দীর্ঘ এক শতাব্দী প্রতীক্ষার পর প্যারিসে ফিরেছে অলিম্পিক গেমস। বৃষ্টি সত্ত্বেও সেন নদীর তীরজুড়ে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানকে বরণ করেছে ফ্রান্স।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় অলিম্পিক গেমস ২০২৪ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। এরপর নদী ও এর দুই তীরজুড়ে দীর্ঘ আয়োজন শেষে অলিম্পিকের মশাল জ্বালান টেডি রাইনার ও মেরি-হোসে পেরেস।
এমন জমকালো আয়োজন দেখে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্ট টমাস বাখ আয়োজক ও ফরাসি নাগরিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এই গেমসকে উন্মুক্ত করে আমাদের অলিম্পিকের অ্যাজেন্ডার সংস্কারকে প্রাণবন্ত করে তুলছেন আপনারা। আমরা সকলেই অলিম্পিক গেমসের অভিজ্ঞতা অর্জন করব যা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, আরও শহুরে, নতুন ও আরও টেকসই হবে।’
পূর্ণ লিঙ্গ সমতা বজায় রেখে এটিই প্রথম অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বাগতিক শহরের প্রধান স্টেডিয়ামের বাইরে অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে। অস্টারলিটজ ব্রিজ থেকে ট্রোকাডেরো পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ৮০০ ক্রীড়াবিদ তাদের নিজ দেশের পতাকাবাহকদের নিয়ে ৮৫টি নৌকায় করে সেন নদীর ৬ কিলোমিটার অতিক্রম করেন।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করে ক্রীড়াবিদদের দলগুলো একে একে লুভর, প্লেস দে লা কনকর্ড, গ্র্যান্ড প্যালাইস ও আইফেল টাওয়ারসহ প্যারিসের বিখ্যাত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে এগিয়ে যায়। এসময় সংগীত পরিবেশনার আয়োজনও করা হয়, যাতে বিশ্বের নামকরা সব সংগীতশিল্পীরা অংশ নেন।
এ নিয়ে ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের মতো গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আয়োজন করছে প্যারিস। ১৯০০ সালে প্রথম খেলাধুলার এই বিশ্ব আসরের আয়োজন করে তারা, এরপর সবশেষ এক শতাব্দী আগে ১৯২৪ সালে অলিম্পিকের আয়োজন করে শহরটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে, ফ্রান্সের রেলওয়েতে অগ্নিসংযোগের কারণে ইউরোপজুড়ে রেল পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটে। অনেক ট্রেনের সময়সূচি বাতিল হয়ে যায়, অনেকগুলো দেরি করে ছাড়ে।
অবশ্য অনুষ্ঠানের মেজাজকে দমাতে পারেনি এই হামলা। সেন নদীর দুই পাড়জুড়ে হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে হামলার আশঙ্কা মিলিয়ে যায়।