশি আদি আমেরিকান ভাষা আছে।
ইংরেজির পরেই স্পেনিশ, বিভিন্ন চীনা ভাষা ও আরবি ভাষীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের প্রায় ১৮০টি দেশের সরকারি ভাষা আছে। কোনো কোনো দেশে একাধিক ভাষাকেও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে কোনো সরকারি ভাষা নেই।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড ইলেক্টরাল অ্যাসিস্ট্যান্স জানিয়েছে, সরকারি দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় যে ভাষা ব্যবহার করা হয়, সেটিই সরকারি ভাষা। কোনো একটি ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে নথিভুক্ত করার মধ্য দিয়ে একটি রাষ্ট্রের চরিত্র ও নাগরিকদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নির্ধারিত হয়ে যায়।
এতে বিশেষ একটি গোষ্ঠী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে যেতে পারে এবং যাদের ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয় না, তারা কোণঠাসা হয়ে যেতে পারেন বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
৩০১ দিন আগে
গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়াতে ইসরায়েলের প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় উপত্যকাটিতে সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
স্থানীয় সময় রবিবার (২ মার্চ) তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাবটি মানতে হামাস অস্বীকৃতি জানানোর পরেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে নেতানিয়াহু।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, উইটকফের প্রস্তাব না মানায় ও স্থানীয় সময় শনিবার (১ মার্চ) যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তকে প্রস্তাব মানতে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ‘সস্তা ব্ল্যাকমেইল’ ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছেন হামাসের এক মুখপাত্র।এ সময় গাজায় সহায়তা সরবরাহ পুনরায় চালু করতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।এর আগে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান মতানৈক্য দূর করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ছয় সপ্তাহের জন্য প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন উইটকফ।
শনিবার রাতে মুসলমানদের পবিত্র রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার (বসন্ত) উৎসব উপলক্ষে আগামী ছয় সপ্তাহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সাময়িকভাবে বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদন করে ইসরায়েল সরকার।
উইটকফের দেওয়া ওই প্রস্তাব অনুমোদন করে ইসরায়েল জানায় জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে তা কার্যকর করা হবে। এরপরে হামাস জানায়, তারা ইসরায়েলের সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে। তবে অবশ্যই তা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে। যেখানে মুক্তি পাবেন ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিরা। এছাড়াও হামাসের দাবি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনাপ্রত্যাহার।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
চলতি সপ্তাহে মিসরে ইসরায়েল ও হামাসে মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু করার থাকলেও বেঁকে বসে ইসরায়েল।
ইহুদি রাষ্ট্রটি চাইছে প্রথম ধাপের মেয়াদই সাময়িকভাবে বাড়াতে। অন্যদিকে হামাদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনাপ্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
তবে ইসরায়েল জানিয়েছে হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আর কোনো আলোচনা করবে না তারা।
কিন্তু, মেয়াদ বাড়ানোর পরও যদি আলোচনা ফলপ্রসূ না হয় তাহলে ইসরায়েল পুনরায় হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হামাস।
এদিকে, প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর এই প্রস্তাব না মানলে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হামাসকে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল প্রশাসন। ইতোমধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল।হামাসের মুখপাত্র বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ইসরায়েল আরেকবার তাদের নিকৃষ্ট মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তিনি ইসরায়েলের এই নিষ্ঠুরতা বন্ধে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্ববান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে হঠাৎ হামলা চালায় হামাস। সে সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। পাশাপাশি আরও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে পরের দিন থেকে গাজাজুড়ে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আকাশ ও স্থলপথে গত প্রায় ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, এই সময়ে হামাসের ১৭ হাজারের বেশি যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এই তথ্যের পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসনগরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। সেখানকার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে; ধ্বংস হয়েছে অবকাঠামো, ভেঙে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। পাশাপাশি লড়াই চলাকালে প্রয়োজনীয় ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে গাজাবাসীর।
সূত্র: এপি/বিবিসি
৩০২ দিন আগে
যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অভ্যর্থনা ও পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন জেলেনস্কি
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের ভর্ৎসনার শিকার হওয়ার পর এবার যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অভ্যর্থনা পাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তাকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার।
স্থানীয় সময় রবিবার (২ মার্চ) স্যান্ডরিংহামে তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস। এছাড়া শনিবার স্টারমারের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে তার।-খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের
স্টারমারের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রবিবার লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের একটি বড় সম্মেলনের আগে দুই নেতার মধ্যে এই বৈঠক হয়েছে।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের ঐক্য তুলে ধরতে এই বিশেষ প্রতিরক্ষা সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: 'অবিলম্বে' রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের
সম্মেলন চলাকালীন রাজা চার্লসের সঙ্গে বৈঠক করবেন জেলেনস্কি। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, এরমধ্য দিয়ে জেলেনস্কিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের অবিচল সমর্থনের বিষয়টিই উঠে এসেছে। ওয়েস্টমিনিস্টারে রাজকীয় বৈঠকের অর্থ হচ্ছে, ট্রাম্পের সমান মর্যাদা দিয়ে জেলেনস্কিকে যুক্তরাজ্যে স্বাগত জানানো হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অনুরোধেই রাজা চার্ণসের সঙ্গে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার তাতে সায় দিয়েছে।
ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনিবার রাতে যুক্তরাজ্যে পা রাখেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ রাজা আমার সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হয়েছেন, তাতে আমি অনেক খুশি।’
ডাউনিং স্ট্রিটে বৈঠকে জেলেনস্কিকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন কিয়ের স্টারমার। এ সময়ে ইউক্রেনে সামরিক সরবরাহে দুই দশমিক ২৬ বিলিয়ন পাউন্ডের একটি ঋণচুক্তিতে সই করেন দুই নেতা। জব্দ করা রুশ অর্থ দিয়ে এই ঋণ শোধ করা হবে।
জেলেনস্কি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘এমন বন্ধু পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। যুদ্ধের শুরু থেকেই ব্রিটিশ জনগণ ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে আসছেন।’
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গেও কথা বলেন কিয়ের স্টারমার। তবে ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের এসব তৎপরতা কিছুটা আলোহীন হয়ে পড়েছে।
কারণ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের মধ্যকার সম্পর্কের সেতু হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন স্টারমার। দুদিন আগে ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইউরোপীয় প্রতিরক্ষায় সম্পৃক্ততা কমাতে চাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। যে কারণে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি চুক্তিতে মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাচ্ছে কিয়েভ।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
হোয়াইট হাউসে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বের পর সম্পর্ক ঝালাই করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ওভাল অফিসে কঠিন সংলাপ হওয়া সত্ত্বেও আমরা কৌশলগত অংশীদার থাকব। আমাদের যৌথ কর্তব্যকে সত্যিকারভাবে বোঝার জন্য পরস্পরের প্রতি সৎ ও দ্বিধাহীন থাকতে হবে।’
লন্ডনের স্যানস্টেড বিমানবন্দরে তার বিমান অবতরণের পর সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন থাকা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে চাচ্ছেন, কিন্তু আমরা যতটা চাই, কেউই ততটা শান্তি চান না।’
৩০২ দিন আগে
ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস ইউরোপীয়দের
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার পর ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটেছে। হোয়াইট হাউসের আমন্ত্রিত একজন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
ট্রাম্পের এই আচরণের পর সরব হয়েছেন ইউরোপের নেতারাও। গত মাসে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপের নেতাদেরও তুলোধুনা করতে দেখা গিয়েছিল মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে।
আগে থেকেই তার আচরণে অসন্তুষ্ট ইউরোপের নেতারা, তাই বেশ জোরে-সোরেই জেলেনস্কির পক্ষ অবলম্বন করেছেন এবার। এ ঘটনায় যুক্তরাজ্যের ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থায়ী শান্তির পথে অগ্রসর হওয়ার উপায় খুঁজে পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্টারমার।
শুক্রবার রাতে জেলেনস্কিকে সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে পোস্ট দিয়েছেন। এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন লিখেছেন, ‘আপনার এই ব্যক্তিত্ব ইউক্রেনের জনগণের সাহসিকতাকে সম্মানিত করেছে।’
জেলেনস্কিকে সাহসী ও নির্ভীক থাকতে অনুপ্রেরণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি একা নন সম্মানিত প্রেসিডেন্ট, আমরা রয়েছি আপনার পাশে।’
জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেরৎস এক্সে লিখেছেন, ‘প্রিয় ভলোদিমির জেলেনস্কি, ভালো-খারাপ উভয় সময়ে আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি।’
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান ট্রাম্পের প্রশংসা করে এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘শক্তিশালীরা শান্তি চায়, আর দুর্বলরা যুদ্ধ। এ কারণে নানা ধরনের বাধা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তির জন্য সাহসিকতার সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ধন্যবাদ মি. প্রেসিডেন্ট।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক চলতি সপ্তাহে
আবার ইউক্রেনের পক্ষ সমর্থন করে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন এক্সে লিখেছেন, ‘আপনারা শুধু নিজেদের স্বাধীনতার জন্যই নয়, সমগ্র ইউরোপের স্বাধীনতার জন্যই লড়ছেন।’
ওই পোস্টে তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসন যদি ছড়িয়ে পড়ে, তবে নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলোর জন্যও ঝুঁকি তৈরি হবে। শুক্রবারের ঘটনার পর ইউক্রেনসহ অন্যান্য বিষয়ে ইউরোপীয়দের সাথে খোলাখুলি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।
এ ছাড়াও ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর খালি হাতে হোয়াইট হাউস ছাড়লেও জেলেনস্কি নিজ দেশের জনগণের কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন।
৩০৩ দিন আগে
রমজানে বিমান ভাড়া ও মহাসড়কে টোল কমাল ইন্দোনেশিয়া
পবিত্র রমজান মাসে অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানো ও বেশ কয়েকটি প্রধান মহাসড়কে টোল কমানোর জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো।-খবর সিনহুয়া
বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়ায় শনিবার (১ মার্চ) থেকে রমজান শুরু হচ্ছে। রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ইন্দোনেশীয়রা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যান। তখন বিমান ভ্রমণ বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এটি তাদের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে, স্থানীয় ভাষায় যেটিকে মুদিক বলা হয়।
জাকার্তা এবং সুরাবায়ার মতো প্রধান শহরগুলোতে ঈদের আগে বাড়ি ফেরার ভিড় বিশেষত তীব্র হয়। পরিবারের টানে দেশের মাটিতে ফিরে যান ভ্রমণকারীরা। এ সময় ট্রেন স্টেশন এবং বিমানবন্দরগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকে, একই সঙ্গে মহাসড়কগুলোতেও যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: ‘বিমানের আগাম সিট বুকিং ও টিকিট ব্লকিং শূন্যের কোটায়’
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বিমান ভাড়া কমানো হবে এবং প্রধান মহাসড়কের টোল কমানো হবে।
লোকজনের মুদিক অভিজ্ঞতা সহজ ও আরামদায়ক করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মুসলিম সম্প্রদায়কে রোজা রাখতে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ছুটি উদযাপনে সহায়তা করার জন্য সরকারের চেষ্টার কমতি নেই।’
৩০৩ দিন আগে
ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর খালি হাতে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তা সত্ত্বেও নিজ দেশের জনগণের কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন তিনি। দেশের স্বার্থে নতজানু না-হওয়ার কারণে প্রশংসায় ভেসেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ওভাল অফিসে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। এ সময় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন দুই প্রেসিডেন্ট।
শুধু ট্রাম্পই নন; যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তর্কে জড়ান। জেলেনস্কি ওভাল অফিসের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়াও জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেননি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভ্যান্স।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে চুক্তি না-হলেও ইউক্রেনের জনসাধারণের মন জয় করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেও, দেশের স্বার্থে আপস না করায় প্রশংসায় ভেসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খনিজ চুক্তি সই না করেই হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জেলেনস্কি
জেলেনস্কিকে ‘সিংহের’ সাথে তুলনা করে ইউক্রেনীয় নারী নাতালিয়া সেরহিয়েনকো (৬৭) বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সিংহের মতো লড়াই করেছেন। তাদের মধ্যে উতপ্ত বাক্যবিনিময় হলেও ইউক্রেনের স্বার্থ রক্ষা করেছেন তিনি।’
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের প্রধান ওলেহ সিনিহুবভ জেলেনস্কির প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আমাদের নেতা চাপের মুখেও ইউক্রেন ও ইউক্রেনীয়দের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়তা বজায় রেখেছেন। ... নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ আমরা শান্তি চাই।’
ওভাল অফিসের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যা হয়েছে; সেটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুরোপরি অসম্মান হিসেবেই দেখছেন কিয়েভের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী আর্তেম ভাসিলিভ। তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, কিন্তু আমাদের যোদ্ধা, সৈনিক ও দেশবাসীর প্রতি পাচ্ছি পুরোপুরি অবজ্ঞা।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনের জনগণের সীমাহীন দুর্ভোগ ও কষ্ট বুঝতে পারছেন না বলে তার সমালোচনা করেন ভাসিলিভ। ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এটা (ইউক্রেনীয়দের কষ্ট) তিনি বুঝতে অক্ষম, তিনি কেবল একজন ব্যবসায়ী। তার কাছে টাকাই সবচেয়ে মূল্যবান।’
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খারসন শহরের প্রধান আলেকজান্ডার প্রোকুদিন বলেছেন, ‘এই ঘটনা প্রেসিডেন্ট ও আমাদের সবাইকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই এই সংকট কাটিয়ে উঠব।’
৩০৩ দিন আগে
'অবিলম্বে' রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তিনি এই আহ্বান জানান।
এসময় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানান। অন্যথায় তিনি মার্কিন সমর্থন হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলেও সতর্কও করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন তিন বছর আগে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি শান্তি চুক্তির জন্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
ওভাল অফিসের ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে এক উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের পর তিনি এই মন্তব্য করেন। ইউক্রেনের সঙ্গে ঘোষিত খনিজ চুক্তি জেলেনস্কির পক্ষ থেকে বাতিল করাকে 'অসম্মানজনক' বলে সমালোচনা করেন তিনি।
ওইদিন ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ভবিষ্যতে হামলা প্রতিরোধের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেবে না ইউক্রেন।
আরও পড়ুন: খনিজ চুক্তি সই না করেই হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জেলেনস্কি
৩০৩ দিন আগে