জীবনধারা
ভ্যালেন্টাইন’স ডে উদযাপনের সেরা গন্তব্য: ঢাকার কাছেই ১০ রিসোর্ট
হোক সে আপন নিবাস কিংবা ভিনদেশী অচেনা জায়গা, সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত মানুষটি পাশে থাকাটা আশেপাশের সবকিছুকেই যেন ঝাপসা করে দেয়। এরপরেও প্রত্যেকেই তার ভ্যালেন্টাইনের সঙ্গে কাটানো সময়টাকে ভালো লাগা দিয়ে ভরিয়ে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। পরিণয়টা নিরঙ্কুশ সিদ্ধি লাভ করে যখন তাতে যোগ হয় প্রকৃতিপ্রেম, রোমাঞ্চ ও মুক্তির উচ্ছ্বাস। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে ফিরে আসার শাসনটা এই স্বাধীনতাকে বাধ ভেঙে যেতে দেয় না। তখনি আসে কাছে কোথাও নিরিবিলিতে ঘুরতে যাওয়ার পায়তারা। আর ঠিক এই চাহিদাটিকে পূরণ করতেই ঢাকার অদূরে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন রিসোর্টগুলো। শহুরে যুগলবন্দিদের প্রতি এক অভূতপূর্ব ভালবাসা দিবসের অভিজ্ঞতার নিবেদন করে এই নৈসর্গিক স্থানগুলো। চলুন, সেগুলোর মধ্যে থেকে ঢাকার নিকটবর্তী মনোরম ১০টি রিসোর্টের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভ্যালেন্টাইন’স ডে উদযাপনের জন্য ঢাকার কাছেই ১০টি রিসোর্ট
জলেশ্বরী রিসোর্ট, গাজীপুর
সবুজ গাছ-গাছালি ঘেরা প্রায় ১০০ বিঘা জায়গার জলেশ্বরী রিসোর্টের অবস্থান গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুরের ফাউগান গ্রামে। অতিথিদের জন্য এখানে রয়েছে তিনটি সুসজ্জিত ভবন, সুইমিংপুল, রেস্টুরেন্ট এবং বিশাল খেলার মাঠ।
সাপ্তাহিক ছুটিসহ অন্যান্য সরকারি ছুটি দিন বাদে সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে কাপল ডে লং প্যাকেজের মূল্য ৬ হাজার টাকা। ছুটির দিনগুলোতে এর দাম রাখা হয় ৬ হাজার ৫০০ টাকা। এর বাইরে মান ভেদে রাত্রিযাপনের জন্য রুম ভাড়া নেওয়া হয় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা।
রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা দিয়ে রাজেন্দ্রপুর বাজারে তারপর ফাউগান বাজার পার হয়ে একটু সামনে গেলেই জলেশ্বরী রিসোর্ট।
আরও পড়ুন: স্বল্প বাজেটে ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার: অনুপম নিবেদনে প্রিয়জনের মুগ্ধতা
ছুটি রিসোর্ট, গাজীপুর
গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘেঁষা জনপ্রিয় ছুটি রিসোর্টের জায়গা প্রায় ৫০ বিঘা। যেখানে রয়েছে স্পোর্টস জোন, সুইমিংপুল, রেস্তোরাঁ এবং ক্যাম্পিংয়ের জায়গা। ২১টি কটেজের পাশাপাশি এখানকার ছনের ঘর, মাছ ধরার সুযোগ, নৌকা ভ্রমণ, পিঠাপুলী এবং সবজি ও ফুল-ফলের বাগান আকৃষ্ট করে দর্শনার্থীদের। তবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে পাখির কলকাকলী, বাঁদুড় ও শিয়ালের হাঁক, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক এবং জোনাকি আলো।
স্বল্প বাজেটে ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার: অনুপম নিবেদনে প্রিয়জনের মুগ্ধতা
ভালো লাগার বিমূর্ত অভিজ্ঞতাগুলোর আকর্ষণ গুরুতর আর্থিক সংকটেও যেন উপেক্ষিত হওয়ার নয়। বিশেষ করে প্রিয়জনের হাসিমুখের কাছে আর সবকিছু যেন গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে!
নিয়ত জীবিকার পেছনে ছুটতে গিয়ে হতাশাগ্রস্ত মনে প্রায় ভর করে বিতৃষ্ণা। সেখানে একটু ভিন্নভাবে কাটানো দিনগুলো শুধু প্রিয় কতক স্মৃতির জন্ম দেয় না। বরং বারবার মনে করিয়ে দেয় জীবনের প্রতিটি দিন কতটা মূল্যবান। এর মধ্যে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কাটানো আগামী দিনগুলো কতটা ভালবাসাপূর্ণ হতে পারে তার একটা ছোট্ট মহড়ার নাম ভ্যালেন্টাইন’স ডে।
বস্তুগত দিক থেকে উপহারটি ছোট-বড় যেমনি হোক না কেন, তার পেছনে সময় ও শ্রম দেওয়ার স্বতঃস্ফূর্ততা গড়ে দেয় সম্পর্কের মাপকাঠি। সেই সূত্রে চলুন, সাধ্যের মধ্যেই কিছু ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার দেখে নেওয়া যাক।
প্রিয়জনের জন্য কম খরচে ১০টি ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার
ঘর সাজানোর গাছ
শুধু শোভা বাড়াতেই নয়, একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্যও অনেকে ঘর সবুজায়নের ব্যবস্থা করেন। অনেকেই তাদের কাজের টেবিল ও তার আশেপাশে জানালাকে সাজিয়ে তুলতে পছন্দ করেন ছোট ছোট গাছের টব দিয়ে। বিশেষ করে ঘৃতকুমারি বা অ্যালোভেরা, স্নেক পাম, মাদার্স-ইন-লস টাঙ, রাবার গাছের মতো ইন্ডোর প্ল্যান্টগুলো মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে। শুধু চারার দিক থেকে এগুলোর দাম খুব বেশি নয়। মূল্যের তারতাম্যটা মূলত বিভিন্ন ধরনের টবের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে বেশ সাশ্রয়ী হয় প্লাস্টিকের টবগুলো। গাছপ্রেমীদের জন্য অনায়াসেই এটি একটি সেরা উপহার।
আরও পড়ুন: বিয়ের শাড়ি, লেহেঙ্গা ঢাকার যেখানে পাবেন: বধূ সাজের সেরা গন্তব্য
চকলেট বা ক্যান্ডি
বিশেষ দিনগুলো উদযাপনের ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই প্রিয় খাবারের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে চকলেট। বিধায় বাজারগুলোতেও নানা উৎসবে বিভিন্ন রঙের আকর্ষণীয় মোড়কে পরিবেশন করা হয় চকলেট ও ক্যান্ডিকে। মোড়ক বা চকলেট বক্স নির্বাচন করা যায় প্রিয়জনের প্রিয় রঙের ভিত্তিতে।
শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে করণীয়
১১ হাজার ভোল্টের ট্রান্সমিশন কেবলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর। ঘটনাটি কুমিল্লার সংরাইশ নামক একটি এলাকার; ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। শিশুটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোই নয়; দেশের আধুনিক শহরগুলোও মুক্ত নয় এমন নির্মম দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলো যেখানে উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ দ্বারা পরিবেষ্টিত, সেখানে শিশুর খেলার জায়গাটি নিমেষেই পরিণত হতে পারে মরণফাঁদে। এমনকি ঘরের ভেতরটাও এই ঝুঁকির বাইরে নয়। তাই শিশুর নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে প্রয়োজন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের।
এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন দেখে নিই, ঘরের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে শিশুর জীবন বাঁচাতে কি কি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
বৈদ্যুতিক শক থেকে শিশুদের রক্ষা করার উপায়
ঘরের ভেতরে প্রয়োজনীয় সাবধানতা
দেয়ালের বৈদ্যুতিক সকেটগুলো আবৃত রাখা
ঘরের দেয়ালের নিচের দিকে প্রায় সময় দেখা যায় বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসগুলো অনাবৃত থাকে। এছাড়া ব্যবহার শেষে প্লাগ খুলে ফেলার পর সেগুলো অনাবৃত অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হয়। এগুলো বাচ্চাদের হাতের নাগালেই থাকে। খেলার ছলে এগুলোর ছোট গর্তগুলোতে বাচ্চাদের হাত চলে যেতে পারে। এমন অনর্থ থেকে বাঁচতে বৈদ্যুতিক আউটলেট কভার বা সেফটি প্লাগের আবির্ভাব।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
প্লাগগুলো মূলত টু পিং ও থ্রি পিং সকেটের জন্য সামঞ্জস্য করে তৈরি করা হয়। আর কভারের ক্ষেত্রে বর্তমানের অত্যাধুনিক স্লাইডিং আবরণীগুলো ব্যবহার শেষে কোনো অ্যাডাপ্টারের প্লাগ খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সকেটটিকে ঢেকে ফেলে। এতে করে বিদ্যুৎ সংযোগের গর্তগুলো আবৃত হয়ে যায় এবং তাতে বাচ্চাদের হাত পড়লেও কোনো বিপদের আশঙ্কা থাকে না।
বিদ্যুতের কেবলগুলো গুছিয়ে রাখা
শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কেবল অর্গানাইজার। এলোমেলো করে ছড়ানো-ছিটানো কেবল বা তারগুলোতে বাচ্চাদের ছোট ছোট হাত-পা জড়িয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চঞ্চল শিশুরা ছুটে বেড়াতে যেয়ে এগুলোতে পা জড়িয়ে পড়ে যেয়ে আঘাত পেতে পারে। আর কোনো একটিতে ছোট্ট কোনো চিড় বা লিকেজ থাকলে তা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই নিদেনপক্ষে দড়ি বা ফিতে দিয়ে কেবল বা তারগুলোকে বেধে পরিপাটি করে রাখা উচিৎ।
তাছাড়া এখন অধিকাংশ ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে এগুলোর কেবল গুছিয়ে রাখার জন্য ছোট ছোট প্লাস্টিকের তার সরবরাহ করা হয়। এগুলোর যথাযথ সদ্ব্যবহার করে তার বা কেবলগুলো আড়াল করে রাখা উচিৎ। কর্ড সংগঠক ব্যবহার করে বা অতিরিক্ত কর্ডের দৈর্ঘ্য বেঁধে দড়িগুলোকে সংগঠিত এবং নাগালের বাইরে রাখুন। এটি দড়িতে ছিটকে যাওয়ার বা টানার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
ওভারলোড না করা
একটি আউটলেটে একাধিক ডিভাইস ব্যবহারের উপায় থাকলেও তার সুবিধা নেওয়া উচিৎ নয়। বিশেষ করে উচ্চ পাওয়ার রেটিংয়ের বৈদ্যুতিক আসবাব একটি আউটলেটে একটির বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে আউটলেটগুলো অতিরিক্ত গরম হয়ে সকেটের পেছনে তার বা আসবাবের কেবল পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া শর্ট সার্কিট হলে একসঙ্গে একাধিক যন্ত্র নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বিদ্যুতের প্রতিটি সংযোগের ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করা
ঘরের প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ঠিক মতো কাজ করছে কি না তা রুটিন মাফিক যাচাই করা হলে সময় মতো ত্রুটিগুলো চোখে পড়বে। এতে করে যন্ত্রপাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হবে প্রত্যেকটির নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার। আর ঘরের ভেতরে শিশুর খেলার জায়গাটিও হবে ঝুঁকি মুক্ত।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদিকে কোনোভাবেই পানির সংস্পর্শে না আনা
রান্নাঘর ও টয়লেটের বৈদ্যুতিক আউটলেটগুলোকে কোনোভাবেই ভেজা রাখা যাবে না। প্রয়োজনে নিয়মিত শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে হবে। দিনের অধিকাংশ সময়ই এই স্থানগুলোতে পানির কাজ থাকে। ফলে যে কোনো ভুলে মেঝেতে পানি পড়ে তা গড়িয়ে চলে আসতে পারে ডাইনিং বা অন্যান্য ঘরগুলোতে। পরিণতিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে শিশুর খেলে বেড়ানোর জায়গাটি।
ফ্রিজ বা ওভেনের মতো উচ্চ ভোল্টেজের যন্ত্রপাতির পেছনের স্থান কোনোভাবেই যেন পানির সান্নিধ্যে না আসে। এগুলোর কেবলে হঠাৎ পানি লেগে গেলে দ্রুত পাওয়ার অফ করে শুকনো কাপড় দিয়ে তা মুছে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে পোষা প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
প্রাকৃতিক গ্যাসের সংকট সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশজুড়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে। পেট্রোবাংলার তথ্য মতে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন মাত্রায় পৌঁছেছে গ্যাস সরবরাহ। বর্তমানে যেখানে গ্যাসের প্রয়োজন ৩ হাজার ৮০০ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড ঘনফুট পার ডে), সেখানে সরবরাহ রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ এমএমসিএফডি। প্রাকৃতিক গ্যাসের বিকল্প হিসেবে অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) বা সিলিন্ডার গ্যাসের দিকে। কিন্তু এগুলোর দামের অসঙ্গতি এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে জনজীবন শিকার হচ্ছে নানা বিড়ম্বনার। গ্রামাঞ্চলের অধিবাসীরা লাকড়ি বা মাটির চুলা ব্যবহার করতে পারলেও শহরের বাসাবাড়িতে গ্যাস ছাড়া রান্না করা দুরূহ। এমতাবস্থায় জরুরি হয়ে পড়েছে রান্নার জন্য গ্যাসের বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থা। তাই চলুন, গ্রাম বা শহরে বাসা-বাড়িতে গ্যাস ছাড়া রান্নার করার উপযুক্ত কিছু উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
গ্যাস ছাড়া রান্নার জন্য কয়েকটি আধুনিক চুলা
ইন্ডাকশন চুলা
তাড়িৎ চৌম্বক শক্তিকে ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তাপশক্তির যোগান দেয় ইন্ডাকশন চুলা। এর কাঁচ-সিরামিক প্লেটের নিচে থাকে তামার কয়েল, যেটি তাড়িৎ চৌম্বক শক্তির যোগান দেয়। প্লেটের উপর নির্দিষ্ট দাগাঙ্কিত স্থানে রাখা হয় রান্নার পাত্র।
বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকা অবস্থায় চৌম্বক পদার্থের তৈজসপত্র রাখা হলে চুলাটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। কাজ শেষে পাত্র সরিয়ে ফেলা হলে চুলা সঙ্গে সঙ্গেই তাপ উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এই পাত্রগুলোর মধ্যে অধিকাংশ স্টেইনলেস-স্টিল ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও রয়েছে কাস্ট আয়রন এবং এনামেল্ড ঢালাই লোহা।
আরও পড়ুন: তীব্র গ্যাস সংকটে চট্টগ্রাম নগরবাসী
এই চুলাগুলো সহজে পরিষ্কারযোগ্য এবং অল্প তাপেই গ্যাস ও অন্যান্য সাধারণ বৈদ্যুতিক চুলার থেকে দ্রুত রান্না করতে পারে। ইন্ডাকশন চুলা বিভিন্ন পাওয়ার রেটিংয়ের ভিত্তিতে ৩ থেকে ৯ হাজার টাকার হয়ে থাকে। বাজারে সাধারণত ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ২০০ ওয়াটের চুলাগুলো বেশি পাওয়া যায়। ৪ থেকে ৫ সদস্যের পরিবারের জন্য যাবতীয় রান্নার কাজ এই চুলা দিনে সর্বোচ্চ ৪ ঘণ্টায় সম্পন্ন করতে পারে। ফলে আবাসিক এলাকার সর্বোচ্চ ইউনিট রেট হিসেবে মাসে বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে ৯০০ থেকে ৯৬০ টাকা।
ইনফ্রারেড চুলা
বিদ্যুৎ প্রবাহ থেকে আভ্যন্তরীণ তামার কয়েলকে উত্তপ্ত করে রান্নার জন্য তাপ উৎপন্ন করে ইনফ্রারেড চুলা। এগুলো মূলত হ্যালোজেন লাইট (যা ইন্ডাকশন লাইট নামেও পরিচিত) ব্যবহার ইনফ্রারেড বিকিরণ প্রক্রিয়ায় পাত্র গরম করে। এগুলোতে ইন্ডাকশন চুলার মতো নির্দিষ্ট কোনো তৈজসপত্র ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা নেই। তবে চুলার পৃষ্ঠের সঙ্গে সমতলে থাকা অর্থাৎ ফ্ল্যাট পাত্রগুলোতে গরম করার ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ ও নরওয়ের সাংস্কৃতিক বিনিময় 'লেট দ্য লাইট ইন'
চিরকুট - দ্য গ্লোবাল বাংলাদেশি ব্যান্ড এবং নরওয়ের বিশিষ্ট গায়ক-গীতিকার ও জলবায়ু কর্মী মার্তে উলফ সম্প্রতি তাদের নতুন গান ‘লেট দ্য লাইট ইন’ জনসম্মুখে উপস্থাপন করেছেন।
চিরকুটের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান গায়িকা শারমিন সুলতানা সুমি গত বছর নরওয়ের অ্যাগডার ইউনিভার্সিটিতে একটি আন্তর্জাতিক সংগীত সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে যোগদানের সময় এই গান লেখা, সুরারোপ ও রেকর্ডিং শুরু হয়।
নরওয়েতে সুমি তার ২১ বছরের সংগীত যাত্রার পাশাপাশি বিনোদন জগতে একজন নারী হিসেবে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকাস্থ নরওয়েজিয়ান দূতাবাস এই নরওয়ে-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও নতুন গান ‘লেট দ্য লাইট ইন’ চিরকুটের এক লাইভ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে উদযাপন করেছে।
আরও পড়ুন: নরওয়েতে আন্তর্জাতিক সংগীত বিষয়ক সম্মেলনে যাচ্ছেন চিরকুট ব্যান্ডের সুমি
বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্টদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন, কূটনীতিক, থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিরা এই সাংস্কৃতিক উদযাপনে অংশ নেন।
এতে আরও বলা হয়, নরওয়ে ও জনপ্রিয় বাংলাদেশি রক ব্যান্ড চিরকুটের মিউজিক্যাল পার্টনারশিপ, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং বন্ধুত্বের ইতিহাস দীর্ঘ। ২০১১ সালে রিক্সকনসার্টিন (ন্যাশনাল ট্রাভেলিং কনসার্ট) এবং লাইভ স্কয়ার কনসার্ট, বাংলাদেশ-এর মাধ্যমে নরওয়ের সঙ্গে চিরকুটের সহযোগিতা শুরু হয়। এটি রক ব্যান্ডের জন্য একটি নতুন সূচনা ছিল। নরওয়েজিয়ান দূতাবাস এই সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আরও পড়ুন: মাইকেল জ্যাকসনের স্মৃতিমাখা ওয়েস্টলেক স্টুডিওতে চিরকুট
বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পাশাপাশি চিরকুট বিশ্বের বেশ কয়েকটি বৃহত্তম সংগীত উৎসবে পারফর্ম করেছে, ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের মতো বিখ্যাত স্থানে কনসার্টের আয়োজন করেছে এবং অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীর সঙ্গে সহযোগিতা করে বিশ্বব্যাপী তাদের গান ছড়িয়ে দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর ভাবপূর্ন এবং চেতনায় পূর্ণ মৌলিক গানের মাধ্যমে চিরকুট তরুণ এবং জলবায়ুর জন্য কাজ করছে। সম্প্রতি তারা ‘নদী রকস’ তৈরি করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি নদীর জন্য একটি করে গান রচনা করে নদীগুলোর প্রতি ভালবাসা এবং তরুণদের মধ্যে জলবায়ু ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করাই এই গানগুলোর মূল লক্ষ্য ।
সুমি আর মার্তে-র নতুন গান ‘লেট দ্য লাইট ইন’ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকি এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের যুক্তরাষ্ট্র মাতাবে ব্যান্ড চিরকুট
বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
বিপজ্জনক ঝিরিপথ দিয়ে কারুকার্যমন্ডিত দুর্গম পাহাড়ের অন্দরমহলে গুপ্ত এক অমূল্য ঐশ্বর্য হলো পাহাড়ি ঝর্ণা। হাজার বছরের প্রাকৃতিক ঘাত-অপঘাতের চিহ্নগুলো আড়াল করে অভিকর্ষের কাছে নিজেকে সপে দেয় প্রস্রবণগুলো। মুক্ত বিসর্জনের এই শব্দে সেই অপঘাতে সৃষ্ট খাদগুলোতে শোনা যায় মহাকালের ফিসফিসানি। যেন প্রকাণ্ড সফেদ পর্দার অন্তরালে লুকানো পাহাড়ের কান্না। কখনও বা স্বচ্ছ স্নিগ্ধ ধারায় অনাবৃত হয়ে পড়ে অমসৃণ কলেবর। ঠিক এমনি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সন্ধান দিতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ প্রাকৃতিক ঝর্ণা বাকলাই ভ্রমণে। অসাধারণ উচ্চতার এই জলপ্রপাতটি নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন, কখন ও কীভাবে খুব কাছ থেকে এই বুনো ঝর্ণার দর্শন পাবেন- তা জেনে নেওয়া যাক।
বাকলাই ঝর্ণার ভৌগলিক অবস্থান ও বিশেষত্ব
বান্দরবানের থানচি উপজেলাটি বাংলাদেশের পাহাড়প্রেমীদের কাছে সর্বাধিক পরিচিত। এই অঞ্চলেরই নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামের মধ্যমণি প্রায় ৩৮০ ফুট উঁচু বাকলাই জলপ্রপাত। দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পাহাড় কেওক্রাডং ও তাজিংডং-এর মাঝেই এই গ্রামটির অবস্থান। রুমা থেকে ১১০ কিলোমিটার এবং থানচি থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূর থেকে স্পষ্ট চোখে পড়ে এই ঝর্ণা।
স্থানীয়দের অনেকে একে বাক্তালাই ঝর্ণা নামেও অভিহিত করেন। মাত্রাতিরিক্ত ভয়াবহ পাহাড়ি রাস্তা থাকায় এবং যথেষ্ট উদ্যোগের অভাবে খুব কম পর্যটকই এই জলপ্রপাতের একদম পাদদেশ পর্যন্ত যেতে পারেন।
আরও পড়ুন: তাজিংডং ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও খরচ
এই বাকলাই আর লিলুক বা লাংলোক নামে থানচিরই আরেকটি ঝর্ণার সঠিক উচ্চতা নিয়ে বেশ মতোপার্থক্য রয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ ঝর্ণার খেতাব নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ থাকলেও সৌন্দর্য্যের দিক থেকে বাকলাই ঝর্ণা অনেকটা এগিয়ে।
নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
বছরের শুরুতেই নিপাহ ভাইরাসের মরণঘাতী সংক্রমণের শিকার হলেন মানিকগঞ্জের মান্তা গ্রাম নিবাসী ৩৮ বছর বয়সী বাবুল হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী।
আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন পরীক্ষার জন্য রোগীর নমুনা পাঠানো হয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আইইডিসিআর (ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ)-এ। গবেষণায় বেরিয়ে আসে- বাবুল মিয়া কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার কারণে আক্রান্ত হয়েছিলেন নিপাহ ভাইরাসে।
১১ দিন আগে একইভাবে আরও একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বাবুল মিয়ার পাশের গ্রাম ঘোস্তায়। নিহত ব্যক্তি ২৭ বছর বয়সী লুৎফর রহমান। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র অনুসারে লুৎফরের বিষয়টিতে নিপাহ ভাইরাসের সুস্পষ্ট কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। এরপরেও আতঙ্ক বিরাজ করছে গোটা উপজেলাজুড়ে।
তাছাড়া বিগত বছরগুলোতে এই ভাইরাস সংক্রমণে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ আশঙ্কাজনক। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বস্তরের জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। এই পরিপ্রেক্ষিতে নিপাহ ভাইরাস সম্বন্ধে সম্যক ধারণা নেওয়ার পাশাপাশি চলুন জেনে নেই- কীভাবে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণকে প্রতিরোধ করবেন।
আরও পড়ুন: কিডনি পরিশোধনকারী ১০টি ভেষজ চা
নিপাহ ভাইরাস কী
জুনোটিক ভাইরাসের অনেকগুলো ধরনের একটি হচ্ছে নিপাহ ভাইরাস; সংক্ষেপে এনআইভি। জুনোটিক ভাইরাস বলতে এমন ভাইরাসকে বোঝানো হয়, যা মেরুদণ্ডী প্রাণী এবং মানুষের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তত্ত্বীয় দিক থেকে এনআইভির বাহক শ্রেণীটা বিশাল হলেও বাস্তবে শুধু শূকর এবং বাদুড়ের মধ্যে এর উপস্থিতি দেখা গেছে। সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে এনআইভির বাহক হচ্ছে টেরোপাস প্রজাতির ফল খেকো বাদুড়, যেটি ফ্লাইং ফক্স নামেও পরিচিত।
বিশ্বের সব থেকে বড় বাদুড়গুলোর নানা প্রজাতির মধ্যে একটি হচ্ছে এই টেরোপাস। এগুলোকে সাধারণত দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, পূর্ব আফ্রিকা এবং ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপাঞ্চলগুলোতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় নিপাহ ভাইরাসে শ্বশুরের পর মৃত্যু হয়েছে পুত্রবধূর
নিপাহ ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়
প্রাণীদেহের গুরুত্বপূর্ণ জিনগত উপাদান আরএনএ বা রাইবো নিউক্লিইক এসিড। এনআইভি মূলত এই আরএনএকে সংক্রামিত করার মাধ্যমে পুরো প্রাণীকে আক্রান্ত করে। তারপর অন্য কোনো প্রাণী কোনো মাধ্যমে সেই আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শে এলে সঙ্গেসঙ্গেই সুস্থ প্রাণীটিতে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল আরএনএ। এই মাধ্যমগুলো নানান ধরনের হতে পারে।
- সরাসরি সংক্রামিত প্রাণীর সংস্পর্শ, যেমন বাদুড়ের রক্ত, লালা, বমি বা মলমূত্র। ঘরবাড়ির আঙ্গিনা, পানির তোলার কূয়ার কাছে, চাষের ক্ষেত বা গৃহস্থালি পশুপাখির ঘরের পাশে খেজুর গাছ থাকলে এমন সংস্পর্শ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- আক্রান্ত প্রাণীর শরীর নিঃসৃত নানা তরল পদার্থে দূষিত খাদ্য গ্রহণ, যেমন আক্রান্ত বাদুড়ের মুখ দেওয়া খেজুরের রস, বাদুড়ের নষ্ট করা কূপের পানি বা আধ-খাওয়া ফল।
- আক্রান্ত কোনো মানুষের সংস্পর্শ, যেমন রক্ত, থুথু, হাঁচি-কাশি, বমি, মলমূত্র, এমনকি শ্বাস প্রশ্বাস। এনআইভি বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পাড়ে এবং এটি একটি শক্তিশালী ছোঁয়াচে রোগ।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
প্রাথমিকভাবে মানুষে মানুষে সংক্রমণের ব্যাপারটি না থাকলেও বর্তমানে বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এই ঘটনা প্রচুর ঘটছে।
হাসপাতালের যে কর্মীরা এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্তদের সেবার নিয়োজিত থাকেন এবং খেজুরের রস সংগ্রহ কাজের সঙ্গে জড়িতরা এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে।
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০: বাংলাদেশের প্রথম ৩৫০ সিসি মোটরবাইক
প্রাচীনতম ব্রিটিশ টু-হুইলার ব্র্যান্ড রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ -এর মাধ্যমে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্ষমতার নতুন মাত্রায় পৌঁছতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ৩৭৫ সিসির (কিউবিক সেন্টিমিটার) মাইলফলকের দিকে এই যুগান্তকারী পদক্ষেপটি সম্পন্ন হতে যাচ্ছে চলতি বছরের জুলাইতে। স্থানীয়ভাবে ইফাদ মোটরস নামক একটি মোটরসাইকেল কারখানাজাত প্রতিষ্ঠান দেশের বাজারে চালু করবে রয়্যাল এনফিল্ড। ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে যে, বিশ্ব বাজারে এর নামকরা ক্লাসিক, বুলেট, হান্টার ও মিটিওর সিরিজগুলো দেশের ভেতরেই প্রস্তুত করা হবে। কী কী ফিচার পাওয়া যাবে রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ মোটরসাইকেলের মডেলগুলোতে? আর কতটুকু নাগালের মধ্যে থাকতে যাচ্ছে এগুলোর দাম। চলুন জেনে নেয়া যাক।
রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০
নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির এক সঙ্গত সংমিশ্রণ রয়্যাল এনফিল্ড ক্লাসিক ৩৫০। বাতাস চলাচলের মাধ্যমে শীতলীকরণ প্রক্রিয়া সমৃদ্ধ একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিন একটি আদর্শ মোটরসাইকেল হিসেবে মডেলটিকে ন্যায্যতা দেয়।
৬ হাজার ১০০ আরপিএম (রিভোলিউশ্যন পার মিনিট)-এর সঙ্গে রয়েছে ২০ দশমিক ২ বিএইচপির (ব্রেক হর্সপাওয়ার) হর্সপাওয়ার এবং ৪ হাজার আরপিএমের সঙ্গে প্রতি ফুট দূরত্বে ১৯ পাউন্ডের টর্ক। তাই শহুরে যানজট বা খোলা-রাস্তা উভয় ক্ষেত্রেই চালনায় ভারসাম্য নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।
আরও পড়ুন: ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক: কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন
এনফিল্ড ঐতিহ্যের সমগ্র নান্দনিকতার ছোঁয়া পড়েছে নকশায়। স্টিলের ফ্রেমটি চালক ও যাত্রী উভয়ের জন্যই স্বাভাবিক হ্যান্ড গ্রিপ্স, হ্যান্ডেলবার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ফুট পেগ নিশ্চিত করে। বাইক চড়ার মুহূর্তগুলোকে আরামদায়ক করার জন্য সামনের সাসপেনশনে রয়েছে ৪১ মিলিমিটার টেলিস্কোপিক ফর্ক আর পেছনেরটাতে একটি টুইন সাইড সুইং আর্ম। যথাযথ নিরাপত্তার স্বার্থে এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম) হিসেবে কাজ করবে সামনে এবং পিছনে উভয় দিকের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক। সতর্ক সংকেত দেওয়ার জন্য যন্ত্রাংশ প্যানেলে রয়েছে চিরাচরিত স্পিডোমিটার ও একটি ফুয়েল লেভেল লাইট।
এছাড়াও সঙ্গে বহন করার জন্য আছে হার্ড সাইড কেস, পিছনের র্যাক ও ব্যাগ লাইনারসহ আনুষঙ্গিক নানাবিধ সংযোজনের ব্যবস্থা।
রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট ৩৫০
বুলেট মডেলকে রয়্যাল এনফিল্ড ঐতিহ্যের প্রতীক বলা যেতে পারে। ক্লাসিকের মতো এটাতেও রয়েছে ৩৪৯ সিসির জে-সিরিজ ইঞ্জিন ও ৬ হাজার ১০০ আরপিএম-এ ২০ দশমিক ২ বিএইচপি হর্সপাওয়ার। পাশাপাশি এটি ৪ হাজার আরপিএম-এ প্রতি ফিট দূরত্বে ১৯.৯ পাউন্ড টর্ক দিতে সক্ষম। অর্থাৎ উচ্চ-গতির জন্য নয়; এটি বরং প্রতি ঘন্টায় ৫০ থেকে ৬০ মাইল যাত্রার জন্য উত্তম।
সিরিজটি ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মোটরসাইকেল ডিজাইন। ১৯৫৫ সালে মূল প্রতিষ্ঠান এনফিল্ড সাইকেল কোম্পানি ভারতের মাদ্রাজ মোটরসের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গঠন করেছিল এনফিল্ড অব ইন্ডিয়া। মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) কেন্দ্রিক এনফিল্ড সাইকেলের উত্তরসূরি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল এই রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট অ্যাসেম্বলির মাধ্যমেই। বুলেটের চিত্তাকর্ষক নকশায় এখনও সেই ঐতিহাসিক ছাপ বিদ্যমান, যা অনায়াসেই যে কোনও বাইক চালকের মন জয় করে নেয়। বুলেটের ভিন দেশী নকশা এবং ইউএসবি চার্জিং পোর্ট বিশেষভাবে নজর কাঁড়ে।
আরও পড়ুন: বারিধারার ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউ: যেভাবে যাবেন, যা দেখবেন
স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হ্যান্ডলিং, সাস্পেনশন, এবং ডুয়্যাল সিট সেটআপ একা একা বা কাউকে সঙ্গে নিয়ে চালানো উভয় ক্ষেত্রে নেভিগেশনটা চালকের জন্য সহজাত করে তোলে। সিটটি মোটা-প্যাডের হওয়ায় তা ৮০৫ মিলিমিটার উচ্চতায় চালক ও যাত্রী দুজনের জন্যই বেশ সহজসাধ্য এবং আরামপ্রদ।
১৩ লিটার ধারণক্ষমতার জ্বালানি ট্যাঙ্ক একবার ভরে নিলে ৩০০ মাইলেরও বেশি নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করা যাবে।
রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০
উন্নত প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত হওয়ায় রয়্যাল এনফিল্ড পরিবারের সবচেয়ে আধুনিক সদস্য হচ্ছে হান্টার।
অবশ্য ক্লাসিক মডেলের ধারা অব্যাহত রেখে এর একক সিলিন্ডার ও ৩৪৯ সিসির ইঞ্জিনের ক্ষমতা একই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ ৬ হাজার ১০০ আরপিএমে ১৪ দশমিক ৮৭ কিলোওয়াট এবং ৪ হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম টর্ক।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর ১০টি উপায়
সামগ্রিক নকশা অনুসারে এই সিরিজ শহুরে পরিবেশের জন্য উপযুক্ত। স্টিলের ফ্রেমটি নেভিগেশন এবং চালক ও যাত্রী দুজনের ফুটপেগের সহায়ক। এখানেও আছে সামনের সাসপেনশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনের সাস্পেনশনে টুইন সাইড সুইং আর্ম।
এর আকার ও সর্বোচ্চ ১৮১ কেজি ওজন শামাল দিতে কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক বাইকারকেই হিমশিম খেতে হয় না। ৩১ দশমিক ১ ইঞ্চি বা ৭৯০ মিলিমিটারের উচ্চতায় বসার জায়গাটি যে কোনও চালক ও যাত্রীর জন্য স্বাভাবিক। তাছাড়া চলন্ত অবস্থায় সুরক্ষার জন্য সামনে এবং পিছনে এবিস সহ হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক তো থাকছেই।
হান্টার-৩৫০-এর যন্ত্রাদি ডিজিটাল হওয়ায় পাওয়ার আউটলেট, হার্ড সাইড কেস এবং স্টোরেজ কভারের সুবিধা আছে। অ্যালুমিনিয়ামের চাকাগুলোতেও লাগানো আছে টিউবলেস টায়ার।
আরও পড়ুন: বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০
অন্যান্য সিরিজগুলোর সঙ্গে খুব একটা তারতম্য নেই রয়্যাল এনফিল্ড মিটিওর ৩৫০-এর। ৩৪৯ সিসির একক সিলিন্ডার ইঞ্জিনে অপরিবর্তিত আছে ৪ হাজার আরপিএমে ২৭ এনএম (নিউটন-মিটার) টর্ক এবং ৬ হাজার ১০০ আরপিএমে ২০ দশমিক ২ বিএইচপির ক্ষমতা।
টেকসই ও পালিশ করা সর্বাঙ্গে জেনুইন মোটরসাইকেল এক্সেসরিজের (জিএমএ) বিশাল বহর। ইঞ্জিন এবং গিয়ারের মাঝে সুষ্ঠু যোগসাজশ এক মসৃণ রাইডিং অভিজ্ঞতা দেয়। প্রতি ঘণ্টায় গতি ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেলেও কম্পন অনুভূত হবে না।
মিটিওর-৩৫০ও সমস্বরে জানান দেয় স্টিল ফ্রেম এবং সামনের ও পেছনের সাস্পেনশনে যথাক্রমে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও টুইন সাইড সুইং আর্মের উপস্থিতি।
আরও পড়ুন: উবার ড্রাইভার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করবেন যেভাবে
গ্রাউন্ড থেকে ৩০ দশমিক ১ ইঞ্চি বা ৭৬৪ দশমিক ৫ মিলিমিটারের উচ্চতায় ডুয়্যাল সিট এবং সামনের-পেছনের দুই চাকাতে এবিএসের হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক পূর্ণ নিরাপত্তার পরিপূরক।
স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, ট্রিপ ওডোমিটার, কম্পাস এবং নেভিগেশন সিস্টেমের ডিজিটাল যন্ত্রাংশ বিশ্বমানের সুবিধা হিসেবে আলাদা আকর্ষণ রাখে।
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০-এর সম্ভাব্য মূল্য
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিচিত্র রঙ ও এবিএস চ্যানেল ভেদে ক্লাসিক সিরিজের দাম চলছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮০ রুপি থেকে ২ লাখ ২৪ হাজার ৭৫৫ রুপি পর্যন্ত। যেটি বাংলাদেশি টাকায় আড়াই লাখ থেকে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৬ টাকা (১ ভারতীয় রুপি = ১.৩২ বাংলাদেশি টাকা)। বেশ কিছু নতুন রঙের ভার্সন সংযোজন হয়ে বুলেট মডেলগুলোর মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬২ থেকে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩৬ রুপি, যা প্রায় ২ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৯ টাকা থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩১ টাকার সমপরিমাণ।
১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ থেকে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫৫ রুপি (প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ১০৭ থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার ৮২৩ টাকা) দামে ভারতীয় গ্রাহকদের নিকট পরিবেশিত হচ্ছে বর্ণীল হান্টারগুলো। আর ২ লাখ ৫ হাজার ৯০০ থেকে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ রুপি (প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার ১১৭ টাকা থেকে ৩ লাখ ৩ হাজার ৮৩৫ টাকা) দামের পরিধি নিয়ে মোটর বাইকারদের নজর কাঁড়ছে অবকাশ রাইডিংয়ের মিটিওর-৩৫০ ক্রুজগুলো।
আরও পড়ুন: মোটর বাইক রাইডারদের নিরাপত্তার জন্য সেফটি গিয়ার
বাংলাদেশে মোটর বাইকগুলোর দাম নির্ভর করছে উদ্বোধনকালীন বাজার পরিস্থিতি এবং ডলার মূল্যের উপর। ইফাদ মোটরসের তথ্যমতে, ডলার রেট প্রায় ১২৫ (বাংলাদেশি) টাকা হলে রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ সিরিজগুলোর দাম হতে পারে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা।
পরিশিষ্ট
রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০ -এর চারটি সিরিজই প্রতিনিধিত্ব করছে বিশ্বমানের মোটরবাইক শিল্পকে। তবে বাংলাদেশে এর প্রতিক্রিয়ায় বৈচিত্র্য আসতে পারে মোটরসাইকেলপ্রেমিদের ভিন্ন চাহিদার ভিত্তিতে। বয়সের সীমারেখা নির্বিশেষে ঐতিহ্যবাহী বাইকাররা তাদের নস্টালজিয়া অনুশীলনে সাদরে গ্রহণ করে নিতে পারেন ক্লাসিক মডেলটিকে। সাবলীলতা ও নির্ভরযোগ্যতায় ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দেয়া শ্রেণির প্রথম পছন্দ হতে পারে বুলেট সিরিজ।
শহুরে চালকদের বিশেষ করে স্বল্পবয়সীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষস্থানটি দখল করতে পারে হান্টার ও মিটিওর। তবে এবিএস থাকলেও এগুলোর উচ্চ গতি বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোতে সতর্কতার দাবি রাখে। আর খারাপ সড়ক বা গ্রাম্য পথে দূর পাল্লায় হান্টারকে পরখ করে দেখা মোটেই উচিত হবে না।
আরও পড়ুন: বাজাজ পালসার এন-২৫০: বাংলাদেশের প্রথম ২৫০ সিসি বাইক
বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
পাহাড় বেয়ে চূড়ায় ওঠার সময় মাঝপথে থেকে নিচের দিকে তাকালে স্বভাবতই ফেলে আসা জনপদগুলোকে পিপিলিকার মতো মনে হয়। কেমন হবে যদি নিচে তাকিয়ে দেখা যায় সব হারিয়ে গেছে মেঘের নিচে! শ্বেত শুভ্র পেঁজা তুলাগুলোকে আলগোছে পা ছুঁয়ে যাওয়াটাকে মোটেই পার্থিব মনে হবে না। বিশেষ করে বাংলাদেশি ট্রেকাররা হরহামেশা এরকম দৃশ্যের সম্মুখীন হন না। কিন্তু বান্দরবানের এমন কিছু পাহাড় আছে, যেগুলো সত্যিকার অর্থেই এরকম অভিজ্ঞতার অবতারণা করতে পারে। ট্রেকাররা সুউচ্চ পাহাড়ের উপর আবিষ্কার করেন এক জাদুর নগরী। এগুলোর মধ্যে চিম্বুক পাহাড়ে উঠলে মনে হবে যেন সাক্ষাত দার্জিলিং।
পাহাড়ি সৌন্দর্য্যের রানী বান্দরবানের এই প্রাচীন ঐশ্বর্য নিয়েই এবারের ভ্রমণবিষয়ক নিবন্ধ। চলুন, বাংলার দার্জিলিং চিম্বুক পাহাড় ট্রেকিংসহ ভ্রমণের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
চিম্বুক পাহাড়ের বিশেষত্ব ও ভৌগলিক অবস্থান
চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচিতে অবস্থিত এই পাহাড়টি স্থানীয় অনেকের কাছে কালা পাহাড় নামেও পরিচিত। বান্দরবান জেলা সদর থেকে জায়গাটির দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। গড় সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ ফুট উঁচু এই প্রাকৃতিক বিস্ময় বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম পাহাড়।
এই উচ্চতায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা ছাড়াও ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অনায়াসেই দেখে নেওয়া যায় মেঘাচ্ছন্ন পাহাড়গুলোকে। এ কারণে ঐতিহাসিক স্থানটি অনেক আগে থেকেই পর্যটকদের কাছে বাংলার দার্জিলিং হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
‘অস্কার অব ফুড’-এর তালিকাভুক্ত হলেন বাংলাদেশি-আমেরিকান শেফ গুলশান
জেমস বিয়ার্ড ফাউন্ডেশনের 'বেস্ট শেফ ইন দ্য মিড-আটলান্টিক' ক্যাটাগরির সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান শেফ নূর-ই গুলশান রহমান। খাঁটি বাংলাদেশি খাবারের জন্য বিখ্যাত জার্সি সিটির ‘কড়াই কিচেন’-এ শেফ গুলশানের রন্ধনসম্পর্কীয় দক্ষতার প্রমাণ দেখা যায়।
"ফুড অব অস্কার" নামে পরিচিত জেমস বিয়ার্ড ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ডস। আমেরিকায় রন্ধনশিল্পে এ পুরস্কারকে সর্বোচ্চ সম্মান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারগুলো সেরা শেফ এবং রেস্তোঁরাগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে রন্ধনশিল্পে নান্দনিকতা ও নতুনত্বের প্রসার ঘটায়।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্সি সিটিতে কড়াই কিচেন রন্ধনশিল্পের উপযুক্ত জায়গা হিসেবে পরিচিত। খাঁটি বাংলাদেশি স্বাদ ও ঘরোয়া রান্নার জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছে শেফ রহমানের এই রেস্তোরাঁ।
রেস্তোরাঁর পেজ থেকে একটি আবেগঘন পোস্ট দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে বলা হয়, ‘আম্মা আজ জেমস বিয়ার্ড অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন!!এটি আমার মা ও আমাদের দুর্দান্ত দলের জন্য কতটা গর্বিত তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। বাংলাদেশি খাবার ও আমার অসম্ভব মেধাবী মায়ের জন্য স্বীকৃতির কী সুন্দর মুহূর্ত। তিনি পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সম্মানের সঙ্গে তার নৈপুণ্য দেখিয়েছেন!’
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ‘আমার মা মাঝে মাঝে বলতেন, তার নিজেকে একজন প্রতারকের মতো মনে হয়, কারণ তার রান্নাবিষয়ক কোনো আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। আম্মা, আপনি দেখিয়েছেন যে এটি রান্নার স্কুল নয়, এটি আবেগ, প্রতিভা, দৃঢ়তা ও ভালোবাসা।
নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, 'কড়াই কিচেন' একটি বাংলাদেশি বাড়িতে খাওয়ার মতো চমৎকার অভিজ্ঞতা দেয়। রেস্টুরেন্টটিতে শেফ রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত ভর্তা এবং হালকা তরকারিসহ খাবারের একটি ঘূর্ণায়মান বুফে রয়েছে। ভালোবাসা ও যত্নের সঙ্গে তৈরি ঘরোয়া স্টাইলের বাংলাদেশি খাবারের রেস্তোরাঁ।
১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে, জেমস বিয়ার্ড অ্যাওয়ার্ডস রান্নাবিষয়ক শ্রেষ্ঠত্বের জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছে। অসাধারণ শেফ বিভাগ, বিশেষত, যারা কেবল রান্নার উচ্চ মান বজায় রাখেন না বরং তাদের সমবয়সীদের ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেন এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়ের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেন তাদের সম্মান জানায় এ প্রতিষ্ঠান। শেফ রহমানকে তার নিষ্ঠা ও দক্ষতার কারণেই সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তার হাত ধরেই আমেরিকান রান্নাবিষয়ক শিল্পে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ স্বাদ এসেছে।