আর্জেন্টিনার শহর স্যান ইসদ্রোর প্রসিকিউটর জন ব্রোয়েট বুধবার জানান, তার শরীরে ‘কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই’ এবং সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তার মৃত্যু ‘স্বাভাবিক’।
আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা বুধবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে কিংবদন্তি এই তারকা ফুটবলারের বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত ৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তি বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।
আরও পড়ুন: ফুটবল কিংবদন্তি ম্যারাডোনার চিরবিদায়
বুয়েনস আয়ার্সের হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচারের পর গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। তিগ্রে’তে নিজ বাসায় মৃত্যু হয়েছে তার।
এক বিবৃতিতে ব্রোয়েট বলেন, স্থানীয় সময় ৪টায় পুলিশ তার লাশের ফরেনসিক কাজ শুরু করেছে।
এছাড়া তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে সান ফার্নেন্দো হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১ খেলায় ৩৪ গোল করা ম্যারাডোনাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করেন অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল সমালোচক, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ফুটবল সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: মাশরাফির কাছে ম্যারাডোনা ছিলেন একমাত্র সুপারস্টার
ম্যারাডোনাই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি দু’বার স্থানান্তর ফি’র ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। প্রথমবার বার্সেলোনায় স্থানান্তরের সময় পাঁচ মিলিয়ন ইউরো এবং দ্বিতীয়বার নাপোলিতে স্থানান্তরের সময় ৬.৯ মিলিয়ন ইউরো।
চারটি ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন ম্যারাডোনা। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। ওই প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ২–১ গোলে জয় লাভ করে।
আর্জেন্টিনার পক্ষে দুটি গোলই করেছিলেন ম্যারাডোনা এবং ওই দুটি গোলই ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে ভিন্ন ভিন্ন কারণে। প্রথম গোলটি ছিল হ্যান্ডবল যা ‘হ্যান্ড অব গড’ নামে খ্যাত। দ্বিতীয় গোলটি তিনি প্রায় ৬০ মিটার দূর থেকে ড্রিবলিং করে পাঁচ ব্রিটিশ ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে করেন। ২০০২ সালে ফিফাডটকমের ভোটাররা গোলটিকে শতাব্দীর সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত করেন।
২০০৮ সালের নভেম্বরে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেন। ২০১০ বিশ্বকাপে বাজেভাবে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা। ফুটবলার হিসেবে দুর্দান্ত হলেও কোচ হিসেবে ছিলেন ব্যর্থ। শেষদিকে এসে দ্বিতীয় সারির ক্লাবেরও দায়িত্ব পালন করেন ফুটবলের মহানায়ক ডিয়েগো ম্যারাডোনা।